বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ মিরাজ, দর্শকদের পছন্দে সেরা ঋতুপর্ণা
Published: 11th, April 2025 GMT
বাংলাদেশ ক্রীড়ালেখক সমিতি (বিএসপিএ) আয়োজিত ২০২৪ সালের বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদের স্বীকৃতি জিতে নিলেন ক্রিকেটার মেহেদী হাসান মিরাজ। প্রতিযোগিতায় তার সঙ্গে মনোনয়ন পেয়েছিলেন ফুটবলার ঋতুপর্ণা চাকমা ও আর্চার সাগর ইসলাম। সব প্রতিদ্বন্দ্বীকে পেছনে ফেলে রাজধানীর এক অভিজাত হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সেরার মুকুট ওঠে মিরাজের মাথায়। মিরাজের সঙ্গে স্বীকৃতি পেয়েছেন আরেক ক্রিকেটার নাহিদ রানা। ২২ বছর বয়সী এই পেসারের হাতে উঠেছে বর্ষসেরা উদীয়মান ক্রীড়াবিদের সম্মাননা।
এদিকে, জাতীয় নারী ফুটবল দলের মিডফিল্ডার ঋতুপর্ণা চাকমা পেয়েছেন পপুলার চয়েজ অ্যাওয়ার্ড। ভুটান লিগে খেলতে যাওয়ার কারণে তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে না পারলেও ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘এই পুরস্কার আমাকে আরও ভালো খেলতে অনুপ্রাণিত করবে।’
১৯৬৪ সাল থেকে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ ও সংশ্লিষ্টদের সম্মাননা দিয়ে আসছে বিএসপিএ। এবারের আসরে ১৫টি ক্যাটাগরিতে সম্মাননা পেয়েছেন ১৩ জন ক্রীড়াবিদ, দল ও সংগঠন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও স্কয়ার টয়লেট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেন বিএসপিএ সভাপতি রেজওয়ান উজ জামান রাজিব।
বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদের পাশাপাশি বর্ষসেরা ক্রিকেটারের পুরস্কারও পেয়েছেন মিরাজ। ২০২৪ সালে ১০টি টেস্টে ৬১৪ রান ও ৩১ উইকেট এবং ৯টি ওয়ানডেতে ৩০৫ রান ও ৮ উইকেট নিয়ে উজ্জ্বল পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন তিনি। যদিও টি-টোয়েন্টিতে সেভাবে ছন্দে ছিলেন না, চার ম্যাচে করেছেন ১০৬ রান ও নিয়েছেন মাত্র ১ উইকেট।
মিরাজ বলেন, ‘বিএসপিএকে ধন্যবাদ এমন আয়োজনের জন্য। এখানে এসে দেশের সব খেলার তারকাদের সঙ্গে দেখা ও কথা হয়, এটা দারুণ লাগে।’
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ বলেন, ‘প্রথমেই বিএসপিএকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাতে চাই এমন একটা আয়োজনের জন্য। এটা সবার মধ্যে স্বপ্নের ও আশার সঞ্চার করবে। আপনারা জানেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্রীড়াক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তনের জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছে। আমরা ক্রীড়াক্ষেত্রের পুনর্গঠন ও সংস্কার নিয়ে কাজ করছি। আমাদের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। ক্রীড়া বাজেটের বাজেটের যে স্বল্পতা আছে, আমরা সরকারকে অনুরোধ করেছি, ক্রীড়াক্ষেত্রে আরও প্রণোদনা দেওয়ার।’
গেস্ট অব অনার স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব অঞ্জন চৌধুরী বলেন, ‘আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে বিএসপিএর সঙ্গে আমরা ১২ বছর আছি। তারা যতদিন চাইবে, ততদিন আমরা বিএসপিএর সঙ্গে থাকবো। জেলা পর্যায়ে খেলাধুলা ঝিমিয়ে গেছে, এখানে উপদেষ্টা আছেন, তার কাছে আমার অনুরোধ থাকবে, তিনি যেন জেলার খেলাধুলার দিকে দৃষ্টি দিবেন। সবাই ভালো থাকবেন, ক্রীড়াঙ্গনের সঙ্গে থাকবেন।’
২০২৪ সালের সেরা যারা:
স্পোর্টস পারসন অব দ্য ইয়ার: চ্যাম্পিয়ন- মেহেদী হাসান মিরাজ (ক্রিকেট),
রানারআপ- ঋতুপর্ণা চাকমা (ফুটবল) ও সাগর ইসলাম (আর্চারি)।
পপুলার চয়েজ অ্যাওয়ার্ড- ঋতুপর্ণা চাকমা (ফুটবল)।
বর্ষসেরা ক্রিকেটার- মেহেদী হাসান মিরাজ,
বর্ষসেরা ফুটবলার- ঋতুপর্ণা চাকমা,
বর্ষসেরা্ আর্চার- সাগর ইসলাম,
বর্ষসেরা অ্যাথলেট (ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড)- জহির রায়হান,
উদীয়মান ক্রীড়াবিদ- নাহিদ রানা (ক্রিকেট),
বর্ষসেরা দাবাড়ু- মনন রেজা নীড়,
বর্ষসেরা দলগত সাফল্য- জুনিয়র বিশ্বকাপে সুযোগ পাওয়া অনূর্ধ্ব-২১ জাতীয় হকি দল,
সক্রিয় সংস্থা- যশোর শামস-উল-হুদা অ্যাকাডেমি,
বর্ষসেরা কোচ- মওদুদুর রহমান শুভ (হকি),
তৃণমূলের ক্রীড়াব্যক্তিত্ব- বীরসেন চাকমা (ফুটবল সংগঠক, রাঙামাটি),
বর্ষসেরা সংগঠক- মো.
বর্ষসেরা আম্পায়ার - শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত ও বিশেষ সম্মাননা- হামিদুল ইসলাম (২০১০ এসএ গেমস সোনাজয়ী ভারোত্তোলক)।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এসপ এ মনন র জ ন ড় ফ টবল ব এসপ ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে
সুদ পরিশোধে সরকারের ব্যয় বাড়ছে। এ ব্যয় বহন করতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাজেটে সরকারের সুদ পরিশোধ সংক্রান্ত পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে, আগামী বছরগুলোতে সুদ ব্যয় ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে।
পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের প্রায় ১৫ ভাগ অর্থই সুদ খাতে খরচ করতে হচ্ছে এখন। এ পরিস্থিতিতে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতেই ব্যয় করতে হবে চার লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। পাঁচ অর্থবছরের ব্যবধানে সুদ ব্যয় বাড়ছে ৩৩ শতাংশ। এর মধ্যে শতাংশের হিসাবে বৈদেশিক ঋণের সুদ ব্যয় সবচেয়ে বেশি বাড়বে।
অর্থ বিভাগের করা ‘মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি-২০২৫-২০২৬ থেকে ২০২৭-২০২৮’ এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হয়েছিল এক লাখ ১৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ খাতে সুদ ব্যয় ছিল ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় গেছে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা।
চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে (যা চলতি জুনের ৩০ তারিখে শেষ হয়ে যাবে) মূল বাজেটে সুদ খাতে ব্যয় বরাদ্দ ছিল এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বছর শেষে এই সীমায় সুদ ব্যয় ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। ফলে সংশোধিত বাজেটে এ খাতে ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয়েছে এক লাখ ২১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এ হিসাবের মধ্যে ছিল অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ব্যয় ৯৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং বিদেশী ঋণের ২২ হাজার কোটি টাকা।
একইভাবে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়েরও একটি প্রক্ষেপণ করেছে অর্থ বিভাগ। এই হিসেবে দেখা যায় আগামী ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হবে এক লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা (অভ্যন্তরীণ এক লাখ কোটি টাকা , বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় ২২ হাজার কোটি টাকা)। একইভাবে এর পরের অর্থবছর ২০২৬-২০২৭ অর্থবছরে একলাখ ৩৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা(অভ্যন্তরীণ এক লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের ২৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা) এবং ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়ের প্রক্ষেপণ করা হয়েছে ১ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, মোট সুদ ব্যয়ের সিংহভাগই অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ। অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে এক লাখ ২৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা গিয়ে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু মোট বাজেটের অনুপাতে অভ্যন্তরীণ সুদ পরিশোধের হার ২০২৩ -২০২৪ অর্থবছরে ১৬ দশমিক ২৯ শতাংশ থেকে কমে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশে হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ মোট সুদ ব্যয়ের তুলনায় কম, তবে এটি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ফলে এটি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ২৭ হাজার ১০০ কোটি টাকায় উন্নীত হতে পারে। মোট বাজেটের অনুপাতে বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ এ সময়কালে ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২ দশমিক ৭৬ শতাংশে উন্নীত হতে পারে।
বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধের কার্যকর ব্যবস্থাপনা শুধু আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্যই নয়, বরং এটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রক্ষা, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা, আন্তর্জাতিক ঋণমান বজায় রাখা এবং ভবিষ্যতের উন্নয়ন সম্ভাবনা সুরক্ষিত রাখার জন্য অপরিহার্য।