যারা নির্বাচনের কথা বলে তারা লুটেরা ও মাফিয়া শ্রেণি: ফরহাদ মজহার
Published: 19th, April 2025 GMT
কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার বলেছেন, ‘আজকে যদি বড় বড় দলগুলো গণঅভ্যুত্থান করতে পারতো তাহলে তো তারাই ক্ষমতায় থাকতো। কিন্তু তারা তো সেটি পারেনি। তারা শেখ হাসিনার পরাজিত শক্তি। এখন এসে তারা শুধু নির্বাচন নির্বাচন জপ করছে। আর এখন যারা নির্বাচনের কথা বলে তারা লুটেরা ও মাফিয়া শ্রেণি। তারা এস আলমের টাকায় নির্বাচন করতে চায়।
শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ৯৩টি দলের সমন্বয়ে ‘রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আইন সংশোধন আন্দোলনের ব্যানারে রাষ্ট্র গঠনে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব ও তার বাস্তবতা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান এবং ‘রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আইন সংশোধন আন্দোলনের আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসাইন।
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘সরকার ও রাষ্ট্র দুইটা আলাদা জিনিস। নির্বাচন করি আমরা সরকারের জন্য, রাষ্ট্র গঠনের জন্য নয়। রাষ্ট্র গঠনের জন্য গণঅভ্যুত্থান করতে হয়। বিএনপি এখন যে নির্বাচন চায় আমরা সেই নির্বাচন চাই না। আমরা সরকার গঠনের জন্য নির্বাচন চাই, কিন্তু তার আগে রাষ্ট্র গঠন করতে চাই। রাষ্ট্র গঠনের জন্য গণপরিষদের নির্বাচন প্রয়োজন। কিন্তু এটি নিয়ে বারবার বড় বড় দলগুলো বিভ্রান্ত করে। তারা বলে ফরহাদ মজহার নির্বাচন চায় না। কিন্তু আমি কি নির্বাচন চাই না?’
এ সময় যেকোনো মূল্যে অন্তর্বর্তী সরকারকে রক্ষা করতে হবে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার আবারও ভুল করতে পারে। আর তাদের ভুলের ওপর আমাদের জীবন নির্ভর করছে। আমরা আর সরকারকে ভুল করতে দেব না। আমাদের কথা শুনতে হবে। আমরা অতি দ্রুত ড.
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘আপনি যাদের সঙ্গে কথা বলছেন তারা তারা কি রাজনৈতিক দল? প্রমাণ কি রাজনৈতিক দলের? যে নেতারা আপনার সঙ্গে দেখা করে তারা কি তাদের দলের সদস্যের প্রতিনিধি? তারা কি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে? তারা যদি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী হয় তাহলে তাদের প্রথমেই কেন বললেন না নির্বাচন বা কাউন্সিল করে আসতে? আর এটা যদি না করেন তবে আপনি লুটেরা মাফিয়াদের সঙ্গে বসে কথা বলেছেন!’
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘২০২৩ সালে ইনসাফ কমিটি নামে একটি মানবাধিকার সংগঠন করেছিলাম। সে সময় বিএনপির লোকজন বলেছেন ডিজিএফআইয়ের টাকায় বিএনপিকে ভাঙার জন্য পার্টি করছি। কিন্তু আমি পার্টি বানাই নাই। আমি মানবাধিকার সংগঠন করেছি। সে প্রক্রিয়ায় বলেছি, গণঅভ্যুত্থান আসছে। আর গণঅভ্যুত্থানের পরে কি কি করতে হবে সেটাও সেখানে বলেছি। গণঅভ্যুত্থানের কয়েকজন আমার পাঠচক্রে ছিল। তাদেরকে বারবার বলা সত্ত্বেও তারা হাসিনার ফেলে দেওয়া সংবিধানের আলোকে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করেছে। যেটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত ছিল। এতো রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে একটি শক্তিশালী সরকার গঠনের দরকার ছিল। কিন্তু সেটি হয়নি। এখন আপনারা ড. ইউনুসকে পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতায় চান কিন্তু রক্ত দ্বারা নির্বাচিত হলেও শুধু হাসিনার সংবিধানের আলোকে শপথ নেওয়ায় সেটি সম্ভব নয়। ’
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুস বড় বড় ভুল করেছেন। এসব ভুলের মাসুল আমাদেরকে আগামী দিনে দিতে হবে। প্রথম ভুলটা হলো সংবিধানকে ছুড়ে না ফেলা। এখন কিছু করতে গেলে আইনের কথা বলতে হচ্ছে। আর সবচেয়ে বড় ভুল হচ্ছে যারা বড় ধরনের ঝুঁকি নিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারকে উৎখাত করেছে সেই তরুণদের জুলাই ঘোষণা করতে না দেওয়া। এতে তরুণরা বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়ে গেছে, এ ঝুঁকির দায় কে নেবে? বিএনপি বলুন আর আওয়ামী লীগ বলুন সবাই একই। তারা তরুণদের বাঁচতে দেবে না। জুলাই ঘোষণা দিতে দিলে মাত্র তিনটি ঘোষণার ছিল, আগামী দিনে গণস্বার্বভৌমত্বের ভিত্তিতে বাংলাদেশের নতুন গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করা হবে। অর্থাৎ জনগণ যদি মনে ড. ইউনুস আমার নেতা তবে সেটিই হতো। এর পরে যেটি হতো তার আদেশ বা ফরমানের দ্বারা দেশ চলবে। কারণ তিনি জনগণের অভিপ্রায়ে রক্ত দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধি।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ফরহ দ মজহ র র গঠন র জন য গণঅভ য ত থ ন র ষ ট র গঠন গঠন কর আম দ র সরক র ইউন স ন করত ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
জকসুসহ তিন দফা দাবি মেনে নিল প্রশাসন, ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ও সম্পূরক বৃত্তিসহ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি মেনে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের আশ্বাসে ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভেঙে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
বুধবার রাত দশটার দিকে প্রশাসনের পক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় অনশনরত শিক্ষার্থীদের ফলের রস খাইয়ে অনশন ভাঙানো হয়। শিক্ষার্থীদের অনশন ভঙ্গ করান করান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক ও সিন্ডিকেট সদস্য বিলাল হোসাইন।
এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক শেখ গিয়াসউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই মোতাবেক নির্বাচনের রূপরেখাও ঘোষণা করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আগামী জানুয়ারি থেকে আবাসন ভাতা পাবেন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে বৃত্তির জন্য উপযুক্ত শিক্ষার্থীদের নভেম্বরের মধ্যে যাচাই-বাছাই করার কাজ শেষ করা হবে।
অনশনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ২৭ নভেম্বরের আগেই কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপন করা হবে। ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মানোন্নয়নে প্রশাসন কাজ করবে।
আরও পড়ুনতিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৪ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ১২ ঘণ্টা আগেএ সময় অনশনে বসা উদ্ভিদ বিজ্ঞানের বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। জকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে। আবাসন ভাতার জন্য প্রতিশ্রুত সময়ও দিয়েছে প্রশাসন। কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ কারণে আমরা অনশন ভেঙে আন্দোলন প্রত্যাহার করেছি।
সতর্ক করে দিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যদি প্রশাসন ঘোষিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবিগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সমস্ত দায় মাথায় নিয়ে সম্পূর্ণ প্রশাসনকে পদত্যাগ করতে হবে।
এর আগে তিন দফা দাবি আদায়ে গত মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন চারজন শিক্ষার্থী। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়। অনশনে বসা চার শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনজন বাগছাসের নেতা।
আরও পড়ুনজকসু নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা, ভোট ২৭ নভেম্বর২ ঘণ্টা আগে