খুলনায় বাসার সামনে থেকে এক কলেজছাত্রীকে (১৭) জোর করে তুলে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

পরে ছাত্রীটির চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করেন। সে খুলনা সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে।

ভুক্তভোগী কিশোরী খুলনা নগরে তার খালার বাড়িতে থেকে লেখাপড়া করে। তার খালু প্রথম আলোকে বলেন, আজ বেলা ১১টার দিকে সে (কলেজছাত্রী) বাইরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়। এ সময় কয়েকজন যুবক তাকে জোর করে মোটরসাইকেলে করে তুলে নিয়ে যায়। ওই যুবকেরা আগ থেকে বাড়ির সামনে ওত পেতে ছিল। তারা মেয়েটির সঙ্গে পড়াশোনা করত। এর আগেও তারা বিভিন্ন সময় কুপ্রস্তাব দিয়েছিল।

কলেজছাত্রীর বরাত দিয়ে তার খালু আরও বলেন, খুলনা নগরের আমতলা এলাকায় নিজেদের বাড়িতে নিয়ে তাকে আটকে রাখে এক যুবক। এ সময় তাকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করা হয়। মুঠোফোনে ছবি ও ভিডিও ধারণ করা হয়েছে। পরে মেয়েটির চিৎকারে আশপাশের লোক এগিয়ে আসেন এবং তাকে উদ্ধার করেন। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে মেয়েটিকে বাসায় নেওয়া হয়েছে। তাঁরা মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

কলেজছাত্রীর খালু অভিযোগ করেন, ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত যুবকের বাবা মুঠোফোনে যোগাযোগ করেছেন এবং ব্যাপারটি মীমাংস করার প্রস্তাব দিচ্ছেন।
অভিযুক্ত যুবকের বাবা আইনজীবী। অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে আজ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে তিনি মুঠোফোন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি আদালত থেকে বের হলাম। এ ব্যাপারে কিছু জানি না।’ তবে মেয়েটির খালুর সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হয়েছে বলে জানান তিনি।

খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাওলাদার সানোয়ার হুসাইন বলেন, ‘এ বিষয়ে মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ