জামিনে মুক্ত হওয়ার পরই হামলা ও মারধরের মামলা তুলে নিতে বাদীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত তোজাম্মেল হক রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মাটিকাটা ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মোল্লা ফিরোজ (২৩) রাজশাহী আদালতে ১০৭ ধারায় মামলা করেছেন। গত ৭ এপ্রিল গোদাগাড়ী থানার আমলী আদালতে মামলাটি করেন তিনি। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে আসামিদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন।

মামলার বাদী ফিরোজ গোদাগাড়ীর উজানপাড়া গ্রামের মাহাতাব উদ্দিনের ছেলে। 

আরো পড়ুন:

টিপকাণ্ড: লতা সমাদ্দার, সুবর্ণা মোস্তফাসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা

টাঙ্গাইলে নকল সরবরাহের অভিযোগে শিক্ষক গ্রেপ্তার

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- উজানপাড়া গ্রামের মো.

মিলন (৩০), আবু তাহের (২২), মো. রাসেল (৩০), মো. নয়ন (২৮), একরামুল হক (৫০), মো. জুয়েল (৩২), মো. লিটন (৪৫), মো. আলামিন (৩৫), মো. আহাদ (২২), লতিফুর রহমান (৫০) ও তরিকুল ইসলাম টুটুল (৪৫)।

ফিরোজের আইনজীবী জালাল উদ্দীন জানান, আদালত আসামিদের রবিবার (২০ এপ্রিল) স্বশরীরে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

আসামিদের সঙ্গে মোল্লা ফিরোজের পরিবারের জমি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। এর জেরে গত ২ এপ্রিল দুপুর পৌনে ১টার দিকে ফিরোজকে তার বাড়ির সামনে পেয়ে আসামিরা ঘিরে ধরেন এবং তাকে বকাবকি করতে থাকেন। এতে বাধা দিলে ফিরোজকে মারধর করা হয়। তার চিৎকারে মামা নাসির উদ্দীন (৪৫) ছুটে গেলে তাকে কুপিয়ে জখম করা হয়। এ ঘটনায় ফিরোজ ইউপি সদস্যসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। 

ফিরোজ জানান, ‍মামলার পর ৬ এপ্রিল আসামিরা জামিনে মুক্ত হন। জামিনে বেরিয়েই তারা বিভিন্ন মাধ্যমে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিতে শুরু করেন। মামলা না তুললে মাঠের ফসল নষ্ট ও পুকুরে বিষ দিয়ে মাছ মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে তিনি আদালতে আবারো মামলা করেন। তারপরও হুমকি বন্ধ হয়নি বলে অভিযোগ তার।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য তোজাম্মেল হক বলেন, “দুই পক্ষই আমার আত্মীয়। তাদের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ আছে। ইউপি সদস্য হিসেবে আমি মীমাংসার চেষ্টা করেছি। সে কারণে আমার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। জামিন পেলেও আমি কাউকে হুমকি দেইনি। আমরা সমন পেয়েছি, রবিবার আদালতে গিয়ে সব বলব।”

ঢাকা/কেয়া/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে ইরানের নতুন হামলায় নিহত বেড়ে ৫, আহত ২৯

ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে অন্তত চার জায়গায় হামলা চালিয়েছে ইরান। এ হামলায় তিনজন নিহত হয় বলে জানায় জেরুজালেম পোস্ট। বিবিসি আরও দুইজন নিহতের খবর দেয়। এরপর আরেকজনের ফলে নতুন হামলায় ইসরায়েলে নিহত বেড়ে পাঁচজনে পৌঁছাল।

আজ সোমবার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের অ্যাম্বুলেন্স ও ব্লাড ব্যাংক সংস্থাগুলো বলছে, এসব হামলায় ২৯ জন আহত হয়েছেন।

বিবিসির খবরে বলা হয়, ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি পরিষেবার প্রধান ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম জানান, মধ্য ইসরায়েলজুড়ে ইরানের হামলায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন নারী, একজন পুরুষ। 

এর আগে সিএনএন ইসরায়েলের ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর দেয়। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কানের খবর বলছে, ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে হামলায় একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এছাড়াও বন্দরনগরী হাইফায় অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। এছাড়াও সেখান আরও তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।

এর আগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছিল, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।

আজ সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।

সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।

ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।

সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’

তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।

এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।

এদিকে ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ