চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে স্থানীয় এক বিএনপি নেতা ও বালুমহালের মালিকের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রবিউল হোসেনের বিরুদ্ধে। চাঁদা না পাওয়ায় আজ বুধবার দুপুরে রবিউলের লোকজন বালুমহালে হামলা চালিয়ে আটজনকে আহত করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের শাহমীরপুর এলাকার বলাকা ইন্টারন্যাশনাল বালুমহালের অফিসে এ ঘটনা ঘটে।

আহত ব্যক্তিরা হলেন বালুমহালের মালিক মোবিনুর রশীদ চৌধুরী (৪৫), তাঁর ভাই আমিনুর রশীদ চৌধুরী (৪৪), মোহাম্মদ নাছির (৪৫), মো.

হোসেন (৩৫), বালুমহালের ব্যবস্থাপক মো. লিটন (৫০), জাহাঙ্গীর আলম (৩৭), চালক মো. সাদ্দাম (৩০) ও রবি (৩৫)।

বালুমহালের মালিক মোবিনুর রশীদ চৌধুরী বড়উঠান ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি, তাঁর ভাই আমিনুর রশীদ চৌধুরী ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি এবং মোহাম্মদ নাছির ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলে জানা গেছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে বড়উঠান ইউনিয়নের দৌলতপুর এলাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারে গিয়ে বালুমহালের মালিক মোবিনুর রশীদ চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করেন আট-নয়জন যুবক। তাঁদেরকে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রবিউল হোসেন পাঠিয়েছেন জানিয়ে তাঁর সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলিয়ে দেন মোবিনকে। ওই সময় মুঠোফোনে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন রবিউল। চাঁদা না দিলে ব্যবসা করতে পারবেন না বলে হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।

মোবিনুর রশীদ চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ৫০-৬০ জন যুবক লাঠিসোঁটা নিয়ে বালুমহালে হামলা চালিয়ে অফিস ভাঙচুর করেন এবং লোকজনকে মারধর করেন। এ সময় হামলাকারীরা চাঁদা না দিলে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করার হুমকি দেন। ওই সময় আটজন আহত হন।

মোবিনুর রশীদ চৌধুরী আরও বলেন, ‘চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রবিউল হোসেন আমার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দেওয়ায় প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়েছেন তাঁর লোকজন।’

তবে অভিযোগটি পুরোপুরি অস্বীকার করে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রবিউল হোসেন বলেন, ‘এসব অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। আমি এ বিষয়ে অবগত নই, আমি বিষয়টি এইমাত্র শুনলাম।’

কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ শরীফ বলেন, ‘বালু বিক্রি নিয়ে দুই পক্ষের বিরোধ দেখা দেয়। এর জের ধরে এক পক্ষ হামলা চালায়। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

শিশু শিক্ষার্থীকে উত্ত্যক্ত, থানায় অভিযোগ করায় নানাকে কুপিয়ে হত্যা

মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলায় তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার ঘটনায় কয়েক বখাটের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন তার স্বজন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই ছাত্রীর নানা আজগর আলীকে (৬০) কুপিয়ে হত্যা করেছে স্থানীয়ভাবে বখাটে হিসেবে পরিচিত আল-আমিন নামে এক যুবক ও তার সহযোগীরা। গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার জয়মন্টপ ইউনিয়নের রায়দক্ষিণ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত আজগর আলী রায়দক্ষিণ গ্রামে একটি চায়ের দোকান চালাতেন। অভিযুক্ত আল-আমিন একই গ্রামের মৃত কালু প্রামাণিকের ছেলে।

পুলিশ, নিহতের পরিবার এবং স্থানীয় সূত্র জানায়, যে শিশুটিকে উত্ত্যক্ত করত বখাটেরা, তার মা পাঁচ বছর আগে মারা যান। মেয়েটি নানা আজগর আলীর বাড়িতে থেকে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে পড়ত। বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে শিশুটিকে প্রায় উত্ত্যক্ত এবং অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করত আল-আমিন। এ নিয়ে আজগর আলীসহ মেয়েটির স্বজন বেশ কয়েকবার প্রতিবাদ করলেও কোনো কাজ হয়নি। গত সোমবার মেয়েটির নানা আজগর আলী সিংগাইর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। মঙ্গলবার অভিযোগটি তদন্ত করার পর তা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়।    

এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয় আল-আমিন। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আল-আমিন চার থেকে পাঁচটি মোটরসাইকেলে করে সহযোগীদের নিয়ে আজগর আলীর চায়ের দোকানে যায়। তারা বৃদ্ধ আজগর আলীকে দোকান থেকে বের করে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও লাটিসোঠা দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। হামলাকারীরা চলে গেলে স্বজন ও প্রতিবেশীরা আজগর আলীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে রাতেই তাঁকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা আজগর আলীকে মৃত ঘোষণা করেন।

আজগর আলীর শ্যালক নজরুল ইসলাম জানান, মাদক সেবন, মাদক ব্যবসাসহ নানা অপরাধে জড়িত বখাটে আল-আমিন। 

সিংগাইর থানার ওসি তৌফিক আজম বলেন, নিহতের বড় ছেলে আইয়ুব খান বুধবার আল-আমিনকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন। ঘটনার পর থেকে আল-আমিন ও তার সহযোগীরা পলাতক। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ