ক্ষেতের পাশে পড়ে আছে বস্তা বস্তা আলু
Published: 11th, April 2025 GMT
আলুর কেজি ৯ থেকে ১০ টাকা। কয়েক দিন ধরে এ দামে আলু বিক্রি হয়েছে। উঠছে না উৎপাদন খরচ। হিমাগারে জায়গা না পেয়ে কেজিপ্রতি কোথাও ৩ থেকে ৪ টাকা, কোথাওবা দ্বিগুণ লোকসান দিয়ে আলু বিক্রি করতে হচ্ছে কৃষককে। এর পরও মিলছে না ক্রেতা। বাধ্য হয়ে ক্ষেতের পাশে বা রাস্তার ধারে বস্তায় বস্তায় রেখে দিয়েছেন বিক্রির আশায়। এ চিত্র দেখা গেছে জয়পুরহাটের কালাই, পাঁচবিবি, ক্ষেতলাল ও গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলায়।
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় এবার শুরু থেকেই বাজারে আলুর দাম কম। এরই মধ্যে হিমাগারে সংরক্ষণের জন্য বুকিং দিতে পারেননি বেশির ভাগ কৃষক। বাড়িঘর, বারান্দাসহ ক্ষেতের আশপাশে আলু রেখে বিপদে পড়েছেন কৃষক। কয়েক দিনের গরমে আলু পচে যাচ্ছে। এ অবস্থায় দাম আরও কমে গেছে।
পুনট হাটে কথা হয় নুনুজ গ্রামের কৃষক রবিউল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানিয়েছেন, ফসল বিক্রির লাভের টাকায় সারা বছরের খরচ চলে। কিন্তু এবার লাভ দূরের কথা, বিক্রির জন্য ক্রেতাই পাওয়া যাচ্ছে না।
কৃষক রবিউল ইসলাম ঋণ নিয়ে এক একর জমিতে আলু চাষ করেছেন। রোপণ থেকে তোলা বাবদ প্রতি কেজিতে ২১-২২ টাকা খরচ হলেও বিক্রি করতে হচ্ছে ৮-৯ টাকা কেজি দরে। হিমাগারের বুকিং স্লিপ পাননি। বাধ্য হয়ে ৩০০ মণ আলু বাড়িতে রেখেছেন। তীব্র গরমে প্রায় ৫০ মণ আলু পচে গেছে। এখন দাম আরও কমে গেছে। এ অবস্থায় বিক্রি করলে অর্ধেকেরও বেশি লোকসান গুনতে হবে।
একই অভিযোগ করেছেন পাঁচবিবির চাটখুর গ্রামের কৃষক আকবর আলী, ক্ষেতলালের তারাকুল গ্রামের গোলাম রব্বানীসহ স্থানীয় কৃষকদের।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জয়পুরহাটে ৪৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আবাদ করে ফলন পাওয়া গেছে ৯ লাখ ৩১ হাজার ৫০০ টন আলু। উৎপাদিত আলুর ২২ থেকে ২৩ শতাংশ জয়পুরহাটের ১৯টি হিমাগারে সংরক্ষণের ব্যবস্থা আছে। এ সুযোগ বেশি পেয়েছেন ব্যবসায়ীরা। সময়মতো অগ্রিম বুকিং দিতে না পারায় কৃষক হিমাগারে আলু রাখতে পারেননি।
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলায় এবার লাল পাকড়ি, কার্ডিনাল, ডায়মন্ড, সাদা হল্যান্ড ও বার্মা জাতের আলু বেশি আবাদ হয়েছে। এ জন্য কৃষকদের বীজ আলু কিনতে হয়েছে বেশি দামে। এর সঙ্গে সার-কীটনাশক, সেচ ও দিনমজুর খরচ আছে। তাতে প্রতি কেজি আলু উৎপাদনে ১২ থেকে ১৪ টাকা ছাড়িয়ে গেছে বলে জানান অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম বসুনিয়া।
ধাপেরহাট বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি কার্ডিনাল ৯ টাকা ও লাল পাকড়ি আলু বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকায়। এই আলু বিক্রি করতে এসেছেন জুনিদপুর গ্রামের কৃষক বেলাল হোসেন। তিনি বলেন, আলুর উৎপাদন ভালো; কিন্তু চাহিদামতো দাম এবং ক্রেতার দেখা নেই। দামেই আলু বিক্রি করতে হচ্ছে।
পাইকার সহিদুল ইসলাম বলেন, হিমাগারে প্রতি কেজি আলু মজুত রাখতে ১১ টাকা খরচ পড়ে। নতুন বস্তা কিনতে হয়েছে। রয়েছে পরিবহন খরচ। এভাবে প্রতি কেজি আলুতে খরচ ২২ টাকা ছাড়িয়ে যাবে। বেশি দামে আলু কিনলে লোকসান গুনতে হবে।
কৃষি বিভাগ বলছে, সাদুল্লাপুরে ২ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৫৬ হাজার ২৫০ টন আলু। গত বছর উৎপাদন হয়েছিল ৩০ হাজার ৫০০ টন। সেই তুলনায় এবার উৎপাদন প্রায় দ্বিগুণ। উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত থাকবে প্রায় ৩৬ হাজার ২৫০ টন আলু। বাড়তি আলু সংরক্ষণে যথাযথ ব্যবস্থা না থাকায় সমস্যায় পড়েছেন কৃষক।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
চব্বিশ নিয়ে যেন একাত্তরের মতো ‘চেতনা ব্যবসা’ না হয়: ফুয়াদ
আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেছেন, ‘‘জুলাই, ২৪ নিয়ে যেন একাত্তরের মতো ‘চেতনা ব্যবসা’ না হয়। জুলাই থেকে শিখে আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ গড়বো। যারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না তাদের বাস্তবতা অওয়ামী লীগের মতো হবে।
শুক্রবার (১ আগস্ট) দুপুরে পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের ড. আতহার উদ্দীন মিলনায়তনে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে চিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে তিনি চিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন।
আমার বাংলাদেশ পার্টির পটুয়াখালী জেলা শাখার আহ্বায়ক প্রফেসর ড. এএসএম ইকবাল হোসাইনের সভাপতিত্বে চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন দলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. মেজর আব্দুল ওহাব মিনার ও সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী নাসীর। আলোচনা শেষে উপস্থিত সবাই জুলাই আন্দোলনের প্রদর্শিত চিত্র ঘুরে দেখেন।
ইমরান//