বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দিক থেকে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট সময় না বলার বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন।

আজ বুধবার বিকেল চারটার দিকে এ নিয়ে নিজের ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দিয়েছেন তিনি। পোস্টে এনসিপি নেত্রী বলেন, আজ বিএনপি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেছে। অন্তর্বর্তী সরকার বরাবরই বিএনপিকে অধিক গুরুত্ব দেয়। যদিও সেটা বৈষম্য, কিন্তু ভবিষ্যৎ রাজনীতির সুস্থ পরিবেশের জন্য আমরা সেটা নিয়ে আপত্তি করছি না। তবে একটি দলকে সন্তুষ্ট করার জন্য যদি প্রধান উপদেষ্টা (নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট) সময় বলতেন, তাহলে এর বাইরের সব রাজনৈতিক দল ও পক্ষ অসন্তুষ্ট হতো। বিশেষত তখন যখন জাতীয় ঐকমত্য কমিশন নিরলসভাবে কাজ করছে।

জুলাই সনদের ভিত্তিতে নির্বাচনের সময় ঠিক হবে উল্লেখ করে সামান্তা শারমিন আরও লিখেছেন, তারপর অন্তর্বর্তী সরকারকে দিতে হবে নির্বাচনপ্রক্রিয়ার রোডম্যাপ। বাংলাদেশের জনগণ জানবে কোন কোন বিষয়ে সব পক্ষ একমত হচ্ছে। যদি কোনো রাজনৈতিক দল প্রয়োজনীয় সংস্কারে একমত না হয়, তার ভিত্তিতে তার জনসমর্থন (ভোট) কমবে। তবে একমত হওয়া সংস্কারের পর সবাই নির্বাচনে সোৎসাহে অংশ নেবে। বিশেষত কদিন আগে বলে ওঠা ‘এই সরকারের কোনো সংস্কার মানব না’ নেতাকে নিয়ে করা বৈঠকে এটুকু সাবধানতা দরকার বৈকি।

আজ বুধবার দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠক করে বিএনপির প্রতিনিধিদল। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য জমিরউদ্দীন সরকার, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও সালাহ উদ্দিন আহমদ।

বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, প্রধান উপদেষ্টা কোনো সুনির্দিষ্ট ডেডলাইন তাদের দেননি। তিনি ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলেছেন। এতে তারা একেবারেই সন্তুষ্ট নন। তারা পরিষ্কার করে বলে দিয়েছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন না হলে দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে।

উল্লেখ্য, গত ১৬ মার্চ এক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছিলেন, ওদের (অন্তর্বর্তী সরকার) হাতের, ওদের কলমের কোনো সংস্কার তারা সহজে মানবেন না। সংস্কার করলে, তারা সংশোধন করবেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ এনস প জ ত য় ন গর ক প র ট র জন ত সরক র ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশকে ‘অশ্বডিম্ব’ বললেন সিপিবি সভাপতি

আট মাস আলোচনার পর জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন যে সুপারিশ দিয়েছে, তাকে ‘অশ্বডিম্ব’ বলেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি সাজ্জাদ জহির চন্দন।

‘জগাখিচুড়ি মার্কা’ কমিশনের সুপারিশের পর পরিস্থিতি জটিলতার দিকে মোড় নেওয়ার দিকটি নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘আট মাস আলোচনার পর একটা অশ্বডিম্বের মতো একটা অবস্থা।’

আজ শনিবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে এক সংলাপে ‘পলিটিকস ল্যাব: পাবলিক ডায়ালগ’ শীর্ষক সংলাপে এ কথা বলেন সাজ্জাদ জহির। এ সংলাপের আয়োজন করে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস)।

তরুণ রাজনীতিকদের মধ্যে মতাদর্শভিত্তিক সংলাপ ও গণতান্ত্রিক চর্চা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে জার্মান ফাউন্ডেশন ফ্রেডরিখ এবার্ট স্টিফটুং (এফইএস)-এর সহযোগিতায় ‘পলিটিকস ল্যাব’ শিরোনামে চারটি ধারাবাহিক কর্মশালা করেছে সিজিএস। তার সমাপনী অনুষ্ঠান হিসেবে আজকের সংলাপ হয়।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত মঙ্গলবার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে হস্তান্তরের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে তা নিয়ে মতভেদ দেখা দেয়। নানা প্রশ্নে বিভিন্ন দলের আপত্তির বিষয়গুলো সনদ বাস্তবায়ন আদেশের খসড়ার তফসিলে না থাকা নিয়ে যেমন সমালোচনা হচ্ছে, আবার গণভোটের সময় নিয়েও দলগুলোর মধ্যে বিরোধ দেখা দিয়েছে।

এই সংকট তৈরির জন্য ঐকমত্য কমিশনকে দায়ী করে সাজ্জাদ জহির বলেন, ‘এটার সমাধানটা কী? এই গণভোটের সমাধানটা কী? জুলাই সনদ কীভাবে বাস্তবায়ন হবে? সে বিষয়ে কোনো দিকনির্দেশনা কিন্তু নেই। মানে একধরনের হাওয়ার ওপরে সবকিছু চলছে। এখানে ৮৪টা পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ২০টাতে একমত হয়েছে, বাকিগুলোতে একমত হয়নি। তাহলে কোন বিষয়ে ভোটটা হবে।’

জুলাই সনদে স্বাক্ষর না করা সিপিবি সভাপতি বলেন, ‘আমরা দেখলাম জুলাই সনদে স্বাক্ষর হলো। এরপর সর্বশেষ সংস্কার কমিশন তারা আবার আরেকটা খেলা খেলল এখানে। দেখেন কী অবস্থা! তারা বলছে যে নোট অব ডিসেন্ট কিছুই থাকবে না। ভিন্ন মত থাকবে না। আমার তো ভিন্নমত আছে, কেন থাকবে না?’

গণভোট নিয়ে তিনি বলেন, ‘সংবিধানে কোথাও গণভোটের কোনো বিধান নেই। একটা আছে যেটা ১৪২ ধারা। যেটা নির্বাচিত সংসদে যদি কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে মতভেদ তীব্রতর হয়, তাহলে সেই বিষয়ের ওপরে নির্বাচিত সংসদ জনগণের আহ্বান করতে পারে। কিন্তু এই মুহূর্তে গণভোট সংবিধানসম্মত নয়।’

সিপিবির সভাপতি বলেন, এসব জটিলতা এড়াতে প্রয়োজনীয় কিছু সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা নিতে গত বছরের অক্টোবর মাসে তাঁরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছিলেন। তবে ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে’ সরকার সেটি শোনেনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দেশের মানুষ ১৭ বছর ধরে নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছে: সাইফুল হক
  • জুলাই সনদে সই না করা অংশের দায় নেব না: মির্জা ফখরুল
  • ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশকে ‘অশ্বডিম্ব’ বললেন সিপিবি সভাপতি