ভিএফএস সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
Published: 16th, April 2025 GMT
জাপানে উচ্চশিক্ষায় গমনেচ্ছুদের ভিএফএস অ্যাপয়েন্টমেন্ট সিন্ডিকেটের মাধ্যমে হয়রানির স্বীকার শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছেন। আজ বুধবার দুপুর ১২টার দেক গুলশানের ডেল্টা টাওয়ারের সামনে ভুক্তভোগী শত শত শিক্ষার্থী মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন।
কর্মসূচিতে তারা ভিএফএস কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে নানা ধরনের প্ল্যাকার্ড বহন করেন।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ২০ ফেব্রুয়ারি জাপান সরকারের অফার লেটার পেয়ে অনেক শিক্ষার্থী দেশটির বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়েছেন। কিন্তু ভিএফএস সিন্ডিকেটের মাধ্যমে হয়রানির স্বীকার হয়ে আট শতাধিক শিক্ষার্থী এখনও ভিসার জন্য আবেদন জমা দিতে পারেননি। ভিএফএস অ্যাপয়েন্টমেন্ট জটিলতায় আমাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।
শিক্ষার্থীরা বলেন, জাপানে ইতিমধ্যে অনেকের ক্লাস শুরু হয়ে গেছে। নেপাল-শ্রীলংকাসহ অন্যান্য দেশের ছাত্ররা ক্লাসে জয়েন করে ফেলেছে। অথচ, আমরা এখনো ভিসার জন্য আবেদনেই করতে পারছি না।
ভুক্তভুগীরা শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা এক বছর ধরে জাপানি ভাষা শিখে জাপান সরকার কর্তৃক ইলিজিবল হয়ে সবাই টিউশন ফি পাঠিয়ে দিয়েছি। সেখানে যেতে না পারলে আমাদের স্বপ্নভঙ্গ হয়ে যাবে। আত্মহত্যা করা ছাড়া আমাদের আর গতি থাকবে না। আমরা জানতে চাই, সবকিছু ঠিক থাকার পরও আমরা কেন জাপান যেতে পারছি না?
প্রসঙ্গত, গত ৩ নভেম্বর থেকে জাপান দূতাবাস ভিএফএস গ্রোবাল নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে ডকুমেন্ট জমা নেওয়ার দায়িত্ব দিয়েছে। কিন্তু ভিএফএসের ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে, আগামী ২ মাসের কোনো স্লট খালি নেই।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ছয়টি দাবি জানান। দাবিগুলো হলো-
১.
২. ক্লাস শুরুর আগেই ভিসা ইস্যু করতে হবে
৩. অ্যাপ্লিকেশন জমা দেওয়ার ১ সপ্তাহের মধ্যেই ভিসা দিতে হবে।
৪. ওয়েবসাইটের স্লট সব সময় ওপেন রাখতে হবে।
৫. অ্যাপয়েন্টমেন্ট সরাসরি দূতাবাস কর্তৃক দিতে হবে।
৬. ভিএফএস’র হয়রানি ও জালিয়াতি বন্ধ করতে হবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) দ্রুত তফসিল ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (৩০ জুলাই) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ‘হয় মোদের চাকসু দে, নইলে গদি ছাইড়া দে’, ‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’, ‘চাকসু মোদের অধিকার, রুখে দেওয়ার সাধ্য কার’—এমন স্লোগান দেন।
আরো পড়ুন:
আনাতোলিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জে বিশ্বে তৃতীয় ইউআইইউ
জবির প্রভাবশালী আওয়ামীপন্থি ‘ক্যাডার’ শিক্ষকরা যেখানে আছেন
আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন রিয়াদ বলেন, “জুলাই মাসে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ হওয়ার ঘটনাগুলো আমাদের জানা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষার্থীও সে সময় শহীদ হয়েছিলেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়েই সবার আগে চাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা ছিল, কিন্তু এখনও কোনো অগ্রগতি নেই। অথচ ডাকসু, রাকসু, জাকসুর তফসিল ঘোষণা হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা অনুমোদনের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। এরপর আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। “যদি তা না হয়, তাহলে আমরা দুর্বার ছাত্রআন্দোলনের দিকে যাব,” বলেন তিনি।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, “দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এরইমধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। আমরা এতদিন রোডম্যাপ চেয়েছিলাম, এখন আর রোডম্যাপ নয়—তফসিল চাই।”
তিনি আরো বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সমস্যার একমাত্র সমাধান হচ্ছে সক্রিয় ছাত্র সংসদ। তাই আগামী আগস্টের প্রথম সপ্তাহে তফসিল এবং সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন চাই।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা চূড়ান্ত হলে নির্বাচন কমিশনার তফসিল ঘোষণা করবেন।”
চাকসু গঠনের ধারণা মূলত এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুর আদলে। বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রসংসদ গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়।
১৯৭০ সালে চাকসুর প্রথম কেবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ নির্বাচন হয় ১৯৯০ সালের ৮ মে। এই নির্বাচনে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল বিজয়ী হয়েছিল। এরপর দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে আর কোনো চাকসু নির্বাচন হয়নি।
২০২৫ সালে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হওয়ায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাকসুর মতো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও চাকসু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছেন।
ঢাকা/মিজানুর রহমান/ইভা