নিউজিল্যান্ডের সাদা বলের দায়িত্ব ছাড়লেন গ্যারি স্টিড
Published: 8th, April 2025 GMT
নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দলের সাদা বলের (ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি) কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন গ্যারি স্টিড। প্রায় ছয় বছর ধরে দায়িত্বে থাকা এই কোচ জানিয়ে দিয়েছেন, সীমিত ওভারের ক্রিকেটে আর তার সঙ্গে কিউইদের দেখা যাবে না। তবে টেস্ট দলের কোচ হিসেবে থাকবেন কি না, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি তিনি।
২০১৮ সালে মাইক হেসনের জায়গায় নিউজিল্যান্ড জাতীয় দলের দায়িত্ব নেন স্টিড। তার অধীনেই কিউইরা ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপ, ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ওঠে। যদিও প্রতিবারই শেষ পর্যন্ত রানার্সআপ হয় দলটি। তবে ২০২১ সালের জুনে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম আসরে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল তার কোচিংয়েই।
দায়িত্ব ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে স্টিড বলেন, ‘সফরের পর সফরের জীবনে আমি কিছুটা ক্লান্ত। পরিবার ও ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে চাই এখন। আগামী মৌসুমটা অপেক্ষাকৃত কম অভিজ্ঞ একটি দলের সঙ্গে ভালোভাবে শেষ করাই আমার প্রাধান্য। গত ছয় মাস একটানা ক্রিকেট নিয়ে দারুণ ব্যস্ত ছিলাম।’
টেস্ট দলের কোচ হিসেবে দায়িত্বে থাকতে চান কি না এ প্রসঙ্গে স্টিড বলেন, ‘এই সময়টা আমি আমার স্ত্রী ও পরিবারের সঙ্গে কাটাতে চাই, ওদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে চাই। তখনই ভালোভাবে বুঝতে পারব, টেস্ট কোচ হিসেবে নতুন করে আবেদন করব কি না।’
গ্যারি স্টিডের বর্তমান চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে আগামী জুনে। নতুন করে দায়িত্ব নেওয়ার জন্য বিস্তৃত প্রক্রিয়া শুরু করবে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট (এনজেডসি)। স্টিড সে প্রক্রিয়ায় অংশ নেবেন কি না, সেটি এখনও স্পষ্ট নয়।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নাসির-তামিমার মামলায় বিব্রত আদালত, অন্য আদালতে বদলি
অন্যের স্ত্রীকে প্রলুব্ধ করে নিয়ে যাওয়া, ব্যভিচার ও মানহানির অভিযোগে ক্রিকেটার নাসির হোসাইন ও তার স্ত্রী তামিমা সুলতানা তাম্মির বিরুদ্ধে করা মামলা শুনতে বিব্রতবোধ করেছেন আদালত। এরপর মামলাটি অন্য আদালতে বদলির আদেশ দিয়েছেন।
সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াহিদুজ্জামান এ আদেশ দেন।
এদিন মামলাটিতে নাসির হোসেন এবং তামিমা সুলতানার আত্মপক্ষ শুনানির দিন ধার্য ছিল। নাসির হোসেন এবং তামিমা সুলতানা আদালতে হাজির হন।
তাদের পক্ষে অ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান দুলু আদালতে দুটি আবেদন করেন। এর মধ্যে বাদীপক্ষের আইনজীবী ইশরাত হাসানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে একটি আবেদন করেন।
কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এ মামলার বিচার চলছে। এ অবস্থায় বাদীপক্ষের আইনজীবী গত ১৬ এপ্রিল মিডিয়াতে বলেন, নাসির হোসেন ব্যভিচার করে তামিমাকে প্রলুব্ধ করে নিয়ে গেছেন। এ বিষয়ে আদালতে বিচার চলছে। বিচার শেষে আদালত রায়ের মাধ্যমে নির্ধারণ করবেন নাসির তামিমাকে প্রলুব্ধ করে নিয়ে গেছেন কিনা এবং ব্যভিচারের সম্পর্ক করেছেন কিনা। একই সঙ্গে আসামিদের আত্মপক্ষ শুনানিতে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মামলার পুরো অভিযোগ না শুনিয়ে সারসংক্ষেপ পড়ে শোনানোর আবেদন করেন।
এদিকে বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান আদালতে অভিযোগ করেন, আসামিপক্ষের আইনজীবী আগে বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনা করেছেন। আইন অনুযায়ী তিনি এখন আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করতে পারেন না।
অভিযোগের ইশরাত হাসান বলেন, মামলার কেস রেকর্ডে যা আছে তাই বলেছি। যা সত্যি তাই বলেছি। আদালতকে নিয়ে কোনও কিছু বলিনি বরং আদালতের নিকট ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করা কোনও অপরাধ নয়। এ ধরনের আবেদন উদ্দেশ্যমূলক। আমাকে মামলা পরিচালনা থেকে বিরত রাখার জন্য আগেও প্রকাশ্য আদালতে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। বারবার আপস করার জন্য চাপ দেওয়া হয়েছিল। তবে এসব করে লাভ হবে না। আইনজীবীকে ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। আমি আইনগতভাবেই সব বিষয় মোকাবেলা করবো।
দুই পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত বলেন, উভয় পক্ষেরই আবেদন দেওয়ার অধিকার আছে। এটা একটা ব্যস্ত আদালত। এক মামলার শুনানি করতে যে ধৈর্য দরকার, এতো সময় এই আদালতের নেই। এতে অন্য মামলায় ইফেক্ট পড়ে। আমি আসলে বিব্রতবোধ করছি। মামলাটা অন্য কোর্টে পাঠিয়ে দেই। এতে আপনারা কি নাখোশ হবেন? তখন আইনজীবীরা বলেন, এতে তাদের আপত্তি নেই।
তখন আদালত বলেন, মামলাটা বদলি করে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর পাঠিয়ে দিচ্ছি। সিএমএম মামলাটি একটা অন্য কোর্টে পাঠিয়ে দেবেন। এর আগে গত ১৬ এপ্রিল মামলাটিতে সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়। মামলাটিতে ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত।
২০২২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি একই আদালত ক্রিকেটার নাসির হোসাইন ও তার স্ত্রী তামিমা সুলতানা তাম্মির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন। তবে নাসিরের শাশুড়ি সুমি আক্তারকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। একই বছরের ৬ মার্চ মহানগর দায়রা আদালতে নাসির ও তামিমার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশের বিরুদ্ধে রিভিশন করেন তাদের আইনজীবী কাজী নজিব্যুল্লাহ হিরু। অন্যদিকে সুমি আক্তারকে অব্যাহতির আদেশের বিরুদ্ধে রিভিশন দায়ের করেন বাদীপক্ষের আইনজীবী ইশরাত হাসান।
২০২৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি বাদী ও বিবাদী উভয় পক্ষের রিভিশন অবেদন নামঞ্জুর করে ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মুর্শিদ আহাম্মেদ মামলাটির বিচার চলবে বলে আদেশ দেন। একই সঙ্গে নাসিরের শাশুড়ি সুমি আক্তার মামলার দায় থেকে অব্যাহতি থাকবেন বলে আদেশ দেন।
এর আগে ২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাম্মির সাবেক স্বামী রাকিব হাসান বাদী হয়ে এই মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তাম্মি ও রাকিবের বিয়ে হয়। তাদের আট বছরের একটি মেয়েও রয়েছে। তাম্মি পেশায় একজন কেবিন ক্রু। ২০২১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তাম্মি ও ক্রিকেটার নাসির হোসেনের বিয়ের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা রাকিবের নজরে আসে। পরে পত্র-পত্রিকায় তিনি ঘটনার বিষয়ে সম্পূর্ণ জানেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, রাকিবের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক চলমান অবস্থাতেই তাম্মি নাসিরকে বিয়ে করেছেন; যা ধর্মীয় এবং রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী সম্পূর্ণ অবৈধ। তাম্মিকে প্রলুব্ধ করে নিজের কাছে নিয়ে গেছেন নাসির। তাম্মি ও নাসিরের এমন অনৈতিক ও অবৈধ সম্পর্কের কারণে রাকিব ও তার আট বছর বয়সী কন্যা মারাত্মভাবে মানসিক বিপর্যস্ত হয়েছেন। আসামিদের এমন কার্যকলাপে রাকিবের চরমভাবে মানহানি হয়েছে, যা তার জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।