ইয়েমেনে মার্কিন ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি হুতির, যুক্তরাষ্ট্রের হামলা অব্যাহত
Published: 23rd, April 2025 GMT
ইয়েমেনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে একটি মার্কিন ড্রোন ভূপাতিত করেছে বলে জানিয়েছে দেশটির সশস্ত্র সংগঠন হুতি। তাদের দাবি, ড্রোনটি হাজ্জাহ প্রদেশে হামলা চালানোর সময় সেটিকে ভূপাতিত করা হয়।
এদিকে হুতি মালিকানাধীন সংবাদমাধ্যম আল মাসিরাহ জানিয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার রাতে ইয়েমেনজুড়ে অন্তত তিন স্থানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
হুতি মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেন, সংগঠনটির ‘আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যুক্তরাষ্ট্রের একটি শত্রুভাবাপন্ন এমকিউ-৯ রিপার ড্রোন ভূপাতিত করেছে, যা হাজ্জাহর আকাশসীমায় হামলা চালাচ্ছিল।’
ইয়াহিয়া সারি বলেন, চলতি মাসে এটি হুতিদের ভূপাতিত করা সপ্তম মার্কিন ড্রোন। গাজায় ইসরায়েল জাতিনিধনমূলক যুদ্ধ শুরু করার পর থেকে ভূপাতিত করা ড্রোনগুলোর মধ্যে এটি ২২তম।
আল মাসিরাহর প্রতিবেদন বলছে, গতকাল রাতে লোহিত সাগরে কামরান দ্বীপে একাধিক বিমান হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়া পশ্চিম ইয়েমেনের আল সালিফ এলাকায় দুটি এবং উত্তরাঞ্চলীয় সা’দা প্রদেশের আল সালিম এলাকায় চারটি বিমান হামলা চালানো হয়।
মার্কিন বাহিনী মার্চ থেকে প্রায় প্রতিদিনই ইয়েমেনে ভয়াবহ হামলা চালাচ্ছে। তাদের দাবি, হুতিদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে এসব হামলা করা হচ্ছে। এসব হামলায় এখন পর্যন্ত ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এর মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে।
আরও পড়ুনহুতি কারা, কেন গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে বড় হামলা শুরু করলেন ট্রাম্প১৬ মার্চ ২০২৫মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন হুঁশিয়ারি দিয়েছে, হুতি সদস্যরা বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ জলপথ লোহিত সাগরে চলাচল করা জাহাজে হামলা বন্ধ না করা পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযান চলবে।
হুতি যুক্তরাষ্ট্রের এসব হামলাকে প্রত্যাখ্যান করেছে বলেছে, তারা গাজায় ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে জাহাজে হামলা চালাচ্ছে। ইসরায়েল সেখানে যুদ্ধ বন্ধ করলেই তারা এসব হামলা থামাবে।
ইয়েমেনের রাজধানী সানায় এক মার্কিন বিমান হামলায় ১২ জন নিহত হওয়ার কয়েক দিন পর দেশটিতে সবশেষ এই হামলাটি হলো।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেনের হোদেইদার বন্দর ও বিমানবন্দরে ১৩টি বিমান হামলা চালায়। এর তিন দিন আগে রাস ইসা বন্দরে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলায় কমপক্ষে ৮০ জন নিহত এবং ১৫০ জনেরও বেশি আহত হয়।
২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে হুতিরা ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে দাবি করে ১০০টিরও বেশি জাহাজে হামলা চালিয়েছে। সংগঠনটি বলেছে, এটা তারা করেছে গাজা যুদ্ধের প্রতিক্রিয়ায়।
আরও পড়ুনহুতিদের ওপর বড় ধরনের হামলা শুরু যুক্তরাষ্ট্রের১৬ মার্চ ২০২৫চলতি বছরের শুরুতে গাজায় দুই মাসের যুদ্ধবিরতির সময় হুতিরা এই হামলা বন্ধ রাখে। কিন্তু ইসরায়েল আবারও গাজায় আক্রমণ শুরু করলে সংগঠনটি জানায়, তারা আবার হামলা শুরু করবে।
হুতিদের এসব হামলার ফলে সুয়েজ খাল হয়ে আন্তর্জাতিক পণ্য পরিবহন কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। এই খাল দিয়ে সাধারণত বিশ্বের প্রায় ১২ শতাংশ বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচল হয়ে থাকে। কিন্তু সেখানে হুতিদের হামলার পর থেকে অনেক কোম্পানিকেই ব্যয়বহুল বিকল্প পথ হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ অব গুড হোপ ঘুরে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
আরও পড়ুনহুতিদের প্রতিটি গুলি এখন থেকে ইরানের অস্ত্র থেকে চালানো গুলি হিসেবে ধরা হবে: ট্রাম্প১৮ মার্চ ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ভ প ত ত কর ইসর য
এছাড়াও পড়ুন:
ছয় দফা দাবিতে ‘আমরা ভোলাবাসী’র আন্দোলন ‘সরকারি আশ্বাসে’ স্থগিত
ভোলায় গ্যাস ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের দাবিতে চলমান ছয় দফা আন্দোলন স্থগিত করেছে ‘আমরা ভোলাবাসী’। সরকারি আশ্বাসের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন নেতারা।
সংগঠনের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ও আমরা ভোলাবাসীর জ্যেষ্ঠ নির্বাহী সদস্য রাইসুল আলম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. এনামুল হক, বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মোতাসিন বিল্লাহ, ভোলা জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মোবাশ্বির উল্লাহ চৌধুরী, ভোলা আলিয়া মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মোবাশ্বিরুল হক নাঈম, ইসলামী আন্দোলনের ভোলা উত্তর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা তরিকুল ইসলাম, ভোলা সদর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মো. কামাল হোসেন ও আমরা ভোলাবাসীর সদস্যসচিব মীর মোশাররফ হোসেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ভোলার গ্যাস স্থানীয়ভাবে ব্যবহারের দাবিসহ ছয় দফা দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চলছে। সরকারের সঙ্গে একাধিক বৈঠকের মাধ্যমে দাবি আদায়ে অগ্রগতি হয়েছে।
আমরা ভোলাবাসীর দাবির মধ্যে রয়েছে, ভোলায় মেডিকেল কলেজ স্থাপন, বিদ্যমান ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসার সুবিধা নিশ্চিত করা, ভোলা–বরিশাল সেতু নির্মাণ, ঘরে ঘরে গ্যাস সরবরাহ, গ্যাসভিত্তিক শিল্পকারখানা স্থাপন ও নদীভাঙন প্রতিরোধ।
সংগঠনটি জানায়, আন্দোলনের আগে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটিতে মাত্র আট চিকিৎসক কর্মরত ছিলেন, বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ জন। আরও চিকিৎসক, নার্স ও যন্ত্রপাতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সরকার। মেডিকেল কলেজ স্থাপনের বিষয়ে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে নতুন মেডিকেল কলেজ হলে, সেটি ভোলায় হবে। ভোলা–বরিশাল সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রেও ফিজিবিলিটি স্টাডি ও নকশা সম্পন্ন হয়েছে এবং ২০২৬ সালের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
সার কারখানা ও ইপিজেড স্থাপনের জন্য জমি নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানিয়েছেন নেতারা। গ্যাস–সংযোগের বিষয়ে জানানো হয়, সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানিকে ডিমান্ড নোট জমা দেওয়া ২ হাজার ১৪৫ গ্রাহককে গ্যাস–সংযোগ দেওয়া হবে এবং ন্যায্যমূল্যে ২০ হাজার সিলিন্ডার বিতরণ করা হবে।
সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগামী দুই মাসের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে আবার কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।