নতুন একটি টেলিস্কোপ তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা, যার মাধ্যমে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে জানা যাবে, কোনো গ্রহে এলিয়েন জীবন আছে কি না। এক্সট্রিমলি লার্জ টেলিস্কোপ (ইএলটি) নামের এই টেলিস্কোপ আমাদের সৌরজগতের বিভিন্ন গ্রহের জৈব প্রমাণ বা বায়োসিগনেচার শনাক্ত করতে পারে। শুধু তা–ই নয়, আমাদের সৌরজগতের নিকটতম তারা প্রক্সিমা সেন্টোরির তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি ও নাসার গডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের গবেষকেরা এই টেলিস্কোপের সক্ষমতা নিয়ে কাজ করছেন। নতুন এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, চিলিতে বর্তমানে নির্মাণাধীন এই টেলিস্কোপ শুধু কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পৃথিবীর বাইরে এলিয়েন জীবনের সন্ধান করতে পারবে।

বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, ‘ইএলটি টেলিস্কোপ আমাদের সৌরজগতের গ্রহের বায়োসিগনেচার দ্রুত শনাক্ত করতে পারে। সৌরজগতের সীমানায় থাকা বিভিন্ন গ্রহের বায়ুমণ্ডল বিশ্লেষণ করে দ্রুততম সময়ে রিপোর্ট দিতে কাজ করবে এই টেলিস্কোপ।’

এই টেলিস্কোপ প্রাণহীন বিশ্বকে আলাদা করতে পারবে। জীবন ও জীবসংক্রান্ত প্রাসঙ্গিক সূচক চিহ্নিত করে বায়োসিগনেচার আছে কি না, তা শনাক্ত করতে পারে। এ ছাড়া অনেক সত্য মনে হয়, এমন প্রমাণকে দ্রুত প্রমাণ করতে পারে এই টেলিস্কোপ। ইএলটির সব ধরনের গ্রহ অধ্যয়ন করার ক্ষমতা রয়েছে। যেসব গ্রহ কোনো তারাকে কেন্দ্র করে ঘুরছে, তাদের বায়ুমণ্ডলের মধ্য দিয়ে যাওয়া তারার আলো বিশ্লেষণ করতে পারবে এই টেলিস্কোপ। গুরুত্বপূর্ণ বর্ণালি তথ্য সংগ্রহ করবে ইএলটি। আর যেসব গ্রহ অস্বাভাবিক কক্ষপথে চলছে, সেই সব গ্রহের পৃষ্ঠ থেকে প্রতিফলিত আলো পরীক্ষা করবে। এসব গ্রহের বায়ুমণ্ডল অধ্যয়ন কর দ্রুত ফলাফল দিতে পারবে এই টেলিস্কোপ। গ্রহে প্রাণের বাসযোগ্যতা ও জীবনের কোনো লক্ষণ আছে কি না, তা জানতে সুযোগ করে দেবে এই টেলিস্কোপ।

ধারণা করা হচ্ছে, ইএলটি ২০২৯ সালে যাত্রা শুরু করবে। যদিও নিয়মিত কাজ শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে ২০৩০ সালের ডিসেম্বর মাসে। ইএলটির দৈত্যাকার আয়নায় ৭৯৮টি ছোট আয়না থাকবে। প্রতি আয়নায় ১২টি এজ সেন্সর থাকছে। এই টেলিস্কোপ হাবল স্পেস টেলিস্কোপের চেয়ে ১৬ গুণ বেশি তীক্ষ্ণ ছবি দিতে পারবে।

সূত্র: এনডিটিভি

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এই ট ল স ক প স রজগত র

এছাড়াও পড়ুন:

সৌরজগতের নতুন বামন গ্রহ নিয়ে এত আলোচনা কেন

 আমাদের সৌরজগতের অচেনা ও অন্ধকার প্রান্তে ‘প্ল্যানেট নাইন’ নামের বিশাল ও রহস্যময় গ্রহ লুকিয়ে আছে বলে মনে করেন অনেক বিজ্ঞানী। আর তাই দীর্ঘদিন ধরে কল্পিত এই প্ল্যানেট নাইন গ্রহের সন্ধান করছেন তাঁরা। গ্রহটির সন্ধান পাওয়া না গেলেও সৌরজগতের অচেনা ও অন্ধকার প্রান্তে একটি নতুন বামন গ্রহ খুঁজে পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা। নতুন এই বামন গ্রহের অস্তিত্ব প্ল্যানেট নাইন তত্ত্বকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে। আর তাই বামন গ্রহটি নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে চলছে তুমুল আলোচনা।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, নেপচুনের অপর পাশে বরফের পাথরের অদ্ভুত, গুচ্ছবদ্ধ কক্ষপথ ইঙ্গিত দেয় সেখানে বড় কিছু আছে। এই বড় কিছুর মধ্যে প্ল্যানেট নাইনও থাকতে পারে। সেই এলাকাতেই ‘২০১৭ ওএফ২০১’ নামের বামন গ্রহের অবস্থান শনাক্ত করা হয়েছে। প্রায় ৭০০ কিলোমিটার বিস্তৃত এই গ্রহটি প্রায় ২৫ হাজার বছরে নিজ কক্ষপথে আবর্তন করায় পৃথিবী থেকে খুব কম সময়ের জন্য পর্যবেক্ষণ করা যায়।

নতুন বামন গ্রহটির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড স্টাডির বিজ্ঞানী সিহাও চেং বলেন, এই বামন গ্রহ প্লুটোর চেয়ে তিন গুণ ছোট হলেও বামন গ্রহ হিসেবে বিবেচিত হওয়ার জন্য যথেষ্ট বড়। গ্রহটির দীর্ঘ কক্ষপথ রয়েছে। পৃথিবী ও সূর্যের মধ্যকার দূরত্বের ১ হাজার ৬০০ গুণের বেশি দূরত্বে অবস্থান করছে গ্রহটি।

প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালে প্লুটোকে বামন গ্রহের মর্যাদা দেওয়া হয়। সৌরজগতে সব মিলিয়ে আরও চারটি বামন গ্রহ রয়েছে। নতুন বামন গ্রহটি এই তালিকায় শিগগিরই যুক্ত করা হবে। জেমস ওয়েব, হাবল ও আলমা টেলিস্কোপের তথ্য বিশ্লেষণ করে গ্রহটির অবস্থান শনাক্ত করা বিজ্ঞানী স্যাম ডিন বলেন, বামন বস্তুটি সৌরজগতের আকর্ষণীয় আবিষ্কারের মধ্যে একটি।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সৌরজগতের নতুন বামন গ্রহ নিয়ে এত আলোচনা কেন