মেলায় নাগরদোলায় চড়ে অন্তঃসত্ত্বা নারীকে গলা কেটে হত্যা, স্বামী আটক
Published: 15th, April 2025 GMT
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে মেলায় নাগরদোলায় চড়ে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে। গতকাল সোমবার রাত আটটার দিকে উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের হাফেজ মহিন উদ্দিনের ওরসের মেলায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত নারীর নাম লাকী বেগম (১৯)। তাঁর স্বামীর নাম মো. শাকিব। ওই ঘটনার পর নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল এলাকা থেকে অভিযুক্ত শাকিবকে আটক করেছে পুলিশ। শাকিব নোয়াখালী সদর উপজেলার মান্নান নগরের বেদে পল্লী এলাকার মঙ্গল হোসেনের ছেলে। লাকী বেগমগঞ্জের উপজেলার কালাপোল এলাকার বেদে পল্লীর মনছুর আলীর মেয়ে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাত আটটার দিকে নাগরদোলায় অনেক দর্শনার্থী ওঠেন। নাগরদোলা চলাকালে এক ব্যক্তি পাশের এক নারীর গলায় ছুরিকাঘাত করেন। এতে গলার বেশ কিছু অংশ কেটে যায়। স্থানীয় লোকজন আহত নারীকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যার নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে ওই নারীকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
নিহত লাকী বেগমের মা শেফালী বেগম বলেন, এক বছর আগে তাঁর মেয়ে ও শাকিবের বিয়ে হয়। ১৫ দিন আগে লাকী ও শাকিব তাঁদের বাড়িতে আসে। রোববার দুজনের মধ্যে ঝগড়া হয়েছিল। একপর্যায়ে লাকীকে মারধর করে শাকিব তাঁর মুঠোফোন ভেঙে ফেলে। গতকাল সন্ধ্যায় লাকীকে নিয়ে মেলায় যায় শাকিব। পরে তাঁর লাকীকে ছুরি মেরে হত্যার খবর পান।
শেফালী বেগম আরও বলেন, তাঁর মেয়ে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল। অভিযুক্ত শাকিবের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।
বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লিটন দেওয়ান বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, পারিবারিক কলহের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। অভিযুক্ত শাকিবকে আটক করা হয়েছে। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন গরদ ল
এছাড়াও পড়ুন:
অপহরণে বাঁধা দেওয়ায় যুবককে গুলি করে হত্যা, আটক ৩
অপহরণে বাঁধা দেওয়ায় নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে মো. শাকিল (৩১) নামের এক যুবককে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় নিহতের ছোটভাই শুভকেও (২৮) গুলি করলে লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে তিনি প্রাণে বেঁচে যান। পরে তাকে পিস্তলের বাট দিয়ে মাথায় আঘাত করে আহত করে। পুলিশ তাৎক্ষণিক হত্যাকাণ্ডের কোনো কারণ জানাতে পারেনি।
সোমবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার ছয়ানী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের গঙ্গাবর বাজারের ইসলামিয়া মার্কেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শাকিল একই গ্রামের মো. সোলাইমান খোকনের ছেলে এবং পেশায় একজন থাই গ্লাস মিস্ত্রি ছিলেন। ঈদুল আযহার আগে শাকিলের সৌদি আরব যাওয়ার কথা ছিল।
স্থানীয়রা জানায়, রাত ৮টার দিকে শাকিলসহ কয়েকজন ছয়ানীর গঙ্গাবর বাজারের ইসলামিয়া মার্কেটের একটি দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন। ওই সময় এলাকায় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে নয়জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী এসে লাবিব নামে এক যুবককে জোরপূর্বক তুলে নিতে চেষ্টা করে। তখন শাকিলসহ আরো কয়েকজন তাদের বাঁধা দিলে সন্ত্রাসীরা শাকিলকে গুলি করে। পিস্তলের গুলি শাকিলের বুকে ও মাথায় বিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
এ সময় তার ছোটভাই শুভ বড়ভাই শাকিলকে বাঁচাতে গেলে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে সন্ত্রাসীর দল কিন্তু গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে তাকে পিস্তলের বাট দিয়ে মাথায় আঘাত করে আহত করে। গুলি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন ধাওয়া করে তিন জনকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে আটক করে রাখে। তবে তাৎক্ষণিক আহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
তাৎক্ষণিক এলাকার লোকজন দুই ভাইকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক শাকিলকে মৃত ঘোষণা করে। নিহতের ছোট ভাই শুভ জানান, আটকসন্ত্রাসীদের সাথে স্থানীয় গঙ্গাবর গ্রামের যুবক লাবিবের সাথে পূর্ব বিরোধ ছিল। ওই বিরোধকে কেন্দ্র করে বেগমগঞ্জ উপজেলার আগলাইয়ার পুর ইউনিয়নের নয়জন সন্ত্রাসী সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে এসে লাবিবকে গঙ্গাবর বাজারে এসে জোরপূর্বক অপহরণ করে নিতে চেষ্টা করে। এসময় বাজারের লোকজনের সাথে শাকিল ও লাবিবকে রক্ষা করতে এগিয়ে যায়। ওই সময় সন্ত্রাসীরা শাকিলকে লক্ষ্য করে পিস্তল দিয়ে গুলি ছোড়ে। গুলি বুকে ও মাথায় বিদ্ধ হলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এ সময় তিনি তার ভাইকে বাঁচাতে গেলে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে অপহরণকারীরা। পরে স্থানীয় লোকজন তার ভাই ও শাকিলকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
নিহত শাকিল বিবাহিত ছিলেন। তার ৮মাস বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে সে ছিল দ্বিতীয়।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের রেজিস্ট্রার বই সূত্রে জানা যায় রাত ৮ টা ৩৫ মিনিটের দিকে শাকিলকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। তার বুকে ও মাথায় গুলির চিহ্ন রয়েছে।
ঘটনাস্থলে অবস্থানরতম বেগমগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হাবীবুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, স্খানীয় এলাকাবাসী অস্ত্রধারী তিনজনকে গণধোলাই দিয়ে আটক করে রেখেছে। তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। আমরা তাদের উদ্ধারে চেষ্টা করছি।