ঈশ্বরদীতে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত, স্টেশন মাস্টার বরখাস্ত
Published: 12th, April 2025 GMT
পাবনার ঈশ্বরদীতে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা পঞ্চগড়গামী আন্ত:নগর পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন ও মালবাহী ওয়াগন লাইনচ্যুতের ঘটনায় ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশন মাস্টার বাবুল রেজাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
শনিবার ভোরে ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনের দক্ষিণে রেল লাইনের ৫১ নম্বর পয়েন্টে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ঢাকা, রাজশাহী, দিনাজপুর, খুলনার সঙ্গে ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। তবে ৩ ঘণ্টা পর ট্রেনটি উদ্ধার করা হলে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে পরিবহণ কর্মকর্তা (ডিটিও) হালিমা খাতুন।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার সংবাদ পাওয়ার পরপরই পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় কার্যালয় থেকে কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তারা দ্রুত ইঞ্জিন ও মালবাহী ওয়াগন উদ্ধারে কাজ শুরু করেন।
ডিটিও হালিমা খাতুন জানান, রেললাইনের পয়েন্ট পরিবর্তন না করে ক্লিয়ারেন্স দেওয়ায় পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন ও মালবাহী ওয়াগন লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। প্রাথমিক তদন্তে স্টেশন মাস্টার বাবুল রেজার গাফিলতি থাকায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এদিকে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ায় ঢাকা, রাজশাহী, দিনাজপুর, খুলনার সঙ্গে ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। তবে ঈশ্বরদী লোকোমোভিভ রানিং সেড থেকে উদ্ধারকারী (রিলিফ) ট্রেন দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধার কাজ শুরু করে। তিন ঘণ্টা চেষ্টার পর ইঞ্জিন ও মালবাহী ওয়াগন ট্রেন উদ্ধার করা হলে সকাল ৭টা ৫মিনিট থেকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
তবে দুর্ঘটনার পর ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা রাজশাহীগামী আন্ত:নগর পদ্মা এক্সপ্রেস ও ঈশ্বরদী থেকে রাজশাহীগামী কমিউটার ট্রেন দুটি চলাচলে আধা ঘণ্টা করে বিলম্ব হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ট র ন ল ইনচ য ত বরখ স ত ন ল ইনচ য ত র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।