সাইকেল নিয়ে ৬৪ জেলা ভ্রমণে ১৮ বছরের তরুণ, বায়ুদূষণ রোধের বার্তা
Published: 16th, April 2025 GMT
কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য তাঁর আঠারো বছর বয়স কবিতায় লিখেছিলেন, ‘আঠারো বছর বয়স কী দুঃসহ/ স্পর্ধায় নেয় মাথা তোলবার ঝুঁকি,/ আঠারো বছর বয়সেই অহরহ/ বিরাট দুঃসাহসেরা দেয় যে উঁকি।’
কবির কবিতার মতোই ১৮ বছর বয়সী মো. মাজাহারুল ইসলামের মনে যেন ‘বিরাট দুঃসাহস’ উঁকি দেয়। এরপর তিনি বাইসাইকেলে ৬৪ জেলা ভ্রমণে বের হয়ে পড়েন। এই ভ্রমণের মধ্য দিয়ে তিনি একটি বার্তাও মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চান। সেটি হচ্ছে, ‘সাইক্লিং করি বায়ুদূষণ রোধ করি’। এই তরুণ মনে করেন, নাগরিকেরা মোটরসাইকেল ও ব্যক্তিগত মোটরযান ছেড়ে বাইসাইকেলে অভ্যস্ত হলে বায়ুদূষণ অনেকাংশে কমে আসবে। সড়ক দুর্ঘটনাও কম হবে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মাগুরা জেলা পরিষদের প্রধান ফটকে দেখা হল তরুণ এই সাইক্লিস্টের সঙ্গে। হেলমেট ও সানগ্লাস পরা তরুণের বাইসাইকেলের সামনে নিজের নামের পাশাপাশি লেখা ‘সাইক্লিং করি বায়ুদূষণ রোধ করি’।
তিনি জানালেন, কাগজে–কলমে নাম মো.
বাইসাইকেল চালিয়ে রাহাত ইসলামের দূরদূরান্তে ছুটে চলার ‘নেশা’ তৈরি হয় বছরখানেক আগে। তখন ‘লং রাইডারস কমিউনিটি’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপে যুক্ত হন তিনি। এই গ্রুপের সদস্যরা বাইসাইকেলে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যান। গত বছর প্রথমে সিলেট বিভাগের প্রতিটি উপজেলায় বাইসাইকেলে ভ্রমণ করেন রাহাত। এরপর লক্ষ্য নির্ধারণ করেন টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া যাবেন। গত ২১ ফেব্রুয়ারি বায়ুদূষণ রোধের বার্তা নিয়ে তেঁতুলিয়া থেকে যাত্রা শুরু করেন রাহাত। ৮ দিনে তিনি টেকনাফে পৌঁছান।
নাটোরের রাজবাড়ির সামনে তরুণ সাইক্লিস্ট রাহাত ইসলামউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বছর বয়স ইসল ম ভ রমণ
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ, চালু হলো ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার
সংস্কার শেষে ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার চালু হয়েছে। আজ শনিবার সকালে বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ করার মধ্য দিয়ে এ কারার যাত্রা শুরু হয়। এতে চট্টগ্রাম বিভাগের আটটি কারাগারের সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ও ফেনী জজ আদালতে বিচারাধীন মামলার আসামিদের রাখা হবে।
কারা সূত্র জানায়, দেশের পুরোনো চারটি কারাগারের মধ্যে ফেনী-২ কারাগার একটি। শত বছরের পুরোনো এ কারাগার ভবন ছিল জরাজীর্ণ। এ কারণে ২০১৯ সালে ১২ জানুয়ারি এ কারাগার থেকে বন্দীদের ফেনীর শহরতলির রানীরহাট এলাকার নতুন কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। এরপর থেকে কারাগারটি অনেকটা ‘পরিত্যক্ত’ অবস্থায় ছিল।
নতুন করে চালু হওয়া কারাগারটির অবস্থান ফেনী শহরের মাস্টারপাড়ায়। এটি ১৯১৫ সালে সাবজেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর ১৯৯৮ সালে জেলা এটিকে কারাগারে উন্নীত হয়। এ কারাগারের বর্তমান ধারণক্ষমতা ১৭২ জন। এর মধ্যে ১৭০ জন পুরুষ ও ২ জন নারী। কারাগার চালু করার জন্য গতকাল কুমিল্লা জেলা কারাগার থেকে ২৪ জন ও চট্টগ্রাম থেকে চারজন বন্দীকে আনা হয়েছিল। তাঁরা সবাই সশ্রম সাজাপ্রাপ্ত। এ কারাগারে তাঁরা রান্নার দায়িত্বে থাকবেন।
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, ধাপে ধাপে সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন বন্দীদের ফেনীর দ্বিতীয় কারাগারে আনা হবে। আপাতত এতে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২৬ জন, কুমিল্লা থেকে ৭৪ জন, নোয়াখালী থেকে ১৫ জন, লক্ষ্মীপুর থেকে ৪ জন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ৩৩ জন বন্দী এখানে স্থানান্তর করা হবে। এতে সেল, রান্নাঘর, কিশোর ওয়ার্ড, মসজিদসহ প্রয়োজনীয় সুবিধা রয়েছে। এ কারাগার নিয়ে বর্তমানে দেশে কারার সংখ্যা ৭১।
জানতে চাইলে ফেনী-২–এর জেল সুপার মো. দিদারুল আলম বলেন, ‘রাষ্ট্র চায়, কারাগার শুধু শাস্তির জায়গা নয়, সংশোধনের কেন্দ্র হোক। এরই অংশ হিসেবে সংস্কার শেষে ফেনী কারাগার-২ চালু হয়েছে।’
কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার ফেরদৌস মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ কারাগারে স্থানান্তরিত বন্দীদের সব সুযোগ-সুবিধা ইতিমধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে। চিকিৎসক ও প্রশিক্ষিত নার্সও যোগদান করেছেন। বেশির ভাগ পদে কর্মচারীরাও কাজ শুরু করেছেন।’