বাহুবল উপজেলার স্নানঘাট গ্রামে দু’পক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সালিশ বিচারে উপস্থিত ব্যক্তিদের ওপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের এই সংঘর্ষে নারীসহ অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছেন।
রোববার সকাল ৬টার দিকে উপজেলার স্নানঘাট ইউনিয়নের স্নানঘাট গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাতে স্নানঘাট গ্রামের বাসিন্দা আওয়ামী লীগ নেতা ফয়জুর রহমান ও কৃষক লীগ নেতা মোশাহিদ মিয়ার নেতৃত্বে গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা কালা মিয়ার ছেলে জাবেদ আলীকে ছুরিকাঘাতে আহত করা হয়। হামলাকারীদের ভয়ে জাবেদ আলী ঠিকমতো চিকিৎসা না নিয়ে বাড়িতে অবস্থান করছিলেন।
এক পর্যায়ে স্থানীয় বিএনপি নেতা চান মিয়া ও সোহেল মিয়াসহ ১৫-২০ জন লোক সালিশের জন্য জাবেদ আলীর বাড়িতে যান। এ সময় মোশাহিদ মিয়া ও তাঁর লোকজন তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রোববার সকালে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়ায় দু’পক্ষের লোকজন।
প্রায় ২ ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে নারীসহ অর্ধশতাধিক লোক আহত হন। এদের মধ্যে আব্দুল মজিদ, মোর্শেদ মিয়া, আশিক মিয়া, শামীম মিয়া, মুক্তা মিয়া, কাশেম মিয়া, রমজান আলী ও ইরফান আলীকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরে বাহুবল মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার একটি জলমহালের ইজারা নিয়ে দুটি পক্ষের বিরোধ চলমান। পুলিশ জানায়, স্নানঘাটের নায়ের আলীর কাছ থেকে জলমহাল ইজারা নেন আইয়ুব আলী। ইজারা গ্রহীতার দাবি, তিনি ৩ বছরের জন্য পুকুর ইজারা নেন। তবে ইজারাদাতা বলছেন, এক বছরের কথা। এর জের ধরে উভয় পক্ষের তর্ক হয়। যেখানে ইজারা গ্রহীতার পক্ষে কথা বলেন জাবেদ আলী।
সূত্র জানায়, স্নানঘাট গ্রামের সাবেক চেয়ারম্যান ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামি তাজুল ইসলাম। তাঁর লোকজন অনেক দিন ধরে স্থানীয় বেশ কয়েকটি পরিবারের ওপর অত্যাচার চালিয়ে আসছিল। তুচ্ছ বিষয় নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা ফয়জুর রহমানের নেতৃত্বে জবেদ আলীর ওপর হামলা চালানো হয়। স্থানীয়দের সহায়তায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় জাবেদ আলীকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এলাকাবাসীর দাবি, তারা সাবেক চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম তাজু, ফয়জুর রহমান ও মোশাহিদ বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন।
বাহুবল মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ঘর ষ জ ব দ আল স ঘর ষ র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
অফিসে আপনি কি ১১ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন
প্ল্যান ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিয়ে চলছে আলোচনা। সেখানে দুই হাজার ফুলটাইম কর্মজীবীর ওপর একটা জরিপ পরিচালনা করা হয়। পেশাগত কাজ বা চাপের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে পরিচালিত গবেষণাটি থেকে পাওয়া গেছে চমকপ্রদ তথ্য।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাঁরা কর্মক্ষেত্রে ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করেন, তাঁদের খাদ্যাভ্যাস তুলনামূলকভাবে অস্বাস্থ্যকর, তাঁরা অন্যদের তুলনায় মানসিক চাপে ভোগেন বেশি। ঠিকমতো পানি খাওয়ার প্রবণতা কম। পরিবার, প্রকৃতি ও পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানোর প্রবণতাও কম। কম ঘুমান। আর যেকোনো মানসিক আঘাত থেকে সেরে ওঠার পর্যাপ্ত সময় বা সুযোগ পান না। এই মানুষেরাই বেশি হতাশায় ভোগেন।
শুধু তা-ই নয়, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া এবং হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। যাঁরা ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় অফিস করেন, তাঁদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও অনেক।
আরও পড়ুন২৫ বছর ধরে অফিসে যাননি তিনি১৩ মার্চ ২০২৫যদি ১১ ঘণ্টা কর্মক্ষেত্রে থাকতেই হয়, তাহলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেনরাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। তাতে শরীর ও মস্তিষ্ক দিনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের ধকল কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।
কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিন। সবুজের দিকে তাকান। ডেস্কে গাছ রাখতে পারেন। উঠে একটু হাঁটুন। ব্যায়াম করুন। সহকর্মীর সঙ্গে চা খেতে খেতে গল্প করুন। গবেষণা জানাচ্ছে, ছোট ছোট বিরতি কাজে মনোযোগ পুনঃস্থাপন করতে সাহায্য করে এবং কাজের গুণমান বাড়ায়।
দুপুরে খাওয়ার পর একটা ন্যাপ নিতে পারেন।
২ লিটারের একটা বোতলে পানি রাখবেন। প্রতিদিন ১ বোতল পানি অবশ্যই শেষ করবেন। তা ছাড়া পানি, শরবত, জুস, ডাবের পানি, তরমুজ, শসা, আনারস ইত্যাদি খাবেন। হাইড্রেটেড থাকলে এনার্জি ধরে রেখে কাজ করা সহজ হয়।
প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বোনেটেড ড্রিংক, চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিন। এসব কেবল আপনার ক্লান্তি বাড়াবে।
আর সম্ভব হলে কর্মক্ষেত্রে কথা বলে আপনার কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টায় নিয়ে আসতে পারলে তো কথাই নেই।
সূত্র: এনবিসি নিউজ
আরও পড়ুনঅফিসের বাড়তি কাজকে যেভাবে ‘না’ বলবেন১৩ মার্চ ২০২৫