সয়াবিন তেল ও শিল্পে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জোর দাবি জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। আজ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জোটের নেতারা বলেন, সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৪ টাকা আর নতুন শিল্পে গ্যাসের দাম ইউনিটে ১০ টাকা বৃদ্ধি অযৌক্তিক ও গণবিরোধী।

বিবৃতিদাতারা হলেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাসদ (মার্ক্সবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা ও সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আবদুল আলী।

বিবৃতিতে নেতারা বলেন, গ্যাসের দাম বাড়ানোয় নতুন শিল্প স্থাপনে ব্যয় বাড়ার কারণে বিনিয়োগে আগ্রহ হারাবে। এতে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি বিঘ্নিত হবে। উভয় ক্ষেত্রেই মূল্যবৃদ্ধির আঘাত জনজীবনকে অসহনীয় করে তুলবে। এতে আগের মতোই লাভবান হবে লুটেরা সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা।

নেতারা আরও বলেন, তেল ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি চলমান জনজীবনের সংকটকে আরও ঘনীভূত করবে। এর আগেও সিন্ডিকেটের কারসাজিতে বোতলজাত সয়াবিন তেলের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হয়েছিল, তখন সরকার সিন্ডিকেট-ফড়িয়াদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে ৮ টাকা দাম বাড়িয়েছিল।

বিবৃতিতে বলা হয়, এবারও স্বৈরাচারী কায়দায় জনস্বার্থের বিপরীতে সয়াবিন তেলের মূল্যবৃদ্ধি করে সিন্ডিকেট-মাফিয়াদের স্বার্থের পক্ষে অবস্থান নিয়ে সরকার তার গণবিরোধী চরিত্র পরিষ্কার করে তুলছে।

অন্যদিকে গ্যাসের দাম বাড়ার কারণে ক্ষুদ্র ও নতুন শিল্পকে সংকটে ফেলবে। এতে উৎপাদন খরচ বাড়বে, যা স্বাভাবিকভাবেই সরকার জনগণের ঘাড়ে চাপাবে। এতে জনজীবনে সার্বিক সংকট ও বেকারত্ব বাড়বে বলে মনে করেন বাম জোটের নেতারা।

আরও পড়ুনসয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৪ টাকা বেড়ে ১৮৯ টাকা১৫ এপ্রিল ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ফুটবলার প্রতিমা এগিয়ে যাচ্ছেন, পাশে আছে কিশোর আলোসহ অনেকে

একটি পরিবারের ওপর নেমে আসা অপ্রত্যাশিত চাপ আর হতাশাকে দূর করেছে একটি সংবাদ। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড় প্রতিমা মুন্ডার পড়াশোনা ও খেলাধুলা থমকে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল মাত্র ৪৭ হাজার টাকার জন্য। প্রথম আলোয় প্রতিবেদন প্রকাশের পর মিলেছে সহযোগিতা, পরিশোধ হয়ে গেছে বিকেএসপির বকেয়া।

এতে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন প্রতিমার মা সুনিতা মুন্ডা। তাঁদের ওপর থেকে নেমে গেছে বড় ধরনের আর্থিক চাপ।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেএসপি প্রতিমার অভিভাবককে পাঠানো চিঠিতে জানিয়েছিল, তাঁদের মেয়ের বকেয়া বেতন ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা। সেই চিঠিতেই সতর্ক করে বলা হয়, ছয় মাসের বেশি বেতন বকেয়া থাকলে চূড়ান্ত সতর্কীকরণ, আর ১২ মাসের বেশি বকেয়া থাকলে বহিষ্কারের বিধান আছে। অর্থাভাবে যখন অনিশ্চিত হয়ে উঠেছিল প্রতিমার ভবিষ্যৎ, ঠিক সেই সময় ১১ অক্টোবর প্রথম আলোয় প্রকাশিত হয় তাঁদের পরিবারের সংগ্রামের গল্প।

আরও পড়ুনবকেয়া বেতন চেয়ে বিকেএসপির চিঠি, ফুটবলার প্রতিমার পড়াশোনা বন্ধের পথে ১১ অক্টোবর ২০২৫

প্রতিবেদনটি পাঠকের হৃদয়ে নাড়া দেয়। কিশোর আলোর পক্ষ থেকে প্রতিমার বকেয়া পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই দিনই বিকেলে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে গিয়ে প্রথম আলোর সাতক্ষীরার নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি প্রতিমা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে নেওয়া হয় এই উদ্যোগ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ব্যবসায়ী সহায়তা করেন আরও ১০ হাজার টাকা। তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপা রানী সরকার দেন পাঁচ হাজার টাকা ও একটি ফুটবল।

সহায়তা পেয়ে স্বস্তি ফিরেছে পরিবারে। মুঠোফোনে প্রতিমা বলেন, ‘এখন আর কোনো অনিশ্চয়তা নেই। বিকেএসপির পাওনা ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা পরিশোধ করে দিয়েছি। আমি ভালো আছি, মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা আর অনুশীলন করছি।’

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার প্রতিমা মুন্ডা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে কিশোর আলোর পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়

সম্পর্কিত নিবন্ধ