নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে আগুনে দগ্ধ হয়ে  মো. আশিকুর রহমান (৩০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। পারিবারিক কলহের জের ধরে তিনি নিজ শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দগ্ধ হন। তিনদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর তিনি মারা যান।

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

নিহত আশিকুর রহমান সোনারগাঁও উপজেলার শম্ভুপুরা ইউনিয়নের দড়িগাঁও গ্রামের মোশাররফ হোসেনের ছেলে। তিনি শম্ভুপুরা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তার মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, আশিকুর রহমান সোমবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে পারিবারিক কলহের জেরে তার নিজের বসতঘরে দরজা বন্ধ করে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে স্বজনরা দরজা ভেঙে তাকে মারাত্মক দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করেন। 

নিহতের বোন জামাই মো.

আবদুল গাফফার মিয়া বলেন, “মাদকাসক্ত হওয়ার কারণে বিভিন্ন সময়ে স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের সাথে তার মনোমালিন্য হতো। পারিবারিক বিষয়ে ক্ষোভে সে নিজের শরীরে আগুন দেয়।”

সোনারগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ মফিজুর রহমান বলেন, “আশিকুর রহমান নামে এক যুবক নিজ শরীরে আগুন দিয়ে মারা গেছেন। এবিষয়ে কেউ কিছু জানায়নি। তবে খবর নিয়ে জানা যায়, পারিবারিক কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। তার স্ত্রীর সঙ্গেও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঝগড়া বিবাদ চলছিল। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। লাশ ঢামেকের মর্গে রাখা হয়েছে।”

ঢাকা/অনিক/টিপু

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ন রগ

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ