হাতীবান্ধা সীমান্তে গুলিতে আহত বাংলাদেশি তরুণকে ধরে নিয়ে গেল বিএসএফ
Published: 16th, April 2025 GMT
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সিংগীমারী ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে হাসিবুল ইসলাম (২২) নামের এক বাংলাদেশি তরুণ গুরুতর আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গুলিবিদ্ধ তরুণকে বিএসএফ সদস্যরা ভারতে ধরে নিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
আজ বুধবার দুপুরে উপজেলার মধ্য সিংগীমারী সীমান্তের ৮৯৪ নম্বর মেইন পিলারের সাব ৬ এস পিলার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হাসিবুল ওই ইউনিয়নের সিংগীমারী গ্রামের জাহিদুল ইসলামের ছেলে।
আহত তরুণের পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, মধ্য সিংগীমারী সীমান্তের ৮৯৪ নম্বর মেইন পিলারের সাব ৬ এস পিলার এলাকা হয়ে ভারতের সীমান্ত লাগোয়া জমিতে হাসিবুল ইসলামসহ কয়েকজন বাংলাদেশি ঘাস কাটতে যান। এ সময় বিএসএফের ফুলবাড়ী ক্যাম্পের টহল দলের সদস্যরা তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এতে হাসিবুল গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটে পড়েন। বিএসএফ সদস্যরা তাঁকে আহত অবস্থায় ধরে নিয়ে যান।
বিজিবি সূত্র জানায়, বাংলাদেশিকে গুলি করার ঘটনায় বিজিবির আহ্বানে বিকেল পাঁচটায় ওই সীমান্তে পতাকা বৈঠকে অংশ নেয় বিএসএফ। বৈঠকে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি বাংলাদেশিকে ফেরত চাওয়া হয়েছে। তবে ৬১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের কমান্ডারের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
সিংগীমারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গ্রাম পুলিশ ও ইউপি সদস্যকে পাঠানো হয়েছে। যত দূর শুনেছেন, বিএসএফের গুলিতে আহত হাসিবুলকে ভারতের কোচবিহারের একটি হাসপাতালে ভর্তি করেছে বিএসএফ।
হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহামুদুন-নবী সাংবাদিকদের বলেন, গুলিবিদ্ধ বাংলাদেশিকে ভারতের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কড়া নজরদারি সুন্দরবন সীমান্তে
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন জলসীমানা প্রায় দেড়শো কিলোমিটার। ভারতীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এ সীমানা দিয়ে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বাড়তি তৎপরতা নেওয়া হচ্ছে। খবর আনন্দবাজারের।
খবরে বলা হয়েছে, নদী ও বনভূমি এলাকায় সীমান্ত বরাবর বিএসএফ মোতায়েন আছে। ভাসমান বর্ডার আউটপোস্ট, বঙ্গোপসাগর অংশে কোস্ট গার্ডের নজরদারি চলছে। ড্রোন, সেন্সর ও ক্যামেরা, কিছু জায়গায় নাইট ভিশন ক্যামেরা ব্যবহার করা হচ্ছে। পাশাপাশি, পুলিশের তরফেও উপকূল এলাকায় দিনরাত নজরদারি চলছে।
উপকূল থানাগুলোর পক্ষ থেকে নদীপথে নিয়মিত টহল দেওয়া হচ্ছে। রাতেও উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে নজর রাখা হচ্ছে। নদীপথে কোনো জলযান দেখলেই তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। মৎস্যজীবীদের পরিচয়পত্রও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নদী বা সমুদ্রে এখন মাছ ধরার উপরে নিষেধাজ্ঞা চলছে। মৎস্যজীবীদের জলযান চলাচল করার কথা নয়। তাই জলযান দেখলেই তল্লাশি চলছে। বাংলাদেশি জাহাজগুলোতেও পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে।
সুন্দরবন পুলিশ জেলার সুপার কোটেশ্বর রাও নালাভাট বলেন, আগেও উপকূলবর্তী এলাকায় পুলিশের নজরদারি চলত। এখন বাড়তি জোর দেওয়া হচ্ছে। দু’বেলা নদী ও স্থলপথে পুলিশের টহল বৃদ্ধি পেয়েছে। নাকা চেকিং হচ্ছে। চলছে তল্লাশিও।
উত্তর ২৪ পরগনাতেও উপকূল এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তা বেড়েছে জল ও স্থলসীমান্তে। জল, ভূমি ও আকাশে অত্যাধুনিক ইজ়রাইল রাডারের মাধ্যমে নজরদারি চালাচ্ছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী।
ইতোমধ্যে ভারতীয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতর জানিয়েছে, বাংলাদেশের আকাশ ব্যবহার করে ভারতকে আক্রমণ করতে পারে সশস্ত্র সংগঠনগুলো। ফলে সুরক্ষা বাড়াতে বিএসএফের তৎপরতা শুরু হয়েছে। বসিরহাট মহকুমার স্বরূপনগর থেকে হিঙ্গলগঞ্জের হেমনগর কোস্টাল থানা পর্যন্ত ৯৪ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। তার মধ্যে ৫০ কিলোমিটার জলসীমান্ত। স্থলসীমান্ত ৪৪ কিলোমিটার। সীমান্ত সুরক্ষায় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।