আলোচিত ছাত্রদল নেতা জাকির খানের কারামুক্তি, শোডাউনে নারায়ণগঞ্জে তীব্র যানজট
Published: 13th, April 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও আলোচিত নেতা জাকির খান কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। রোববার সকাল সাড়ে দশটায় নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। মুক্তির পর তার বিপুল সমর্থক মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকার নিয়ে নগরীতে শোডাউন করেন। এতে নগরীতে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। চরম ভোগান্তির শিকার হয় নগরবাসী।
জানা যায়, হত্যা মামলাসহ মোট ৩৩টি মামলার আসামি ছিলেন জাকির খান। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর ২০২২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর র্যাব-১১-এর একটি অভিযানে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর ধাপে ধাপে বিভিন্ন মামলায় জামিন পান তিনি। চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি সাব্বির আলম হত্যা মামলা থেকে তিনি খালাস পান।
রোববার জাকির খানের মুক্তির খবরে সকাল আটটা থেকেই দলে দলে নেতাকর্মী ও তার স্বজনরা জেলা কারাগারের গেটের সামনে জড়ো হয়। এ সময় তারা ব্যান্ড বাজিয়ে ও স্লোগান দিয়ে উল্লাস করেন। পরে সকাল সাড়ে ১০টায় জাকির খান কারাগার থেকে মুক্ত হলে তারা ফুল ও মালা দিয়ে তাকে বরণ করে নেন। এ সময় জাকির খান জাতীয় পতাকা, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও ফিলিস্তিনের পতাকা নেড়ে আনন্দ উল্লাস করেন। পরে গাড়িতে চড়ে তিনি পুরো শহর ঘুরে শোডাউন করেন। এসময় নগরীতে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের সুপার মোহাম্মদ ফোরকান ওয়াহিদ বলেন, ‘আজ সকালে জাকির খানকে রিলিজ করা হয়। অনেক বছর আগে তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা হয়েছিল। সেই মামলায় তিনি পাঁচ বছর সাজা ভোগ করেন। সাজার মেয়াদ শেষ হলে আজ তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।’
এ বিষয়ে জাকির খানের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রবিউল ইসলাম বলেন, ‘জাকির খানের বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা ছিল। এরমধ্যে ৩২ মামলায় তিনি খালাস পেয়েছেন। বাকি ১ মামলায় তিনি জামিনে রয়েছেন।’
সন্ত্রাসবিরোধী মামলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অনেক আগে তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা হয়েছিল। সেই মামলায় আজ তিনি সাজা শেষ করে মুক্তি পেয়েছেন।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ছ ত রদল ন ত শ ড উন য নজট
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?