ক্রিকেটের ‘বাইবেল’খ্যাত উইজডেন ক্রিকেটার্স তাদের ২০২৫ সংস্করণে ঘোষণা করেছে বছরের সেরা ক্রিকেটারদের নাম। এবার পুরুষ বিভাগে শীর্ষ স্বীকৃতি পেয়েছেন ভারতের তারকা পেসার জাসপ্রিত বুমরাহ। নারী বিভাগে এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার উঠেছে ভারতীয় ওপেনার স্মৃতি মান্ধানার হাতে।

পুরুষদের ক্ষেত্রে পুরস্কারটির আনুষ্ঠানিক নাম ‘উইজডেনস লিডিং ক্রিকেটার ইন দ্য ওয়ার্ল্ড’। ২০২৪ সালে দুর্দান্ত একটি বছর কাটিয়েছেন বুমরাহ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বল হাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে ভারতকে চ্যাম্পিয়ন করেছেন। টুর্নামেন্ট শেষে বুমরাহ হয়েছেন ‘প্লেয়ার অব দ্য টুর্নামেন্ট’।

শুধু সীমিত ওভারেই নয়, টেস্ট ফরম্যাটেও ছিলেন সমান ধারাবাহিক। ২০২৪ সালে তিনি ১৩ টেস্টে নিয়েছেন ৭১ উইকেট। ক্যালেন্ডার বছরে ৫০টির বেশি উইকেট নেওয়া বোলারদের মধ্যে তিনি তৃতীয়, যিনি গড় ১৫-এর নিচে থেকে এই কীর্তি গড়েছেন। এর আগে শুধু এস.

এফ. বার্নস (১৯১২) ও ইমরান খান (১৯৮২) এমন নজির দেখিয়েছিলেন।

বুমরাহকে নিয়ে উইজডেন লিখেছে, ‘ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য ঘটনাবহুল এক বছরে, তাদের সাফল্য অনেকাংশেই; বরং বলা যায় প্রায় সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করেছিল একটি বিষয়ের ওপর: বুমরাহর হাতে বল ছিল কি না। খুব কম ক্রিকেটারই ২০২৪ সালে তার মতো করে এতটা প্রভাব বিস্তার করতে পেরেছে।’

নারী ক্রিকেটে ‘লিডিং ক্রিকেটার ইন দ্য ওয়ার্ল্ড’ হয়েছেন স্মৃতি মান্ধানা। গত বছর ওয়ানডে ফরম্যাটে চারটি ও অন্যান্য মিলিয়ে মোট পাঁচটি সেঞ্চুরি হাঁকান এই বাঁহাতি ওপেনার। পাশাপাশি, উইমেন্স প্রিমিয়ার লিগে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরকে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন করেছেন অধিনায়ক হিসেবে।

টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বছরের সেরা ক্রিকেটার হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের মারকুটে ব্যাটার নিকোলাস পুরান। এছাড়া উইজডেনের ‘বর্ষসেরা পাঁচ ক্রিকেটার’-এর তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন ইংল্যান্ডের গ্যাস অ্যাটকিনসন, জেমি স্মিথ, সোফি একলস্টোন, লিয়াম ডসন এবং ড্যান ওরাল।

প্রসঙ্গত, ১৮৬৪ সাল থেকে প্রতিবছর প্রকাশিত হয়ে আসা উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালমানাককে ক্রিকেট বিশ্বে তথ্যভিত্তিক সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ও মর্যাদাপূর্ণ প্রকাশনা হিসেবে ধরা হয়।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উইজড ন

এছাড়াও পড়ুন:

১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরের সাবেক পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে পানি জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) নোয়াখালীর চাটখিল থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এই মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।

আরো পড়ুন:

নাফিসা কামালসহ ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা

সাজিদ হত্যার তদন্তে সিআইডিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমোদন 

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে উল্লেখযোগ্য প্রমাণ পাওয়ায় নোয়াখালীর চাটখিল থানায় জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তিনি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে স্বল্প সময়ের জন্য ‘ব্যক্তিগত সহকারী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই দায়িত্বই তাকে আর্থিকভাবে লাভবান করেছে মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।

জসীম উদ্দিন খান জানান, ২০১০ সালে জাহাঙ্গীর ‘স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন করে বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা নেন। কিন্তু এর আড়ালে তিনি অসংখ্য সন্দেহজনক ব্যাংকিং কার্যক্রম করেন। কোম্পানির নামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক অঙ্কের টাকা জমা হয়, যার বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি ও ব্যবসার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।

সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টগুলোতে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ৫৬৫ কোটিরও বেশি টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ নগদে জমা হয়েছে দেশের নানা স্থান থেকে। এসব অর্থের উৎস অজানা এবং হুন্ডি ও মানিলন্ডারিং কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক প্রমাণ মেলে।

বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দীন জানান, জাহাঙ্গীর আলম তার স্ত্রী কামরুন নাহার ও ভাই মনির হোসেনের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অর্থ লেনদেন করতেন। জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ২০২৪ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং বর্তমানে ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করছেন। বিদেশে তাদের বিনিয়োগ বা সম্পদ ক্রয়ের কোনো সরকারি অনুমোদন না পাওয়া গেলেও তারা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণ মেলে।

অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী কামরুন নাহার, ভাই মনির হোসেন এবং প্রতিষ্ঠান স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড যৌথভাবে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করার স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন
  • ১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা