রাজশাহীতে মাছ লুট, চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা, বাদীর বাড়িতে হামলা
Published: 18th, April 2025 GMT
পুকুরের মাছ লুট ও চাঁদা দাবির অভিযোগে মামলা দায়েরের এক দিন পরই বাদীর বাড়িতে হামলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে রাজশাহীর বাগমারার বুজরুক কোলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে ১৫-১৬ জনের একটি দল বুজরুক কোলা গ্রামের আবদুল জব্বার শাহের বাড়িতে লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। বাড়ির জানালা–দরজা ভাঙচুর করে। পরিবারের সদস্যদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা সটকে পড়ে।
আবদুল জব্বার শাহ অভিযোগ করেন, বুজরুক কোলা গ্রামের বাসিন্দা যুবদলের সাবেক নেতা শহিদুজ্জামান ওরফে মুকুলের নেতৃত্বে তাঁর অনুসারীরা ৪ এপ্রিল মব তৈরি করে তাঁর ও এলাকার আরও কয়েক ব্যক্তির মোট সাতটি পুকুরের মাছ লুট করেন। এই বিষয়ে তিনি থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ আদালতে মামলার পরামর্শ দেয়। তিনি গত বুধবার আদালতে শহিদুজ্জামানসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি ও মাছ লুটের অভিযোগে মামলা করেন। বিচারক পুলিশের গোয়েন্দা শাখাকে (ডিবি) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। ওই মামলা দায়েরের বিষয়টি জানার পর গতকাল রাতে শহিদুজ্জামানের নেতৃত্বে বাড়িতে হামলা করা হয়।
আবদুল জব্বার আরও বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তর থেকে তিন বছরের মেয়াদে খাস পুকুর ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করেছেন। ইজারার মেয়াদ আরও দুই বছর আছে। এর মধ্যে তাঁর কাছ থেকে পুকুর রক্ষার জন্য দুই লাখ টাকা চাঁদার দাবি করা হয়েছে। টাকা না দেওয়ায় মাছ লুট করা হয়েছে।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে শহিদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্রামের সাতটি পুকুর দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে আবদুল জব্বার শাহসহ কয়েকজন ব্যক্তি অবৈধভাবে দখল করে মাছ চাষ করেন। এর আগে পুকুরগুলো গ্রামের মসজিদ ও মন্দিরের উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করা হতো। গ্রামের লোকজন পুকুরগুলো আগের মতো ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলেন। তখন দখলকারীরা হুমকি দেয়। এতে গ্রামের ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যসহ দুই শতাধিক লোকজন সাতটি পুকুরে জাল ফেলে মাছ ধরেছে বলে শুনেছি। এদের মধ্যে মসজিদ ও মন্দির পরিচালনা কমিটির লোকজনও ছিলেন। অথচ উদ্দেশ্যমূলকভাবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত না থাকলেও আমাকে প্রধান আসামি করে দুইটা মিথ্যা মামলা করেছে।’
বাড়িঘরে হামলার প্রসঙ্গে শহিদুজ্জামান বলেন, ‘আমি কাল থেকে ঢাকায় আছি। শুনেছি, জব্বারের বাড়ির দরজা-জানালা ভাঙচুর করা হয়েছে।’
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, তিনি ঘটনাটি শুনেছেন। থানায় অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ল কজন
এছাড়াও পড়ুন:
ফুটবলার প্রতিমা এগিয়ে যাচ্ছেন, পাশে আছে কিশোর আলোসহ অনেকে
একটি পরিবারের ওপর নেমে আসা অপ্রত্যাশিত চাপ আর হতাশাকে দূর করেছে একটি সংবাদ। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড় প্রতিমা মুন্ডার পড়াশোনা ও খেলাধুলা থমকে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল মাত্র ৪৭ হাজার টাকার জন্য। প্রথম আলোয় প্রতিবেদন প্রকাশের পর মিলেছে সহযোগিতা, পরিশোধ হয়ে গেছে বিকেএসপির বকেয়া।
এতে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন প্রতিমার মা সুনিতা মুন্ডা। তাঁদের ওপর থেকে নেমে গেছে বড় ধরনের আর্থিক চাপ।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেএসপি প্রতিমার অভিভাবককে পাঠানো চিঠিতে জানিয়েছিল, তাঁদের মেয়ের বকেয়া বেতন ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা। সেই চিঠিতেই সতর্ক করে বলা হয়, ছয় মাসের বেশি বেতন বকেয়া থাকলে চূড়ান্ত সতর্কীকরণ, আর ১২ মাসের বেশি বকেয়া থাকলে বহিষ্কারের বিধান আছে। অর্থাভাবে যখন অনিশ্চিত হয়ে উঠেছিল প্রতিমার ভবিষ্যৎ, ঠিক সেই সময় ১১ অক্টোবর প্রথম আলোয় প্রকাশিত হয় তাঁদের পরিবারের সংগ্রামের গল্প।
আরও পড়ুনবকেয়া বেতন চেয়ে বিকেএসপির চিঠি, ফুটবলার প্রতিমার পড়াশোনা বন্ধের পথে ১১ অক্টোবর ২০২৫প্রতিবেদনটি পাঠকের হৃদয়ে নাড়া দেয়। কিশোর আলোর পক্ষ থেকে প্রতিমার বকেয়া পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই দিনই বিকেলে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে গিয়ে প্রথম আলোর সাতক্ষীরার নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি প্রতিমা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে নেওয়া হয় এই উদ্যোগ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ব্যবসায়ী সহায়তা করেন আরও ১০ হাজার টাকা। তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপা রানী সরকার দেন পাঁচ হাজার টাকা ও একটি ফুটবল।
সহায়তা পেয়ে স্বস্তি ফিরেছে পরিবারে। মুঠোফোনে প্রতিমা বলেন, ‘এখন আর কোনো অনিশ্চয়তা নেই। বিকেএসপির পাওনা ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা পরিশোধ করে দিয়েছি। আমি ভালো আছি, মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা আর অনুশীলন করছি।’
সাতক্ষীরার তালা উপজেলার প্রতিমা মুন্ডা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে কিশোর আলোর পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়