সৌদি আরব সফরে গেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গতকাল সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে মোদির বৈঠক হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। গত ৪০ বছরে এটিই কোনো ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রথম জেদ্দা সফর।

তাঁর এই সফরে দিল্লি ও রিয়াদের মধ্যে কমপক্ষে ছয়টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর হতে পারে।  ভারত ও সৌদি আরব রিফাইনারি ও পেট্রোকেমিক্যাল খাতে যৌথ প্রকল্প অন্বেষণ করছে বলে জানিয়েছেন মোদি। সৌদি আরব সফরের প্রথম দিনে মঙ্গলবার আরব নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। 

মোদি বলেন, ভারত ও সৌদি আরবের মধ্যে বিদ্যুৎ গ্রিড সংযোগসহ বিস্তৃত অঞ্চলে বিদ্যুৎ বিনিময়ের সম্ভাব্যতা নিয়ে এখন কাজ চলছে।  সৌদি আরব ভারতের অন্যতম প্রধান জ্বালানি সরবরাহকারী দেশ।  মোদির এ সফরকে দুই দেশের কৌশলগত সম্পর্ক আরও জোরদার করার পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। গত কয়েক বছরে ভারত ও সৌদি আরবের মধ্যে প্রতিরক্ষা, বিনিয়োগ ও সংস্কৃতি খাতে সহযোগিতা বেড়েছে। খবর রয়টার্সের।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ