ইসরায়েল কর্তৃক গাজাবাসীর ওপর গণহত্যার প্রতিবাদে আগামীকাল সোমবার বাদ জোহর সব আলেম এবং মাদ্রাসা, স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একযোগে বৈশ্বিক হরতাল পালনের আহ্বান জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই আহ্বান জানান সংগঠনটির আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা পৃথিবীর সব নৃশংসতার সীমা ছাড়িয়েছে। কথিত মানবাধিকারের ধজাধারী আমেরিকার বিবেক গণহত্যাকারী জায়োনিস্ট ইসরায়েলের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। আমেরিকার প্রত্যক্ষ সমর্থন ও সহযোগিতায় অব্যাহতভাবে ফিলিস্তিনের মজলুম জনগণের ওপর বছরের পর বছর দখলবাজি ও বর্বর গণহত্যা চালিয়েছে ইসরায়েল।

ইসরায়েলের গণহত্যায় যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের দায় রয়েছে উল্লেখ করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তাঁদের ভ্যাট ও ট্যাক্সের টাকায় ইসরায়েলকে অবিরাম সামরিক ও রাজনৈতিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

হেফাজতে ইসলামের নেতারা বলেন, পৃথিবীর পরিশুদ্ধতা ও মানবতার অগ্রগতির জন্য অবৈধ জালিম রাষ্ট্র ইসরায়েলের পতন অনিবার্য হয়ে পড়েছে। ফিলিস্তিন দখলকারী ও গণহত্যাকারী জায়োনিস্ট ইসরায়েলকে থামাতে বৈশ্বিক ‘জিহাদ’ অনিবার্য হয়ে পড়েছে। এর অংশ হিসেবে মুসলিম বিশ্বের সামরিক প্রতিরোধ, ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক তৎপরতা, প্রতিবাদী গণ-আন্দোলন এবং ইসরায়েলি পণ্য বয়কটের কর্মসূচি একযোগে বিশ্বব্যাপী পালন করতে হবে।

গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা বন্ধে ধর্ম ও দল-মতনির্বিশেষে দুনিয়ার সব মানবিক বোধসম্পন্ন মানুষের অংশগ্রহণ কামনা করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র র গণহত য ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী

২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।

সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।

পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু

১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।

বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।

এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।

আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।

জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শাহরুখ খান: গণহত্যার সময় বিলিয়নিয়ার হওয়ার অর্থ কী
  • সুদানের এল-ফাশের শহরে ‘চরম বিপদে’ বাসিন্দারা: ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস
  • সুদানে গণহত্যার প্রতিবাদে জাবি ও জবিতে মানববন্ধন
  • জুলাইবিরোধী শক্তির শাস্তি দাবিতে ইবিতে বিক্ষোভ
  • সুদানে আরএসএফের গণহত্যায় আরব আমিরাত ইন্ধন দিচ্ছে কেন
  • সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে
  • একাত্তরের গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: আলাল
  • সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী