বাংলাদেশ ক্রীড়ালেখক সমিতি (বিএসপিএ) আয়োজিত ২০২৪ সালের বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদের স্বীকৃতি জিতে নিলেন ক্রিকেটার মেহেদী হাসান মিরাজ। প্রতিযোগিতায় তার সঙ্গে মনোনয়ন পেয়েছিলেন ফুটবলার ঋতুপর্ণা চাকমা ও আর্চার সাগর ইসলাম। সব প্রতিদ্বন্দ্বীকে পেছনে ফেলে রাজধানীর এক অভিজাত হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সেরার মুকুট ওঠে মিরাজের মাথায়। মিরাজের সঙ্গে স্বীকৃতি পেয়েছেন আরেক ক্রিকেটার নাহিদ রানা। ২২ বছর বয়সী এই পেসারের হাতে উঠেছে বর্ষসেরা উদীয়মান ক্রীড়াবিদের সম্মাননা।

এদিকে, জাতীয় নারী ফুটবল দলের মিডফিল্ডার ঋতুপর্ণা চাকমা পেয়েছেন পপুলার চয়েজ অ্যাওয়ার্ড। ভুটান লিগে খেলতে যাওয়ার কারণে তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে না পারলেও ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘এই পুরস্কার আমাকে আরও ভালো খেলতে অনুপ্রাণিত করবে।’

১৯৬৪ সাল থেকে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ ও সংশ্লিষ্টদের সম্মাননা দিয়ে আসছে বিএসপিএ। এবারের আসরে ১৫টি ক্যাটাগরিতে সম্মাননা পেয়েছেন ১৩ জন ক্রীড়াবিদ, দল ও সংগঠন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও স্কয়ার টয়লেট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেন বিএসপিএ সভাপতি রেজওয়ান উজ জামান রাজিব।

বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদের পাশাপাশি বর্ষসেরা ক্রিকেটারের পুরস্কারও পেয়েছেন মিরাজ। ২০২৪ সালে ১০টি টেস্টে ৬১৪ রান ও ৩১ উইকেট এবং ৯টি ওয়ানডেতে ৩০৫ রান ও ৮ উইকেট নিয়ে উজ্জ্বল পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন তিনি। যদিও টি-টোয়েন্টিতে সেভাবে ছন্দে ছিলেন না, চার ম্যাচে করেছেন ১০৬ রান ও নিয়েছেন মাত্র ১ উইকেট।

মিরাজ বলেন, ‘বিএসপিএকে ধন্যবাদ এমন আয়োজনের জন্য। এখানে এসে দেশের সব খেলার তারকাদের সঙ্গে দেখা ও কথা হয়, এটা দারুণ লাগে।’

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ বলেন, ‘প্রথমেই বিএসপিএকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাতে চাই এমন একটা আয়োজনের জন্য। এটা সবার মধ্যে স্বপ্নের ও আশার সঞ্চার করবে। আপনারা জানেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্রীড়াক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তনের জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছে। আমরা ক্রীড়াক্ষেত্রের পুনর্গঠন ও সংস্কার নিয়ে কাজ করছি। আমাদের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। ক্রীড়া বাজেটের বাজেটের যে স্বল্পতা আছে, আমরা সরকারকে অনুরোধ করেছি, ক্রীড়াক্ষেত্রে আরও প্রণোদনা দেওয়ার।’ 

গেস্ট অব অনার স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব অঞ্জন চৌধুরী বলেন, ‘আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে বিএসপিএর সঙ্গে আমরা ১২ বছর আছি। তারা যতদিন চাইবে, ততদিন আমরা বিএসপিএর সঙ্গে থাকবো। জেলা পর্যায়ে খেলাধুলা ঝিমিয়ে গেছে, এখানে উপদেষ্টা আছেন, তার কাছে আমার অনুরোধ থাকবে, তিনি যেন জেলার খেলাধুলার দিকে দৃষ্টি দিবেন। সবাই ভালো থাকবেন, ক্রীড়াঙ্গনের সঙ্গে থাকবেন।’ 

২০২৪ সালের সেরা যারা:

স্পোর্টস পারসন অব দ্য ইয়ার: চ্যাম্পিয়ন- মেহেদী হাসান মিরাজ (ক্রিকেট), 
রানারআপ- ঋতুপর্ণা চাকমা (ফুটবল) ও সাগর ইসলাম (আর্চারি)। 
পপুলার চয়েজ অ্যাওয়ার্ড- ঋতুপর্ণা চাকমা (ফুটবল)। 
বর্ষসেরা ক্রিকেটার- মেহেদী হাসান মিরাজ, 
বর্ষসেরা ফুটবলার- ঋতুপর্ণা চাকমা, 
বর্ষসেরা্ আর্চার- সাগর ইসলাম, 
বর্ষসেরা অ্যাথলেট (ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড)- জহির রায়হান, 
উদীয়মান ক্রীড়াবিদ- নাহিদ রানা (ক্রিকেট), 
বর্ষসেরা দাবাড়ু- মনন রেজা নীড়, 
বর্ষসেরা দলগত সাফল্য- জুনিয়র বিশ্বকাপে সুযোগ পাওয়া অনূর্ধ্ব-২১ জাতীয় হকি দল, 
সক্রিয় সংস্থা- যশোর শামস-উল-হুদা অ্যাকাডেমি, 
বর্ষসেরা কোচ- মওদুদুর রহমান শুভ (হকি), 
তৃণমূলের ক্রীড়াব্যক্তিত্ব- বীরসেন চাকমা (ফুটবল সংগঠক, রাঙামাটি), 
বর্ষসেরা সংগঠক- মো.

ইমরুল হাসান (সভাপতি বসুন্ধরা কিংস), 
বর্ষসেরা আম্পায়ার - শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত ও বিশেষ সম্মাননা- হামিদুল ইসলাম (২০১০ এসএ গেমস সোনাজয়ী ভারোত্তোলক)।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এসপ এ মনন র জ ন ড় ফ টবল ব এসপ ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরের সাবেক পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে পানি জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) নোয়াখালীর চাটখিল থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এই মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।

আরো পড়ুন:

নাফিসা কামালসহ ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা

সাজিদ হত্যার তদন্তে সিআইডিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমোদন 

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে উল্লেখযোগ্য প্রমাণ পাওয়ায় নোয়াখালীর চাটখিল থানায় জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তিনি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে স্বল্প সময়ের জন্য ‘ব্যক্তিগত সহকারী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই দায়িত্বই তাকে আর্থিকভাবে লাভবান করেছে মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।

জসীম উদ্দিন খান জানান, ২০১০ সালে জাহাঙ্গীর ‘স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন করে বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা নেন। কিন্তু এর আড়ালে তিনি অসংখ্য সন্দেহজনক ব্যাংকিং কার্যক্রম করেন। কোম্পানির নামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক অঙ্কের টাকা জমা হয়, যার বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি ও ব্যবসার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।

সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টগুলোতে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ৫৬৫ কোটিরও বেশি টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ নগদে জমা হয়েছে দেশের নানা স্থান থেকে। এসব অর্থের উৎস অজানা এবং হুন্ডি ও মানিলন্ডারিং কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক প্রমাণ মেলে।

বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দীন জানান, জাহাঙ্গীর আলম তার স্ত্রী কামরুন নাহার ও ভাই মনির হোসেনের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অর্থ লেনদেন করতেন। জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ২০২৪ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং বর্তমানে ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করছেন। বিদেশে তাদের বিনিয়োগ বা সম্পদ ক্রয়ের কোনো সরকারি অনুমোদন না পাওয়া গেলেও তারা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণ মেলে।

অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী কামরুন নাহার, ভাই মনির হোসেন এবং প্রতিষ্ঠান স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড যৌথভাবে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করার স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন
  • ১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা