আজ চৈত্রসংক্রান্তি, বাংলা ১৪৩১ সনের শেষ দিন
Published: 13th, April 2025 GMT
শেষ হয়ে এল আরও একটি বছর। আজ রোববার শেষ হচ্ছে বঙ্গাব্দ ১৪৩১। আগামীকাল শুরু হবে বাংলা নতুন বছর ১৪৩২। মহাকালের গর্ভে বিলীন হতে চলল আরও একটি বছর। চৈত্র মাসের শেষ দিন তাই আজ চৈত্রসংক্রান্তি। একসময় এ অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি উৎসব হতো চৈত্রসংক্রান্তিতে।
বছরের শেষ দিনে অনেকেই বাড়িঘর বিশেষভাবে পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন করে থাকেন। আবর্জনা পুড়িয়ে বাড়ির আশপাশে ধোঁয়া দেন। হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকেই বাড়ির আঙিনায় বা ঘরের বারান্দায় মাঙ্গলিক আলপনা আঁকেন। সমাগত নতুন বছরটিতে বিগত বছরের সব অকল্যাণ, বিপদ–আপদ, রোগশোক থেকে মুক্তির আকাঙ্ক্ষা থাকে এসব আয়োজনে। শাস্ত্র ও লোকাচার অনুসারে এই দিনে স্নান, দান, ব্রত, উপবাস প্রভৃতি ক্রিয়াকর্মকে পুণ্যময় বলে মনে করা হয়।
খাবারেও বিশেষত্ব থাকে চৈত্রসংক্রান্তিতে। আগের দিনে তিক্ত স্বাদের শাক রান্না হতো এই দিনে। এসব শাক হাটবাজার থেকে কেনা নয়, বউঝিরা বাড়ির আশপাশের ঝোপজঙ্গল, ভিটেজমি থেকে সংগ্রহ করতেন। সাত বা এগারো রকম তিক্ত শাকের মিশেলে এই বিশেষ ধরনের রান্না স্বাদে যেমন বৈচিত্র্য আনে, তেমনি গ্রীষ্মের মৌসুমি রোগব্যাধির প্রতিরোধক্ষমতা সৃষ্টি করে। সে কারণে সংক্রান্তির এসব খাদ্য রোগব্যাধির প্রতিকার হিসেবেও কাজ করে। এখন আধুনিক জীবনযাত্রায় শহরে তো বটেই, গ্রামাঞ্চলেও ঔষধি গুণসম্পন্ন বহু গাছ বিপন্ন হয়ে পড়েছে। এসব রান্নার চলও উঠে গেছে।
এ ছাড়া চৈত্রসংক্রান্তিতে দেশের অনেক এলাকায় চড়ক ও নীলপূজার আয়োজন করা হতো। চড়কপূজা উপলক্ষে ঐতিহ্যবাহী লোক ও কারুশিল্প এবং মিষ্টান্নের পসরা সাজিয়ে গ্রামীণ মেলা বসত। এখনো কিছু কিছু এলাকায় চড়কপূজার চল রয়েছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় নানা উদ্যাপিত হবে চৈত্রসংক্রান্তি।
রাজধানীতে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা আয়োজনে বিদায় দিচ্ছে বাংলা বছর ১৪৩১ সনকে। চারুকলা অনুষদের আয়োজনে চৈত্রসংক্রান্তির অনুষ্ঠান শুরু হবে বকুলতলায় বেলা তিনটায়। চৈত্রসংক্রান্তি উপলক্ষে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে আজ বেলা দুইটায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত হবে ‘ব্যান্ড শো ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান’। সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে এ আয়োজন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ ত রস ক র ন ত
এছাড়াও পড়ুন:
২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট সময়কালে ফ্যাসিবাদী শক্তি নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারে, এসবির প্রতিবেদন
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে কর্মসূচি পালনকালে ফ্যাসিবাদী শক্তি অনলাইন-অফলাইনে প্রচারণা চালিয়ে সারা দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি)।
গতকাল সোমবার এসবির এক প্রতিবেদনে এমন আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনটি পুলিশের সব বিভাগকে পাঠিয়ে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছে এসবি। এসবির একটি সূত্র প্রথম আলোকে এই প্রতিবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ঐতিহাসিক জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সরকার, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ফ্যাসিবাদবিরোধী সামাজিক সংগঠনগুলো ১ জুলাই থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। এই ধারাবাহিকতায় ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত কর্মসূচি পালনের সময়কাল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে কর্মসূচি পালনকে কেন্দ্র করে বিতাড়িত ফ্যাসিবাদী শক্তি অনলাইন-অফলাইনে প্রচারণা চালিয়ে দেশব্যাপী নৈরাজ্য সৃষ্টি, ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির কর্মসূচিতে বাধা প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর অপচেষ্টা চালাতে পারে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাসহ সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তি ও জানমাল রক্ষায় পুলিশের বিভিন্ন বিভাগকে কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছে এসবি।
নির্দেশনাগুলো হলো ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা। ৮ আগস্ট পর্যন্ত নিয়মিত সন্দেহজনক ব্যক্তিসহ মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস ও অন্যান্য যানবাহন তল্লাশি করা। বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাট, রেলস্টেশন ও বিমানবন্দরের পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল অভিযান পরিচালনা করা। মোবাইল প্যাট্রোল জোরদার করা। গুজব রোধে সাইবার পেট্রোলিং কার্যক্রম অব্যাহত রাখাসহ গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা।
এ ছাড়া কোনো অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকলে তা তাৎক্ষণিকভাবে এসবিকে অবহিত করার কথাও বলা হয়েছে।