ঢাকার মগবাজারে ট্রেন আসার আগ মুহূর্তে রেললাইনে আটকে যায় যাত্রীবাহী একটি বাস। ট্রেন আসার ঠিক আগ মুহূর্তে বাসটি সরানো সম্ভব হওয়ায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেনি। অল্পের জন্য রক্ষা পান অর্ধশতাধিক যাত্রী।

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) রাতে এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। 

ওই ভিডিওতে দেখা যায়, মগবাজারের এফডিসি-হাতিরঝিল ক্রসিং থেকে আজমেরী গ্লোরী পরিবহনের একটি বাস মগবাজারের দিকে যাচ্ছিল। ওই সময় বাসটি রেললাইনে উঠতেই হঠাৎ আটকে যায়। চালক কিছু সময় চেষ্টা করেও সেটি সামনে বা পেছনের দিকে নিতে পারছিলেন না। একই সময় ঢাকা স্টেশন থেকে উত্তরবঙ্গগামী একটি ব্রডগেজ ট্রেন আসার সাইরেনও শোনা যায়। অন্যদিকে রেললাইনের ওপর বাসটি আটকে যাওয়ায় গেটকিপার ব্যারিয়ারও ফেলতে পারছিলেন না। ওই সময় গেটকিপারকে বাঁশিতে ফুঁ দিয়ে সবাইকে সর্তক করার চেষ্টা করেন। 

ভিডিওতে দেখা যায়, ট্রেন সাইরেন বাজাতে বাজাতে ছুটে আসছে। বাসচালক চেষ্টা করছেন বাসটি সরাতে। যাত্রীরা প্রাণভয়ে বাসের জানালা দিয়ে নামতে শুরু করেন। একপর্যায়ে ট্রেন আসার ঠিক আগ মুহূর্তে কোনোরকমে বাসটি পেছনের দিকে নিতে সক্ষম হন চালক। এর ঠিক কয়েক সেকেন্ড পরেই রেলগেট পার হয়ে দ্রুত ছুটে যায় উত্তরবঙ্গগামী ট্রেনটি। আশপাশের মানুষ ঘটনার ভিডিও ধারণ করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে অনেকে সমালোচনা করেন।  

রিফাত নূর নামে একজন লিখেছেন, “মানুষের এতো বড় বিপদেও সাহায্য না করে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভিডিও করছে। এই হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণ।”

কেউ কেউ বাসচালককেও দোষারোপ করছেন। আবার অনেকে গেটকিপারকে দায়ী করে মন্তব্য করেছেন। তবে বড় ধরনের দুর্ঘটনা না ঘটায় অনেকে স্বস্তি প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

ঢাকা/রায়হান/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মগব জ র

এছাড়াও পড়ুন:

২২ বছর পর চাকা ঘুরছে রাজশাহী টেক্সটাইলের

দীর্ঘ ২২ বছর পর আবার চাকা ঘুরতে যাচ্ছে রাজশাহী টেক্সটাইল মিলসের। এরই মধ্যে কারখানাটিতে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়েছে। তাতে কর্মসংস্থান হয়েছে এক হাজার জনের। সরকারি মালিকানাধীন বস্ত্রকলটি সরকারি-বেসরকারি যৌথ অংশীদারত্বে (পিপিপি) আবারও চালু করতে যাচ্ছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। আজ সোমবার প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কারখানাটি পরীক্ষামূলক চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পিপিপিতে নেওয়ার পর রাজশাহী টেক্সটাইল মিলসের নাম বদলে রাখা হয়েছে বরেন্দ্র রাজশাহী টেক্সটাইল। পরীক্ষামূলক উৎপাদন শেষে শিগগিরই কারখানাটি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা হবে। এটি পুরোদমে চালু হলে ১২ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হবে। আজ দুপুরে রাজশাহী নগরের একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রাণ-আরএফএলের কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আরএফএল গ্রুপের বিপণন পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল, গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান মাল্টি লাইন ইন্ডাস্ট্রিজের নির্বাহী পরিচালক আনিসুর রহমান, গ্রুপের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (জনসংযোগ) তৌহিদুজ্জামান ও বরেন্দ্র রাজশাহী টেক্সটাইলের সহকারী মহাব্যবস্থাপক শরীফ উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, রাজশাহীতে অবস্থিত সরকারি এই টেক্সটাইল মিলটি ২২ বছর ধরে বন্ধ ছিল। সম্প্রতি সরকারের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে এটি পিপিপিতে চালুর উদ্যোগ নেয় প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। প্রায় ২৬ একর জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত এই কারখানাকে প্রাণ-আরএফএল উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ পরিবেশবান্ধব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে পরিণত করার উদ্যোগ নিয়েছে। কারখানাটিতে তৈরি হবে শতভাগ রপ্তানিমুখী পণ্য। এসব পণ্যের মধ্যে থাকবে বিভিন্ন ধরনের ব্যাগ, জুতা ও তৈরি পোশাক। দুই বছরের মধ্যে কারখানাটিতে ১২ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরিতে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত বছরের অক্টোবরে চুক্তি স্বাক্ষরের পর ডিসেম্বরে কারখানার দায়িত্ব বুঝে নেয় গ্রুপটি। এরপর তিন মাসের মাথায় কারখানায় পরীক্ষামূলক উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। দুই বছরের মধ্যে কারখানাটি পুরোদমে চালু হবে।

সংবাদ সম্মেলনে কামরুজ্জামান কামাল বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য ঢাকাকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বের হয়ে তারা উত্তরবঙ্গে এই বৃহৎ শিল্প প্রকল্প শুরু করেছেন। এর মাধ্যমে রাজশাহীর হাজার হাজার মানুষ কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবেন এবং স্থানীয় অর্থনীতি গতিশীল হবে।

আনিসুর রহমান বলেন, কারখানায় বর্তমানে সীমিত পরিসরে জুতা ও ব্যাগ তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তাতে রাজশাহীর প্রায় এক হাজার লোক কাজের সুযোগ পেয়েছেন। স্থানীয় কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এখানে একটি ‘স্কিলস ডেভেলপমেন্ট সেন্টার’ স্থাপন করা হবে। কারখানায় উৎপাদিত পণ্য রপ্তানি হবে।

রাজশাহী টেক্সটাইল মিলসে কারখানা চালু করার প্রক্রিয়ায় কয়েক শ গাছ ও পুকুর ভরাটের বিষয়ে রাজশাহীতে সমালোচনা হয়। এ নিয়ে বিভিন্ন সংগঠন মানববন্ধনও করেছে। এ ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলনে জানতে চাইলে কামরুজ্জামান কামাল বলেন, গাছ কাটা নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। তাঁরা সঠিক উপায় অবলম্বন করেই এগুলো করেছেন। বন বিভাগকে চিঠি দিয়েছেন। তার বিপরীতে তিন হাজার নতুন গাছ লাগানো হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ২২ বছর পর চালু হচ্ছে রাজশাহী টেক্সটাইল মিল
  • ২২ বছর পর চাকা ঘুরছে রাজশাহী টেক্সটাইলের