বাংলাদেশ-পাকিস্তান পররাষ্ট্র সচিবদের বৈঠক আজ
Published: 17th, April 2025 GMT
দেড় দশক পর আজ বৃহস্পতিবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক। এতে অবিভক্ত পাকিস্তানের সম্পদ থেকে ন্যায্য হিস্যা হিসেবে সাড়ে চার বিলিয়ন ডলারের দাবি আনুষ্ঠানিকভাবে উত্থাপন করবে বাংলাদেশ।
তহবিল, প্রভিডেন্ট ফান্ড, সঞ্চয়পত্রসহ বিভিন্ন খাতের হিস্যা হিসেবে এই অর্থ বাংলাদেশ পাবে। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বৈঠকে পররাষ্ট্র সচিব মো.
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে দু’দেশের সম্পর্কের নানা বিষয়সহ ঐতিহাসিক অনিষ্পন্ন বিষয়গুলো আলোচনায় আসবে।
সর্বশেষ পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক হয়েছিল ২০১০ সালে।
বৈঠক উপলক্ষে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ গতকাল বুধবার ঢাকায় আসেন। আজ সকালে তিনি বৈঠকে যোগ দেবেন। মধ্যাহ্নভোজের পর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং এর পর প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন তিনি। গতকাল আমনা বালুচ ঢাকায় পাকিস্তান দূতাবাসের কর্মীদের সঙ্গে এবং বাংলাদেশে অবস্থানরত দেশটির ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে কথা বলেছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, অর্থ মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশ পাকিস্তানের কাছ থেকে ১৯৭১ পূর্ববর্তী সময়ের হিস্যা অনুসারে ৪ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলার পাবে। এর একটি বড় অংশ ১৯৭০ সালে ঘূর্ণিঝড়ের পর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জন্য পাঠানো হয়েছিল। জানা গেছে, ২০ কোটি ডলারের বৈদেশিক সহায়তা এসেছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের ঢাকা শাখা থেকে এই অর্থ লাহোর শাখায় সরিয়ে নেওয়া হয়। এ ছাড়া পাকিস্তান ছেড়ে বাংলাদেশে চলে আসা সরকারি কর্মচারীদের প্রভিডেন্ট ফান্ড ও সঞ্চয়পত্রের অর্থ ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি।
পরিকল্পনা কমিশনের মতে, সরকারি কর্মচারীদের প্রভিডেন্ট ফান্ডে জমা ৯০ লাখ টাকা আটকে রেখেছিল পাকিস্তান সরকার। যুদ্ধকালে রূপালী ব্যাংকের করাচি শাখায় রাখা ১ কোটি ৫৭ লাখ টাকাও ফেরত আসেনি। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলতি অর্থের অর্ধেক ৪৩৫ কোটি রুপির দাবিদার বাংলাদেশ। পাকিস্তানের ব্যাংকিং বিভাগ থেকেই বাংলাদেশ পাবে প্রায় ৬০ কোটি রুপি।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনা যে অপরাধ করেছে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীও তা করে নাই: আসিফ নজরুল
শেখ হাসিনা ও তার দোসররা যে অপরাধ বাংলাদেশে করেছে, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীও মনে হয় এত জঘন্য অপরাধ করে নাই বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। জুলাই গণহত্যার বিচার আলোচনা ও তথ্যচিত্র প্রদর্শনের এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
তিনি বলেন, “মরদেহ পুড়িয়ে ফেলা, আহতদের গুলি করে মেরে ফেলা, নিরস্ত্র মানুষকে গুলি করে মেরে ফেলা... আপনারা বলতে পারেন, ২৫ মার্চ কালরাতে হয়েছে। অবশ্যই হয়েছে, ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু ওটা তো অন্য দেশের বাহিনী।”
“১৯৭১ সালে মরদেহ পুড়িয়ে ফেলেছে, এরকম কোনো ফুটেজ আমি দেখি নাই। ১৯৭১ সালে একজন গুলি খেয়েছে, তাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে তার বন্ধু, সে অবস্থায় তাকে গুলি করেছে। কোনো মুক্তিযোদ্ধার এমন কোনো বর্ণনা আমি পড়ি নাই বা ফুটেজ দেখি নাই। অন্যরকম নৃশংসতা থাকতে পারে, কিন্তু এরকম নৃশংসতা করে নাই” বলে দাবি করেন তিনি।
এত বড় গণহত্যা চালিয়েও আওয়ামী লীগের বিন্দুমাত্র অনুশোচনা নেই মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, “একটা দল ১৫ বছর শুধু মিথ্যা আর নির্যাতন করে চালিয়েছে। এখনো তাদের মিথ্যাচার বিন্দুমাত্র থামেনি। এখনো নির্যাতনের ইচ্ছা বিন্দুমাত্র থামেনি। আপনারা যখন মহাখুনি শেখ হাসিনার অডিওগুলো শুনতে পান, দেখবেন এখনো তার নির্যাতন করার ইচ্ছা আছে। এরা কি বিচারে কোনো রকম গাফিলতি থাকে সেটা উন্মোচন করার চেষ্টা করবে না? আমার তো অনেক দায়িত্ব। এই বিচারকে সমালোচনার ঊর্ধ্বে রাখতে হবে।”
তিনি আরো বলেন, “এই বিচারে আপনাদের (শহীদ পরিবার) হতাশ হওয়ার কিছু নেই। আমি বিশ্বাস করি, যেই প্রক্রিয়ায় বিচার এগোচ্ছে, ইনশাআল্লাহ আমাদের সরকারের আমলেই আপনারা কাঙ্ক্ষিত মামলাগুলোর রায় পাবেন। এমনভাবে বিচারের অকাট্য সাক্ষ্য-প্রমাণ আমরা রেখে যাব, কোনো সরকার চাইলেও বিচার থেকে সরতে পারবে না।”
আইন উপদেষ্টা বলেন, “আর আমি বিশ্বাস করি না, ভবিষ্যতে বিএনপি-জামায়াত যারাই ক্ষমতায় আসুক, তারা বিচারে শৈথিল্য বা গাফেলতি দেখাবে। তারা সবাই নির্যাতিত মানুষ।”
পরে হতাহতদের স্মরণে দোয়া ও মোনাজাত করেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিব (বাজেট ও উন্নয়ন) রুহুল আমীন। এরপর জুলাই আন্দোলন নিয়ে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা