উইজডেনের বর্ষসেরা বুমরাহ ও স্মৃতি মান্ধানা
Published: 22nd, April 2025 GMT
ক্রিকেটের ‘বাইবেল’খ্যাত উইজডেন ক্রিকেটার্স তাদের ২০২৫ সংস্করণে ঘোষণা করেছে বছরের সেরা ক্রিকেটারদের নাম। এবার পুরুষ বিভাগে শীর্ষ স্বীকৃতি পেয়েছেন ভারতের তারকা পেসার জাসপ্রিত বুমরাহ। নারী বিভাগে এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার উঠেছে ভারতীয় ওপেনার স্মৃতি মান্ধানার হাতে।
পুরুষদের ক্ষেত্রে পুরস্কারটির আনুষ্ঠানিক নাম ‘উইজডেনস লিডিং ক্রিকেটার ইন দ্য ওয়ার্ল্ড’। ২০২৪ সালে দুর্দান্ত একটি বছর কাটিয়েছেন বুমরাহ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বল হাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে ভারতকে চ্যাম্পিয়ন করেছেন। টুর্নামেন্ট শেষে বুমরাহ হয়েছেন ‘প্লেয়ার অব দ্য টুর্নামেন্ট’।
শুধু সীমিত ওভারেই নয়, টেস্ট ফরম্যাটেও ছিলেন সমান ধারাবাহিক। ২০২৪ সালে তিনি ১৩ টেস্টে নিয়েছেন ৭১ উইকেট। ক্যালেন্ডার বছরে ৫০টির বেশি উইকেট নেওয়া বোলারদের মধ্যে তিনি তৃতীয়, যিনি গড় ১৫-এর নিচে থেকে এই কীর্তি গড়েছেন। এর আগে শুধু এস.
বুমরাহকে নিয়ে উইজডেন লিখেছে, ‘ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য ঘটনাবহুল এক বছরে, তাদের সাফল্য অনেকাংশেই; বরং বলা যায় প্রায় সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করেছিল একটি বিষয়ের ওপর: বুমরাহর হাতে বল ছিল কি না। খুব কম ক্রিকেটারই ২০২৪ সালে তার মতো করে এতটা প্রভাব বিস্তার করতে পেরেছে।’
নারী ক্রিকেটে ‘লিডিং ক্রিকেটার ইন দ্য ওয়ার্ল্ড’ হয়েছেন স্মৃতি মান্ধানা। গত বছর ওয়ানডে ফরম্যাটে চারটি ও অন্যান্য মিলিয়ে মোট পাঁচটি সেঞ্চুরি হাঁকান এই বাঁহাতি ওপেনার। পাশাপাশি, উইমেন্স প্রিমিয়ার লিগে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরকে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন করেছেন অধিনায়ক হিসেবে।
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বছরের সেরা ক্রিকেটার হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের মারকুটে ব্যাটার নিকোলাস পুরান। এছাড়া উইজডেনের ‘বর্ষসেরা পাঁচ ক্রিকেটার’-এর তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন ইংল্যান্ডের গ্যাস অ্যাটকিনসন, জেমি স্মিথ, সোফি একলস্টোন, লিয়াম ডসন এবং ড্যান ওরাল।
প্রসঙ্গত, ১৮৬৪ সাল থেকে প্রতিবছর প্রকাশিত হয়ে আসা উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালমানাককে ক্রিকেট বিশ্বে তথ্যভিত্তিক সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ও মর্যাদাপূর্ণ প্রকাশনা হিসেবে ধরা হয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উইজড ন
এছাড়াও পড়ুন:
সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে
সুদ পরিশোধে সরকারের ব্যয় বাড়ছে। এ ব্যয় বহন করতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাজেটে সরকারের সুদ পরিশোধ সংক্রান্ত পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে, আগামী বছরগুলোতে সুদ ব্যয় ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে।
পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের প্রায় ১৫ ভাগ অর্থই সুদ খাতে খরচ করতে হচ্ছে এখন। এ পরিস্থিতিতে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতেই ব্যয় করতে হবে চার লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। পাঁচ অর্থবছরের ব্যবধানে সুদ ব্যয় বাড়ছে ৩৩ শতাংশ। এর মধ্যে শতাংশের হিসাবে বৈদেশিক ঋণের সুদ ব্যয় সবচেয়ে বেশি বাড়বে।
অর্থ বিভাগের করা ‘মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি-২০২৫-২০২৬ থেকে ২০২৭-২০২৮’ এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হয়েছিল এক লাখ ১৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ খাতে সুদ ব্যয় ছিল ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় গেছে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা।
চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে (যা চলতি জুনের ৩০ তারিখে শেষ হয়ে যাবে) মূল বাজেটে সুদ খাতে ব্যয় বরাদ্দ ছিল এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বছর শেষে এই সীমায় সুদ ব্যয় ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। ফলে সংশোধিত বাজেটে এ খাতে ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয়েছে এক লাখ ২১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এ হিসাবের মধ্যে ছিল অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ব্যয় ৯৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং বিদেশী ঋণের ২২ হাজার কোটি টাকা।
একইভাবে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়েরও একটি প্রক্ষেপণ করেছে অর্থ বিভাগ। এই হিসেবে দেখা যায় আগামী ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হবে এক লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা (অভ্যন্তরীণ এক লাখ কোটি টাকা , বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় ২২ হাজার কোটি টাকা)। একইভাবে এর পরের অর্থবছর ২০২৬-২০২৭ অর্থবছরে একলাখ ৩৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা(অভ্যন্তরীণ এক লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের ২৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা) এবং ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়ের প্রক্ষেপণ করা হয়েছে ১ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, মোট সুদ ব্যয়ের সিংহভাগই অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ। অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে এক লাখ ২৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা গিয়ে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু মোট বাজেটের অনুপাতে অভ্যন্তরীণ সুদ পরিশোধের হার ২০২৩ -২০২৪ অর্থবছরে ১৬ দশমিক ২৯ শতাংশ থেকে কমে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশে হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ মোট সুদ ব্যয়ের তুলনায় কম, তবে এটি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ফলে এটি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ২৭ হাজার ১০০ কোটি টাকায় উন্নীত হতে পারে। মোট বাজেটের অনুপাতে বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ এ সময়কালে ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২ দশমিক ৭৬ শতাংশে উন্নীত হতে পারে।
বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধের কার্যকর ব্যবস্থাপনা শুধু আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্যই নয়, বরং এটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রক্ষা, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা, আন্তর্জাতিক ঋণমান বজায় রাখা এবং ভবিষ্যতের উন্নয়ন সম্ভাবনা সুরক্ষিত রাখার জন্য অপরিহার্য।