চীনের অর্থায়নে প্রস্তাবিত মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল পঞ্চগড়ে স্থাপনের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি ও মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় মুসল্লিরা। শুক্রবার জুমার নামাজের পর ‘জেলার সর্বস্তরের সাধারণ মুসল্লি’র ব্যানারে শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে এ কর্মসূচি করা হয়।

আজ জুমার নামাজ শেষে শহরের বিভিন্ন এলাকার মসজিদ থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে চৌরঙ্গী মোড়ে এসে জড়ো হন মুসল্লিরা। ঘণ্টাব্যাপী কর্মসূচিতে বিভিন্ন মসজিদের খতিবদের মধ্যে ময়নুল ইসলাম সিদ্দিকী, মাজেদুর রহমান, শাহিনুল ইসলাম, হারুন অর রশিদ, দেলোয়ার হোসেন, লিয়াকত আলী এবং মুসল্লিদের মধ্যে আবদুল্লাহ আল মামুন, তোফায়েল প্রধান, হায়াতুন আলম প্রমুখ বক্তব্য দেন।

বক্তারা চীনের অর্থায়নে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে যে এক হাজার শয্যার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপনের আলোচনা চলছে, সেটি দেশের সর্ব–উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে স্থাপনের দাবি জানান। তাঁরা বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও পঞ্চগড়ের মানুষ চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। প্রস্তাবিত মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল পঞ্চগড়ে হলে ভুটান, নেপাল ও চীনের ছাত্রছাত্রীরা সেখানে পড়াশোনা করতে আসবেন। একই সঙ্গে চিকিৎসাসেবার জন্য উত্তরাঞ্চলের নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলবে।

সরকারের উদ্দেশে বক্তারা বলেন, জমি লাগলে তাঁরা এখনই জমি দিতে প্রস্তুত। শুধু পঞ্চগড়ে মেডিকেল কলেজ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিলে তাঁরা এখনই নির্ভেজাল জমির ব্যবস্থা করে দেওয়ার দায়িত্ব নেবেন। তাঁরা বলেন, পঞ্চগড়ের মানুষ অসুস্থ হলেই চিকিৎসার জন্য রংপুর বা দিনাজপুরে যেতে হয়। এতে পথেই অনেকের মৃত্যু হয়। জেলায় চীনের প্রস্তাবিত মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালটি স্থাপিত হলে পথে আর মানুষ মরবেন না।

কর্মসূচিতে বক্তারা আরও বলেন, ২০২৩ সালে পঞ্চগড়ে চীন ও বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে বেসরকারিভাবে একটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু ভারতীয় গণমাধ্যমের নানা গুজবের কারণে সেই হাসপাতাল আলোর মুখ দেখেনি। জেলা সদরের দাড়িয়াপাড়া এলাকায় এখনো সেই হাসপাতালের ৩৫ একর জমি পড়ে আছে। পঞ্চগড়ে এক হাজার শয্যার হাসপাতাল করার মতো খাসজমিসহ ব্যক্তিমালিকানাধীন শত শত একর জমি আছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রস ত ব ত

এছাড়াও পড়ুন:

এখনই কেন ইরানের এ অপূরণীয় ক্ষতি করল ইসরায়েল

ইরানে এবার চালানো ইসরায়েলের হামলা আগের দুটি সামরিক অভিযানের তুলনায় শুধু বিস্তৃত ও তীব্রই ছিল না, এতে গত নভেম্বরে লেবাননে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে ইসরায়েলের আক্রমণে ব্যবহৃত কিছু কৌশলও ব্যবহার করা হয়েছে। এ কৌশল হলো– শুধু ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটিতে আঘাত করা নয়, বরং দেশটির গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্বকে হত্যা করতেও হামলা চালানো।

গতকাল শুক্রবার বিবিসির বিশ্লেষণে এসব তথ্য উঠে আসে। এতে বলা হয়, হিজবুল্লাহর জ্যেষ্ঠ নেতাদের হত্যার কৌশল ওই সংগঠনের জন্য ধ্বংসাত্মক পরিণতি নিয়ে আসে। একটি টেকসই পাল্টা আক্রমণ চালানোর ক্ষমতার ওপর বিধ্বংসী প্রভাব ফেলেছিল। তেহরানে হামলার ফুটেজে দেখা গেছে, নির্দিষ্ট ভবনগুলোতে আঘাত হানার দৃশ্য অনেকটা বৈরুতের দক্ষিণ উপকণ্ঠে ইসরায়েলের আক্রমণের চিত্রের মতো, যার পরিণতিতে হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হন। 

ইরানে এত বড় কোনো ব্যক্তি নিহত হননি বলে মনে হচ্ছে। সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়নি। কিন্তু অভিযানের প্রথম কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইরানের সামরিকপ্রধান, শক্তিশালী বিপ্লবী গার্ডের কমান্ডার হোসেইন সালামি এবং বেশ কয়েকজন পরমাণু বিজ্ঞানীকে হত্যা করে দেশটির অভিজাতদের অভূতপূর্ব ক্ষতি করা হয়েছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, এ অভিযান আরও কয়েকদিন ধরে চলতে পারে।

গত বছর ইসরায়েলে দুইবার হামলা চালায় ইরান। এবার তারা আরও তীব্র হামলা চালাতে পারে বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু তেহরানের পক্ষে এ ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখানো এতটা সহজ হবে না। সম্ভবত নেতানিয়াহু হিসাবনিকাশ করেই এ বিরোধে উস্কানি দিয়েছেন। প্রশ্ন হলো, কেন তিনি এখনই আক্রমণ শুরু করার সিদ্ধান্ত নিলেন– যেটা তিনি এতদিন ধরে সমর্থন করে আসছিলেন। অভিযান শুরুর কিছুক্ষণ পর প্রকাশিত এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেন, এটি ইসরায়েলের অস্তিত্ব রক্ষার বিষয়। 

নেতানিয়াহু দীর্ঘদিন ধরে যুক্তি দিয়ে আসছেন, ইরান পারমাণবিক বোমা তৈরি করলে ইসরায়েলের অস্তিত্বের হুমকিতে পড়বে। সম্প্রতি ইসরায়েলের এক ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা জানান, তারা জানতে পেরেছেন– ইরানের কাছে কয়েক দিনের মধ্যে ১৫টি পারমাণবিক বোমা তৈরির জন্য পর্যাপ্ত উপকরণ রয়েছে। 

ইরানে এ হামলার পেছনে ভিন্ন একটি কারণও থাকতে পারে। তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচির একটি চুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে আগামীকাল রোববার ষষ্ঠ দফায় আলোচনা শুরু হতে চলেছে। এতে কতটা অগ্রগতি হয়েছে, তা নিয়ে পরস্পরবিরোধী ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এ অবস্থায় নেতানিয়াহুর কাছে মনে হতে পারে, সম্ভাব্য ‘অগ্রহণযোগ্য’ চুক্তি বন্ধের এটাই উপযুক্ত সময়। 

সামরিক দিক থেকে তিনি ও তাঁর উপদেষ্টারা হয়তো বুঝতে পারছেন– শুধু ইরানই নয়, বরং এ অঞ্চলে তার সহযোগী, বিশেষ করে হিজবুল্লাহ এতটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে যে, তারা আগের  মতো আর হুমকি নয়। আগামী কয়েক ঘণ্টা ও দিনে প্রমাণ হবে– এটি সঠিক, নাকি একটি বিপজ্জনক ভুল গণনা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইসরায়েল ঠিক এখনই কেন ইরানে হামলা করল
  • এখনই কেন ইরানের এ অপূরণীয় ক্ষতি করল ইসরায়েল