জামালপুরের বকশীগঞ্জ ও শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং একই উপজেলার সহকারী কমিশনারের (ভূমি) বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা হয়েছে।

সোমবার (৭ এপ্রিল) গোলাপ হোসেন নামে জেলার শ্রীবরদী উপজেলার এক ব্যবসায়ী শেরপুর আদালতের নালিতাবাড়ীর সিআর আমলী আদালতে মামলাটি করেন। বিচারক মামলাটি তদন্তের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার বিবাদীরা হলেন- বকশীগঞ্জ উপজেলার ইউএনও মাসুদ রানা, নালিতাবাড়ী উপজেলার ইউএনও ফারজানা আক্তার ববি এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) আনিছুর রহমান। মাসুদ রানা আগে নালিতাবাড়ী উপজেলার ইউএনও ছিলেন।

আরো পড়ুন:

বর পক্ষকে উদ্ধারে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ, থানায় মামলা

নারায়ণগঞ্জে রিভলবারসহ কিশোর গ্রেপ্তার

মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের জুন মাসে আদালতের মাধ্যমে ২৫ হাজার ঘনফুট বালু নিলামে কেনেন গোলাপ হোসেন। ওই বালু গোলাপ হোসেনকে বুঝিয়ে দিতে ৬ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন নতিলাবাড়ী উপজেলার তৎকালীন ইউএনও মাসুদ রানা। পরবর্তীতে মাসুদ রানা বদলি হয়ে জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলায় চলে যান। নতিলাবাড়ীর বর্তমান ইউএনও ফারজানা আক্তার ববি এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) আনিছুর রহমানকে চাঁদার ওই টাকা না দিলে বালু বুঝিয়ে দিচ্ছেন না বলে মামলায় দাবি করেন ব্যবসায়ী। এ কারণে বাধ্য হয়ে নালিতাবাড়ীর সিআর আমলী আদালতে আজ বকশীগঞ্জের ইউএনও মাসুদ রানা, নালিতাবাড়ীর ইউএনও ফারজানা আক্তার ববি এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) আনিছুর রহমানকে বিবাদী করে ৬ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে মামলা করেন গোলাপ হোসেন। ঘটনাটি তদন্তের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন আদালত।

শেরপুর জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জাহিদুল হক আধার বলেন, “চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতের মাধ্যমে বালু ক্রয় করা হয়েছিল। ৯ মাস অতিবাহিত হলেও ইউএনও বালু বুঝিয়ে দিচ্ছেন না। সাবেক ইউএনও এই বালু হস্তান্তরের জন্য ৬ লাখ টাকা চান। তিনি চলে গেলে বর্তমান ইউএনও এবং এসিল্যান্ড একই দাবি করেন। মামলা দায়েরের পর আদালত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।”

মামলার বাদী গোলাপ হোসেন বলেন, “শুরুতেই আমার কাছে টাকা দাবি করা হয়েছে। অভিযুক্তরা ৬ লাখ টাকা চেয়েছে। আমি অপারগতা প্রকাশ করার পরেই আমাকে আদালতে পাঠিয়েছে। বলেছে, আপনার বালু আদালত থেকে নেন। আমি দেব না। আমি ন্যায় বিচার চাই।”

এ বিষয়ে অভিযুক্ত বর্তমান জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাসুদ রানার মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি দুইটি চিঠি হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে পড়তে বলে কল কেটে দেন। পরে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তার চিঠিতে বালু বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে।

নালিতাবাড়ির বর্তমান ইউএনও ফারজানা আক্তার ববি বলেন, “বিষয়টা আমার সময়কারের নয়, ওই সময় ইজারাদারের সাত দিনের মধ্যে বালু নিজ উদ্যোগে অপসারণ করে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। তবে, তিনি করেননি। চাঁদাবাজির বিষয়ে আমি অবগত নই।”

ঢাকা/তারিকুল/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউএনও অভ য গ র ইউএনও ন ইউএনও উপজ ল র সহক র

এছাড়াও পড়ুন:

পরিবারের কাছে ফিরে গেলেন অভিনেতা সমু চৌধুরী

অভিনেতা সমু চৌধুরী পরিবারের কাছে ফিরে গেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সোয়া ৩টার পর পুলিশ তাঁকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। এর আগে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে মাজারের গাছতলায় গামছাপরিহিত সমু চৌধুরীর ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে নানা জল্পনা শুরু হয়।

গফরগাঁওয়ের পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আলম বলেন, অভিনেতা সমু চৌধুরীকে রাত ৩টা ২০ মিনিটের দিকে খালাতো ভাই অপু চৌধুরীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ সময় অভিনয়শিল্পী সংঘের লোকজনও ছিলেন। তিনি বলেন, সমু চৌধুরী এর আগে মাজারটিতে কয়েকবার এলেও কেউ তাঁকে চিনতে পারেননি। এবারও মাজারে একাকী সময় কাটাতে এসেছিলেন তিনি।

এর আগে গত বুধবার রাতে ঢাকা থেকে মোটরসাইকেলে করে গফরগাঁও উপজেলার মশাখালী ইউনিয়নে অবস্থিত মুখী শাহ্ মিসকিনের মাজারে আসেন সমু চৌধুরী। পরদিন গতকাল দুপুরে মাজারের গাবগাছের নিচে শুয়ে থাকতে দেখা যায় তাঁকে। মাজারের পাশের বাসিন্দা আল মামুন হৃদয় ফেসবুকে তাঁর গাছতলায় শুয়ে থাকার ছবি পোস্ট করেন। দ্রুত সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা সমু চৌধুরীকে মানসিকভাবে অসুস্থ বলে দাবি করেন। সমু চৌধুরীকে এমন অবস্থায় দেখতে পেয়ে সেখানে ভিড় করেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিকেল গাড়িয়ে সন্ধ্যা হলে পুলিশের অনুরোধেও থানায় যাননি সমু চৌধুরী। সন্ধ্যার পর লোকজন আরও বাড়তে থাকে। এ অবস্থায় পুলিশের পাশাপাশি মাজার প্রাঙ্গণে সেনাবাহিনী অবস্থান নেয়। এ সময় সমু চৌধুরী জানান, তিনি সুস্থ আছেন। সারা রাত মাজারে ধ্যানে ছিলেন।

আরও পড়ুনঅভিনেতা সমু চৌধুরীকে উদ্ধারের চেষ্টা করেছে পুলিশ, কী হয়েছিল তাঁর২১ ঘণ্টা আগে

গতকাল রাত ৯টার দিকে সমু চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করেন গফরগাঁওয়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এন এম আবদুল্লাহ-আল-মামুন। সমু চৌধুরী সুস্থ আছেন কি না, তা জানতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন সেখানে উপস্থিত হন।

ইউএনও এন এম আবদুল্লাহ-আল-মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এক ঘণ্টার বেশি সময় অভিনেতার সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় এবং তাঁকে সুস্থ পাওয়া যায়। তাঁর বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হয়, পুরো ঘটনা তাঁর জবানিতে শোনা হয়। অভিনেতা মাজারভক্ত মানুষ। এ মাজারে আগেও এসেছিলেন। তাঁকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দিলেও গতকাল তাঁর ভাষায় গুরুবার ও গুরুত্বপূর্ণ রাত হওয়ায় তিনি মাজারেই অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবির কারণে বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়।’

সমু চৌধুরীর বয়স ৬২ বছর। তিনি ১৯৯০ সালে একটি নাটকের মাধ্যমে অভিনয়জীবনে প্রবেশ করেন। এ ছাড়া উদীচীর সঙ্গে ছিলেন ১২ বছর। ব্যক্তিজীবনে তিনি অবিবাহিত। তাঁর বাড়ি যশোর। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে শুধু মা জীবিত আছেন। সমু চৌধুরী যশোরে থাকেন বলেও জানান ইউএনও।

আরও পড়ুনমাজার থেকে সরতে চাইছেন না সমু চৌধুরী১৮ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৬ মাস ধরে খোলা আকাশের নিচে ৩১টি পরিবার
  • পরিবারের কাছে ফিরে গেলেন অভিনেতা সমু চৌধুরী