প্রশিকা কর্মীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার, নেপথ্যে ম্যানেজারের কোটি টাকা
Published: 24th, April 2025 GMT
গাইবান্ধার ফুলছড়িতে হিরা খাতুন (৩৩) নামে প্রশিকা এনজিওর এক নারী কর্মীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুর ১টার দিকে উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের মদনের পাড়া গ্রামের একটি ভাড়া বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত হিরা খাতুন নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার বনগ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ে এবং প্রশিকার ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়ন শাখায় মাঠকর্মী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত হিরা খাতুন বুধবার এনজিও অফিসে কাজ শেষে বাসায় ফেরেন। বৃহস্পতিবার সকালে মোটর দিয়ে পানি তুলে গোসল করলেও তিনি অফিসে যাননি। সহকর্মীরা ও বাসার মালিক তার মোবাইলে একাধিকবার ফোন করলেও কোনো সাড়া মেলেনি। পরে তারা বাসার দরজায় ধাক্কাধাক্কি করে এবং জানালার ফাঁক দিয়ে মোবাইলের আলোতে দেখেন, তিনি রান্না ঘরের ধর্ণার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
খবর পেয়ে ফুলছড়ি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
বাসার মালিক শহিদুর রহমান জানান, “প্রশিকা মদনের পাড়া শাখার ম্যানেজার সুরেষ চন্দ্র বর্মণ গ্রাহকদের প্রায় কোটি টাকা নিয়ে গত রোজার ঈদের সময় থেকে পালিয়ে রয়েছেন। এরপর থেকে গ্রাহকরা হিরাসহ এনজিওর অন্যান্য কর্মীদের ওপর টাকা ফেরতের চাপ দিয়ে আসছিলেন।”
প্রশিকার বিভাগীয় ব্যবস্থাপক আনন্দ মোহন বলেন, “ম্যানেজার সুরেষ চন্দ্র ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার পর আর অফিসে আসেননি। গ্রাহকদের অভিযোগ থেকে আমরা জানতে পারি তিনি প্রায় কোটি টাকা নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। প্রমাণ সাপেক্ষে প্রত্যেক গ্রাহকের টাকা ফেরত দেওয়া হবে।”
তিনি আরও বলেন, “গ্রাহকের কাছে টাকা উত্তোলনের খাতায় শুধু ম্যানেজার সুরেষ চন্দ্রের স্বাক্ষর পাওয়া গেছে। হিরা খাতুন কেন আত্মহত্যা করেছেন, তা আমাদের জানা নেই।”
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সোহেল রানা সালু বলেন, “আমি কয়েকদিন ধরে শুনছি, ম্যানেজার সুরেষ চন্দ্র গ্রাহকদের টাকা নিয়ে পালিয়েছেন। সেই চাপেই হয়তো হিরা আত্মহত্যা করেছেন।”
ফুলছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার হাফিজুর রহমান বলেন, “খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/মাসুম/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
কালিয়াকৈরে বিএনপির কমিটি বাতিলের দাবিতে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ, ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে বিক্ষুব্ধদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। রবিবার (১৫ জুন) সকালে উপজেলার সাহেববাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
বিএনপির নেতা-কর্মীরা জানান, গত ১৪ জুন কালিয়াকৈর উপজেলা, পৌরসভাসহ জেলার আটটি ইউনিটের কমিটি বাতিল করে গাজীপুর জেলা বিএনপি। তৃণমূল নেতাকর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বৈঠক করে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি। পরে শনিবার (১৪) সন্ধ্যায় কালিয়াকৈর উপজেলা ও পৌরসভার কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই কমিটিতে উপজেলার বিএনপির আহ্বায়ক করা হয়েছে মৌচাক ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম সিকদার, সদস্য সচিব করা হয়েছে এম আনোয়ার হোসেনকে। কালিয়াকৈর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক করা হয়েছে মামুদ সরকার ও সদস্য সচিব করা হয়েছে মহসিন উজ্জামানকে।
উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক পারভেজ আহমেদ গ্রুপ কমিটি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন । আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে শনিবার (১৪ জুন) রাতেই বিক্ষোভ মিছিল করে নেতাকর্মীরা। জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ইশরাক আহমেদ সিদ্দিকীর অনুসারীদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন পারভেজ গ্রুপের কর্মীরা।
একই দাবিতে রবিবার (১৫ জুন) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী পারভেজ আহমেদের পক্ষ নিয়ে আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করে। এ সময়ে নতুন কমিটির পক্ষ থেকে আরেকটি মিছিল বের হলে উভয়ের মধ্যে ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া হয়।
পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে বিক্ষুব্ধদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে এলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। তবে এখনো এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আতঙ্কে রয়েছেন এলাকাবাসী।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান জানান, সকাল থেকে ধাওয়া- পাল্টা ধাওয়া হলেও এখনো পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
ঢাকা/রেজাউল/বকুল