হাতীবান্ধা সীমান্তে গুলিতে নিহত বাংলাদেশি তরুণের লাশ ফেরত দিয়েছে বিএসএফ
Published: 18th, April 2025 GMT
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে আহত বাংলাদেশি হাসিবুল ইসলাম (২২) ভারতের কোচবিহার জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে বিজিবি ও পুলিশের কাছে লাশটি হস্তান্তর করে বিএসএফ।
এর আগে গত বুধবার দুপুরে উপজেলার মধ্য সিঙ্গিমারী সীমান্তের ৮৯৪ নম্বর মেইন পিলালের সাব ৬ এস পিলার লাগোয়া এলাকায় বিএসএফের গুলিতে হাসিবুল ইসলাম আহত হন। বিএসএফের সদস্যরা তাঁকে ধরে নিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বুধবার রাত আটটায় ভারতের কোচবিহারের এমজেএন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান হাসিবুল।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, হাতীবান্ধা উপজেলার সিঙ্গিমারী সীমান্তের মেইন পিলার ৮৮১ নম্বর ও উপপিলার ১৩–এর ভারতের কোচবিহার জেলার শীতলকুচি থানার সীমান্ত ও জেলার পাটগ্রাম উপজেলার জোংড়া ইউনিয়নের খারিজা জোংড়া সীমান্ত দিয়ে হাসিবুলের লাশ হস্তান্তর করে বিএসএফ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভারতের ১৫৭ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের মহেশমারী ক্যাম্পের কমান্ডার রাজ কুমার, ৬১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের খারিজা জোংড়া ক্যাম্পের কমান্ডার সুবেদার রেজাউল ইসলাম ও পাটগ্রাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তাজরুল ইসলাম, নিহত তরুণের বাবা জাহিদুল ইসলাম ও চাচা রশিদুল ইসলাম। রাতেই নিহতের বাবা ও চাচার নিকট হাসিবুলের লাশ হস্তান্তর করে থানা–পুলিশ।
আরও পড়ুনহাতীবান্ধা সীমান্তে গুলিতে আহত বাংলাদেশি তরুণকে ধরে নিয়ে গেল বিএসএফ১৬ এপ্রিল ২০২৫পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার দুপুরে সীমান্ত এলাকায় নিজ জমিতে ঘাস কাটতে যান হাসিবুল ইসলাম। এ সময় ভারতের ১৫৭ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের ফুলবাড়ি ক্যাম্পের টহল দলের বিএসএফ সদস্যরা বাংলাদেশ অংশে প্রবেশ করে হাসিবুলকে ধরে ভারতের কাছাকাছি অংশে নিয়ে যান। পরে তাঁকে লক্ষ্য করে কয়েকটি গুলি ছোড়ে। গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসিবুল মাটিতে পড়ে যান। এ সময় বিএসএফ সদস্যরা তাঁকে মারধর করে টেনেহিঁচড়ে ভারতের অভ্যন্তরে নিয়ে যান।
পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুজ্জামান সরকার বলেন, উভয় দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতিতে গতকাল রাতে হাসিবুলের লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে রাতেই তাঁর লাশ বাবা ও চাচাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে এক বাংলাদেশি নাগরিক। মুফতি আবদুল্লাহ আল মাসুদ নামে ওই বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয় পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার গয়েশপুর পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা থেকে। এরপর তাকে ফাঁড়িতে নিয়ে এসে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলে। বৃহস্পতিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে।
ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ভারত থেকে নিজের দেশে ফিরে যাননি মাসুদ। তিনি অবৈধভাবে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কাটাগঞ্জ এলাকায় বসবাস করতেন। সম্প্রতি তার বেশ কিছু কর্মকান্ডে সন্দেহ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পরই মাসুদকে ইসলামী উগ্রপন্থী বলে দাবি করে পুলিশে অভিযোগ করা হয়। যেহেতু তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাই পুলিশ তাকে একজন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতীয় আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
বিষয়টি সামনে আসার পরই যথেষ্ট উত্তেজনা ছড়িয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের পক্ষে কিছুই জানানো হয়নি।
অন্যদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় ভারত বাংলাদেশের দিনাজপুর সীমান্ত ও ভোমরা ঘোজাডাঙা সীমান্তে এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন আরো ১১ জন বাংলাদেশি নাগরিক।
পুলিশ ও বিএসএফের যৌথ অভিযানে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এক বাংলাদেশি নাগরিককে। আটককৃতে ওই ব্যক্তির নাম পঞ্চানন পাল। তিনি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গা থানার বাসিন্দা। ভারতে তিনি পরিচয় বদল করে রূপায়ণ পাল নামে বসবাস করছিলেন বলে অভিযোগ। তার কাছ থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছাড়াও ভারতের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড ও এমনকি ভারতীয় পাসপোর্ট পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে।
একইদিনে ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময়ে ঘোজাডাঙ্গা ভোমরা সীমান্তের কাছে সরুপনগর এলাকার তারালি সীমান্ত থেকে বিএসএফের ১৪৩নম্বর ব্যাটালিয়নের হাতে আটক হয়েছেন আরো বাংলাদেশি নাগরিক।
সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে আটকের পর তাদের স্বরূপনগর থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে তিন শিশু, তিনজন পুরুষ ও চারজন নারী। এর সবাই বাংলাদেশের সাতক্ষীরা এবং খুলনার বাগেরহাটের বাসিন্দা।
সুচরিতা/শাহেদ