মহেশখালী নৌপথে সি-ট্রাকের উদ্বোধন বৃহস্পতিবার, চূড়ান্ত হলো ভাড়া-সময়সূচি, উচ্ছ্বসিত বাসিন্দারা
Published: 22nd, April 2025 GMT
কক্সবাজার-মহেশখালী নৌপথে নিয়মিতভাবে সি-ট্রাক চলাচল শুরু হবে আগামী বৃহস্পতিবার থেকে। নৌপথটিতে প্রতিদিন তিনবার করে যাওয়া-আসা করবে ২৫০ জন যাত্রী ধারণক্ষমতার সি-ট্রাকটি। কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর ৬ নম্বর জেটিঘাট থেকে মহেশখালী যাতায়াতের ক্ষেত্রে একজন যাত্রীকে ভাড়া দিতে হবে ৫০ টাকা। অন্যদিকে কক্সবাজারের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে মহেশখালী যেতে ৪০ টাকা ভাড়া দিতে হবে যাত্রীদের। এরই মধ্যে এসব সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।
নিয়মিত সি-ট্রাক চলাচল শুরুর ঘোষণায় দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর বাসিন্দারা উচ্ছ্বসিত। এই সেবা চালু হওয়ায় পাহাড়ি দ্বীপটিতে যাতায়াতের ক্ষেত্রে যাত্রীদের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি কমবে বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা। একই সঙ্গে বর্ষা মৌসুমে উত্তাল সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে দুর্ঘটনায় প্রাণহানির মতো ঘটনাও কমবে বলে আশাবাদী তাঁরা। তবে সি-ট্রাকের ভাড়া আরও অন্তত ১০ টাকা করে কমানোর দাবি তুলেছেন বাসিন্দারা।
কক্সবাজারের পাহাড়ি দ্বীপ মহেশখালীর আয়তন ৩৮৮ দশমিক ৫০ বর্গকিলোমিটার। উপজেলায় রয়েছে একটি পৌরসভা ও আটটি ইউনিয়ন। বাংলাদেশের জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২ অনুযায়ী এই দ্বীপের জনসংখ্যা ৩ লাখ ৮৫ হাজারের বেশি। মৈনাক পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত আদিনাথ মন্দিরসহ উপজেলার নানা পর্যটন স্পটের কারণে সারা বছরই উপজেলাটিতে পর্যটকদের আনাগোনা থাকে।
বিআইডব্লিউটিএ জানায়, গত শুক্রবার নৌরুটটিতে পরীক্ষামূলকভাবে সি-ট্রাক চালু করা হয়। এরপর নিয়মিতভাবে সি-ট্রাক চলাচলের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সকারের নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.
কক্সবাজার-মহেশখালী নৌপথে এত দিন ধরে স্পিডবোট, কাঠের নৌকা ও লোহার ‘গামবোট’–এ করে যাত্রীরা যাতায়াত করে আসছেন। এসব নৌযানে যাতায়াতে নানা ধরনের ভোগান্তিতে পড়তে হয় যাত্রীদের। নৌপথে যাতায়াতের ক্ষেত্রে মানুষের এসব ভোগান্তি নিরসনের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় বাসিন্দা, ছাত্রদের সঙ্গে আন্দোলন করে আসছে মহেশখালী নাগরিক আন্দোলন। এ সংগঠনের নেতৃত্বে থাকা এস এম রুবেল প্রথম আলোকে বলেন, এত দিন নৌপথের নিয়ন্ত্রণ প্রভাবশালী কিছু সিন্ডিকেটের হাতে ছিল। মানুষ বাধ্য হয়ে বেশি ভাড়া দিয়ে স্পিডবোটে যাতায়াত করে আসছেন। সি-ট্রাক চালু হলে এসব সিন্ডিকেটের আধিপত্য কমবে। দ্বীপের বাসিন্দারা স্বস্তিতে যাতায়াত করতে পারবেন। নিরাপদে মহেশখালী ভ্রমণ করতে পারায় পর্যটক সমাগমও বাড়বে।
স্থানীয় সংবাদকর্মী মো. এনামুল হক বলেন, সরকারি গেজেট অনুযায়ী নৌপথে যাত্রীপ্রতি কিলোমিটারে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ২ টাকা ৮৫ পয়সা। মহেশখালী থেকে কক্সবাজার নৌপথের দূরত্ব সাড়ে আট কিলোমিটার। এতে ২৫ টাকা ভাড়া এলেও গেজেট অনুযায়ী সর্বনিম্ন ভাড়া হিসাবে ৩০ টাকা নেওয়ার কথা। কিন্তু এই নৌপথে ৪০ থেকে ৫০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে, যা কমানো উচিত। একই দাবি করেন মহেশখালী উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সর্বনিম্ন ভাড়া হিসাবে ৩০ টাকা আদায়ের জন্য তাঁরা বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।
জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএ কক্সবাজার (কস্তুরাঘাট) নদীবন্দরের সহকারী পরিচালক মো. খায়রুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, আগামী বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর ৬ নম্বর জেটিঘাটে সি-ট্রাক চলাচলের উদ্বোধন করবেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা। এরপর ওই সি-ট্রাকে করে মহেশখালীতে গিয়ে এক সুধী সমাবেশে অতিথি হিসেবে অংশ নেবেন তিনি। এরপর বেলা দেড়টায় সি-ট্রাকে করে কক্সবাজারে ফিরবেন।
মো. খায়রুজ্জামান আরও বলেন, আপাতত তিনবার করে সি-ট্রাকটি যাওয়া-আসা করবে। সময়সূচিও এরই মধ্যে নির্ধারণ করা হয়েছে। যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী পরে সময়সূচি পরিবর্তন করা যাবে। ভাড়া কমানোর বিষয়ে যাত্রীদের দাবির বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।
মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. হেদায়েত উল্যাহ প্রথম আলোকে বলেন, সি-ট্রাক চলাচল নিয়ে দ্বীপের বাসিন্দা খুবই উচ্ছ্বসিত। যাত্রীদের সুবিধার্থে মহেশখালী জেটিঘাটে স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ চলছে। এরই মধ্যে জেটিঘাটের যাত্রীছাউনিতে বৈদ্যুতিক পাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রথম আল ক অন য য় উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
জামায়াত-এনসিপি নাখোশ
শুধু বিএনপির সঙ্গে আলোচনা করে জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় ঘোষণা করায় অসন্তুষ্ট জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলনও। অন্যদিকে বৈঠককে ইতিবাচক উল্লেখ করে স্বাগত জানিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি, এবি পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, ১২ দলীয় জোট, বাংলাদেশ এলডিপি, খেলাফত মজলিসসহ কয়েকটি দল।
জামায়াতে ইসলামী এখনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেয়নি। তবে দলটির এক শীর্ষ নেতা সমকালকে বলেছেন, শুধু বিএনপির সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়ে অন্য দলগুলোকে রাজনৈতিকভাবে অবমূল্যায়ন ও ঝুঁকিতে ফেলা হয়েছে। সর্বদলীয় আলোচনায় নির্বাচনের সময়সীমা নির্ধারণ করা উচিত ছিল।
এনসিপি বলছে, অন্তর্বর্তী সরকার বিএনপির বর্ধিতাংশে পরিণত হয়েছে। তারা নিরপেক্ষতা হারিয়েছে। এ অবস্থায় সংস্কার ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কিনা– সংশয় রয়েছে।
গতকাল শুক্রবার লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৈঠকের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রমজানের আগে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তাব দেন তারেক রহমান। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে ২০২৬ সালের রমজান শুরুর আগের সপ্তাহেও নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে।
এর আগে সংস্কার ও বিচারের অগ্রগতি অর্জন করা প্রয়োজন হবে।
আগামী বছরের ১৭ বা ১৮ ফেব্রুয়ারি পবিত্র রমজান শুরু হবে। লন্ডন বৈঠকের যৌথ বিবৃতির পর ধারণা করা হচ্ছে, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ভোট হতে পারে। গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর জাতির উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা জানিয়েছিলেন, ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। গত ৬ জুন তিনি আরেক ভাষণে জানান, এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন হবে।
এপ্রিলে তাপপ্রবাহ, পাবলিক পরীক্ষাসহ নানা কারণ দেখিয়ে বিএনপি ও তাদের সমমনারা ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়ে আসছিল। বিএনপি আগের অবস্থান থেকে সরে রমজানের আগে বা ফেব্রুয়ারির মধ্যে ভোট চেয়েছে লন্ডনের বৈঠকে।
বিএনপিকে ‘তোয়াজে ক্ষুব্ধ’ জামায়াত
জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান গত এপ্রিলে দাবি করেছিলেন, রমজানের আগেই যেন ভোট গ্রহণ হয়। পরে দলটি অবস্থান নেয় ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচনের। প্রধান উপদেষ্টা এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচনের ঘোষণা দিলে স্বাগত জানায় জামায়াত।
ড. ইউনূস-তারেক বৈঠক নিয়ে আগে থেকেই নীরব বিএনপির নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠার চেষ্টায় থাকা জামায়াত।
জামায়াতের এক শীর্ষস্থানীয় নেতা গত রাতে সমকালকে বলেন, জামায়াতই প্রথম বলেছে, রমজানের আগে নির্বাচন হওয়া উচিত। তাই নির্বাচনের যে নতুন সময়সীমা বলা হচ্ছে, এ নিয়ে আপত্তির কিছু নেই। কিন্তু সরকার যেভাবে শুধু বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করে সময়সীমা নির্ধারণ করেছে, তা অগ্রহণযোগ্য। তিনি বলেন, বিএনপিকে তোয়াজ করতে লল্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে– ঠিক আছে। কিন্তু আলোচনার পর ঢাকায় সর্বদলীয় বৈঠক করে রমজানের আগে ভোটের ঘোষণা দিলে সব দল এবং সরকারের জন্য ভালো হতো। লন্ডন বৈঠকের পর ঘোষণা দেওয়ায় মানুষের কাছে বার্তা গেল– বিএনপিই একমাত্র রাজনৈতিক শক্তি। বিএনপির কাছেই ক্ষমতা হস্তান্তর করে বিদায় নেবে ইউনূস সরকার। এ বার্তার কারণে অন্য দলগুলো নির্বাচনের মাঠে প্রশাসন ও রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রতিবন্ধকতায় পড়বে। তিনি বলেন, এক-এগারো সরকারের তথাকথিত ‘সেফ এক্সিট’ পরিকল্পনার কারণেই ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ অস্বাভাবিক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল।
সরকার ও বিএনপির যৌথ বিবৃতি নিয়েও নাখোশ জামায়াত। দলটির জ্যেষ্ঠ নেতারা বলছেন, এর মাধ্যমে বোঝানো হচ্ছে– সরকার এবং বিএনপি সমশক্তি। এর পর আর সরকারের নিরপেক্ষতা থাকে না। এ বক্তব্য ড. ইউনূসকে জানাবে জামায়াত।
লন্ডনের বৈঠক নিয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের সমকালকে বলেন, জামায়াত আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় বক্তব্য জানাবে।
সরকার বিএনপির হয়ে গেছে– অভিমত এনসিপির
লন্ডনে বসে বাংলাদেশের নির্বাচনের সময়সীমা নির্ধারণকে অগ্রহণযোগ্য বলেছেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি সমকালকে বলেন, শুধু বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় নির্বাচনের সময়সীমা নির্ধারিত হতে পারে না। এর মাধ্যমে সরকার বিএনপির প্রতি ঝুঁকে গেছে। তাদের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কিনা– এ প্রশ্নও উঠবে।
এনসিপি আনুপাতিক পদ্ধতির সংসদীয় উচ্চকক্ষ, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা হ্রাসসহ ‘মৌলিক সংস্কার’ কার্যক্রমে জোর দিচ্ছে। নাসীরুদ্দীন বলেছেন, এনসিপি নির্বাচনের বিরোধী নয়। কিন্তু মৌলিক সংস্কার, জুলাই গণহত্যার বিচারে কোনো বার্তা নেই। একটি দলকে খুশি করতে সংস্কার; বিচারের চেয়ে নির্বাচনে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, যা গণঅভ্যুত্থান চেষ্টার সঙ্গে যায় না।
এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, সংস্কারের জন্য জাতীয় ঐকমত্য কমিশন যখন সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করছে, সেই সময়ে বিদেশে একটি দল বা ব্যক্তির সঙ্গে আলোচনা করে জাতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা রাজনীতির জন্য অশনিসংকেত।
গত রাতে এক বিবৃতিতে এনসিপি বলেছে, জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়নে জুলাই সনদ কার্যকর করা ও বিচারের রোডম্যাপ ঘোষণার পরই নির্বাচন-সংক্রান্ত আলোচনা চূড়ান্ত হওয়া উচিত। এসব ছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন গণঅভ্যুত্থানকে স্রেফ একটি ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে পরিণত এবং রাষ্ট্র বিনির্মাণের জনআকাঙ্ক্ষাকে অবদমিত করবে।
‘যৌথ বিবৃতি’ নিয়ে প্রশ্ন ইসলামী আন্দোলনের
সরকার-বিএনপির বৈঠককে সমঝোতার জন্য ইতিবাচক আখ্যা দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন। দলটি নির্বাচনের সময়সীমা বিষয়ে অবস্থান পুনর্বিবেচনার জন্য ড. ইউনূস এবং তারেক রহমানকে ধন্যবাদ জানালেও যৌথ বিবৃতির সমালোচনা করেছে।
সংস্কার, বিচার ও জুলাই সনদ নিয়ে বিএনপির নীতিগত সমর্থনকে স্বাগত জানিয়ে দলটির মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বিবৃতিতে বলেছেন, ড. ইউনূস সরকারপ্রধান, তারেক রহমান একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান। তারেক রহমান দেশের রাজনীতির একক প্রতিনিধিত্ব করেন না। বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ হলেও সরকারপ্রধানের সঙ্গে একজন রাজনৈতিক নেতার সংলাপকে যৌথ বিবৃতি আখ্যা দেওয়া বিস্ময়কর! বিএনপির একক মতামতের ভিত্তিতে দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণও শোভনীয় নয়।
অন্যরা স্বাগত জানিয়েছে
বিএনপির সমমনা জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন বিবৃতিতে বৈঠককে ঐকমত্যের সূচনা আখ্যা দিয়ে স্বাগত জানিয়েছেন। মৌলিক সংস্কারের জন্য দ্রুত জাতীয় সনদ প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছে জেএসডি। নির্বাচন এগিয়ে আনার সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক বলেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।
এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, ‘কয়েকজন উপদেষ্টা ও বিএনপি নেতার অপরিণামদর্শী বক্তব্য সরকার এবং দলটির মধ্যে দূরত্ব বাড়িয়ে তুলছিল। লন্ডন বৈঠকে তা আপাতত কাটল।’ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘নির্বাচনকেন্দ্রিক অনিশ্চয়তা ও উৎকণ্ঠা দূর হয়ে সমঝোতার পথ তৈরি হয়েছে।’
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, বিচার ও সংস্কারে অগ্রগতি অর্জনের আলোচনা ইতিবাচক। এখন এসব বিষয় জাতীয় ঐকমত্য তৈরিতে মনোযোগ পাবে বলে আশা করি।
বিএনপির সমমনা ১২ দলীয় জোট বিবৃতিতে বলেছে, জাতির জন্য স্বস্তির বার্তা এনেছে লন্ডন বৈঠকের যৌথ বিবৃতি। স্বাগত জানিয়েছেন বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ, হেফাজতে ইসলামের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব প্রমুখ।
যদিও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চেয়েছে; দলটির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে দ্বিমত পোষণ করে সমকালকে বলেন, বিচারের অগ্রগতি ও সংস্কার করে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব।