চবিতে নারী শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার ও পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মশালমিছিল
Published: 18th, April 2025 GMT
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার এবং পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মশালমিছিল করেছে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় মিছিলটি টিএসসি থেকে শুরু হয়ে ভিসি চত্বর হয়ে বিভিন্ন সড়ক ঘুরে রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে শেষ হয়। মিছিল থেকে ‘হামলা-মামলা প্রত্যাহার চাই’, ‘আমার বোন বহিষ্কার কেন’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়।
মশালমিছিল শেষে রাজু ভাস্কর্যের সামনে সমাবেশ করেন গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের নেতা–কর্মীরা। সেখানে বক্তব্যে জোটভুক্ত ছাত্রসংগঠনের নেতারা অভিযোগ করেন, শিক্ষাঙ্গনে দমন-পীড়ন চালিয়ে স্বৈরতান্ত্রিক কাঠামো মজবুত করা হচ্ছে।
সমাবেশে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু অভিযোগ করে বলেন, ‘গণ–অভ্যুত্থানের পর ছাত্রনেতারা মব তৈরি ও ক্ষমতার ভাগাভাগিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।’
ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের সহিংসতার উল্লেখ করে মেঘমল্লার বসু বলেন, দীর্ঘদিনের বিরাজনীতিকরণের ফলে ছাত্রসমাজ আজ অর্থহীন কর্মসূচিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে।
সমাবেশে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বলেন, চট্টগ্রামে নারী শিক্ষার্থীদের ‘টার্গেট’ করে বহিষ্কার করা হয়েছে। ফেসবুকে বুলিং ও বহিষ্কারের মাধ্যমে ২৪ মার্চের আন্দোলন থেকে নারী শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের চাকরি পাওয়ার গল্প প্রচার করা হলেও বাস্তবতা ভিন্ন।
গণতাত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি সায়েদুল হক নিশান দাবি করেন, কুয়েটে হামলার ঘটনায় প্রশাসনের কাছে জবাব চাইতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা আবারও হামলার শিকার হচ্ছে। তিনি বলেন, হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে বরং প্রতিবাদীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসঙ্গে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক জাবির আহমেদ জুবেল বলেন, যারা মবের বিরুদ্ধে ছিল, তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে। প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা উসকানিমূলক মন্তব্য ও বার্তা ছড়িয়ে পরিস্থিতি আরও খারাপ করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
কুয়েট ভিসির পদত্যাগ ও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, চট্টগ্রামে বহিষ্কৃত নারী শিক্ষার্থীদের পুনর্বহাল এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবি জানান বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ফুটবলার প্রতিমা এগিয়ে যাচ্ছেন, পাশে আছে কিশোর আলোসহ অনেকে
একটি পরিবারের ওপর নেমে আসা অপ্রত্যাশিত চাপ আর হতাশাকে দূর করেছে একটি সংবাদ। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড় প্রতিমা মুন্ডার পড়াশোনা ও খেলাধুলা থমকে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল মাত্র ৪৭ হাজার টাকার জন্য। প্রথম আলোয় প্রতিবেদন প্রকাশের পর মিলেছে সহযোগিতা, পরিশোধ হয়ে গেছে বিকেএসপির বকেয়া।
এতে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন প্রতিমার মা সুনিতা মুন্ডা। তাঁদের ওপর থেকে নেমে গেছে বড় ধরনের আর্থিক চাপ।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেএসপি প্রতিমার অভিভাবককে পাঠানো চিঠিতে জানিয়েছিল, তাঁদের মেয়ের বকেয়া বেতন ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা। সেই চিঠিতেই সতর্ক করে বলা হয়, ছয় মাসের বেশি বেতন বকেয়া থাকলে চূড়ান্ত সতর্কীকরণ, আর ১২ মাসের বেশি বকেয়া থাকলে বহিষ্কারের বিধান আছে। অর্থাভাবে যখন অনিশ্চিত হয়ে উঠেছিল প্রতিমার ভবিষ্যৎ, ঠিক সেই সময় ১১ অক্টোবর প্রথম আলোয় প্রকাশিত হয় তাঁদের পরিবারের সংগ্রামের গল্প।
আরও পড়ুনবকেয়া বেতন চেয়ে বিকেএসপির চিঠি, ফুটবলার প্রতিমার পড়াশোনা বন্ধের পথে ১১ অক্টোবর ২০২৫প্রতিবেদনটি পাঠকের হৃদয়ে নাড়া দেয়। কিশোর আলোর পক্ষ থেকে প্রতিমার বকেয়া পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই দিনই বিকেলে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে গিয়ে প্রথম আলোর সাতক্ষীরার নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি প্রতিমা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে নেওয়া হয় এই উদ্যোগ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ব্যবসায়ী সহায়তা করেন আরও ১০ হাজার টাকা। তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপা রানী সরকার দেন পাঁচ হাজার টাকা ও একটি ফুটবল।
সহায়তা পেয়ে স্বস্তি ফিরেছে পরিবারে। মুঠোফোনে প্রতিমা বলেন, ‘এখন আর কোনো অনিশ্চয়তা নেই। বিকেএসপির পাওনা ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা পরিশোধ করে দিয়েছি। আমি ভালো আছি, মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা আর অনুশীলন করছি।’
সাতক্ষীরার তালা উপজেলার প্রতিমা মুন্ডা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে কিশোর আলোর পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়