সোনারগাঁয়ে জামায়াতে ইসলামীর গণসংযোগ
Published: 25th, April 2025 GMT
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ সনমান্দী ইউনিয়নের জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে গণসংযোগ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। কর্মসূচি চলাকালীন সাধারণ মানুষের ঢল লক্ষ্য করা গেছে।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সকালে উপজেলার সনমান্দী ইউনিয়নের সনমান্দী বাজার, সনমান্দী গ্রামের বিভিন্ন মহল্লায় গণসংযোগ কর্মসূচি করা হয়। শেষে সনমান্দী বাজারে সংক্ষিপ্ত পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন জামায়াতে ইসলামী সোনারগাঁ উপজেলা সেক্রেটারি (দক্ষিণ) আসাদুল ইসলাম আসাদ।
কর্মসূচিতে সমমনা রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, ব্যবসায়ী- দোকানদার ও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের কাছে দাওয়াত দেওয়ার পাশাপাশি ভিন্ন ধর্মাম্বলীর মানুষের মাঝে ব্যাপক দাওয়াতি কাজ করা হয়।
দাওয়াতি গণসংযোগ কার্যক্রমের সময় হ্যান্ডমাইকে জামায়াতের লক্ষ্য উদ্দেশ্য ছাড়াও ৩ দফা দাওয়াত ও ৪ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এতে করে এই কর্মসূচিতে উৎসুক জনতার ভিড় লক্ষ্য করা যায়।
গণসংযোগে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সাখাওয়াত হোসেন শওকত, সনমান্দী ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি মাওলানা মুমিন,সেক্রেটারি হাফেজ মোহাম্মদ বিল্লাল হোসাইন,সহসভাপতি আর্মী সাত্তার,সনমান্দী ইউনিয়ন ৫নং ওয়ার্ড সভাপতি আমির হামজা,সনমান্দী ইউনিয়ন শিক্ষা বিষয়ক প্রধান ওসমান প্রমুখ।
গণসংযোগ কর্মসূচিতে জামায়াতের পক্ষ থেকে জামায়াতের পরিচিত ফরম ও পুস্তিকা বিতরণ করা হয়।
পথসভায় বক্তরা বলেন, আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠা করা কোন রাজনীতি নয় এইটা সকলের দায়িত্ব আর জামায়াত ইসলাম যেহেতু এই কাজটি করছে তাই জামাত ইসলামের পক্ষে এসে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কে বিজয়ী করার জন্য তিনি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের মানুষ এখন সৎ, দক্ষ ও যোগ্য নেতৃত্বের অপেক্ষায় আছে। গণ মানুষের সেই আকাংখা পূরণের জন্য জামায়াতে ইসলামীকে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করতে হবে।
এ সময় দলীয় পরিচিতি, নারায়ণগঞ্জ-৩, সোনারগাঁ আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী ড.
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স ন রগ ও ব ল দ শ জ ম য ত ইসল ম ন র য়ণগঞ জ গণস য গ ক ইসল ম র সনম ন দ স ন রগ
এছাড়াও পড়ুন:
কারখানার বর্জ্যে মরছে নদ
ডাইং কারখানার বর্জ্যে মরছে ব্রহ্মপুত্র নদ। প্রকাশ্যে এ দূষণ ঘটলেও দেখার কেউ নেই। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ ভুক্তভোগীদের। পরিবেশ কর্মকর্তা চাইছেন সুনির্দিষ্ট প্রমাণসহ অভিযোগ।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার ও নরসিংদী সদর উপজেলায় অন্তত ৬০টি ডাইং কারখানা ব্রহ্মপুত্র দূষণের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। নদের তীরে অবস্থিত এসব কারখানায় এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ইটিপি) থাকলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই প্রতিদিন নদে ফেলছে। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এ নদের সঙ্গে সম্পর্কিত মানুষজন।
অভিযোগ রয়েছে, নদের তীরে অবস্থিত কারখানাগুলো ইটিপি রাখলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ফেলছে। অনেক কারখানায় ইটিপি থাকলেও খরচ কমাতে বেশির ভাগ সময় তা বন্ধ রাখা হয়। এ ছাড়া বেশকিছু কারখানার ইটিপি প্রয়োজনের তুলনায় ছোট হওয়ায় সঠিকভাবে বর্জ্য পরিশোধন করা সম্ভব হয় না।
পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, নরসিংদী সদর উপজেলায় রয়েছে ছোট-বড় ৫০টি ডাইং কারখানা। আড়াইহাজারে স্পিনিং মিলসহ ডাইং কারখানা রয়েছে অন্তত ১০টি। নরসিংদীর ডাইং কারখানাগুলোর মধ্যে পাঁচদোনা এলাকার আবদুল্লাহ ডাইং ইন্ডাস্ট্রিজ, বাঘহাটা এলাকার ফাইভ অ্যান্ড ফাইভ ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং, সাজেদা ডাইং, আনোয়ার ডাইং, শতরূপা ডাইং, রুকু ডাইং, মেসার্স একতা ডাইং, কুড়েরপাড় এলাকার ব্রাদার্স টেক্সটাইল, ইভা ডাইং, ভগীরথপুর এলাকার এম এমকে ডাইং, নীলা ডাইং, এইচ এম ডাইং, মা সখিনা টেক্সটাইল, মুক্তাদিন ডাইং, পাঁচদোনা এলাকার তানিয়া ডাইং, সান ফ্লাওয়ার টেক্সটাইল প্রভৃতি।
আড়াইহাজারের কয়েকটি কারখানা হলো– ভাই ভাই স্পিনিং মিলস, ছাবেদ আলী স্পিনিং মিল, রফিকুল ডাইং, দিপু ডাইং ও হাজী হাবিবুর ডাইং।
আড়াইহাজার পৌরসভার চামুরকান্দি এলাকার বাসিন্দা মিয়াজউদ্দিন মিয়া বলেন, দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে নদটি। দেশীয় জাতের মাছের অভয়াশ্রম এ নদ থেকে মাছ হারিয়ে গেছে।
আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার ইসমাইল হোসেন জানান, রফিকুল ডাইংয়ের বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে। এতে পানির রং কালচে হয়ে গেছে। একই অবস্থা অন্য কারখানাগুলোর। বর্জ্য নদে ফেলার বিষয়ে স্থানীয়রা কথা বলতে গিয়ে উল্টো কারখানা কর্তৃপক্ষের হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
রফিকুল ডাইংয়ের মালিক রফিকুল ইসলাম জানান, তাদের ইটিপি নেই। ডাইংয়ের পানি তারা নির্দিষ্ট পানির ট্যাংকে রাখেন, সরাসরি নদে ফেলেন না। ট্যাংকে জমানো পানি কোথায় ফেলেন জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী সদর উপজেলার শিলমান্দী ইউনিয়নের গনেরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মাহবুব হাসান শুভর ভাষ্য, কুড়েরপাড় এলাকার ডাইং কারখানাগুলোর রং মেশানো বর্জ্য পরিশোধন না করে ব্রহ্মপুত্রে ফেলায় নদটি এখন মৃতপ্রায়। দূষণের কারণে দুর্গন্ধে এর পারে দাঁড়ানো যায় না। স্থানীয়রা অনেকবার প্রতিবাদ করেও প্রতিকার পাননি বলে জানান তিনি।
গত ১৫ এপ্রিল শিলমান্দী ইউনিয়নের কুড়েরপাড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ইভা ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং লিমিটেড নামে একটি কারখানা থেকে বর্জ্য এসে পড়ছে নদের পানিতে। ভিডিও করতে দেখে কারখানা কর্তৃপক্ষ বর্জ্য ফেলা বন্ধ করে দেয়।
ইভা ডাইংয়ের ইটিপি ইনচার্জ রেজাউল করিম জানান, বিভিন্ন মহলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে তারা প্রতিষ্ঠানটি চালাচ্ছেন। অনেক কারখানা সরাসরি নদে বর্জ্য ফেললেও তারা নদ দূষণ করেন না।
একই এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ফাতেমা ডাইংসহ ব্রহ্মপুত্রের তীরে গড়ে ওঠা কারখানাগুলো থেকেও নদে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। কিন্তু এ নিয়ে এসব কারখানার কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপসহকারী পরিচালক কামরুজ্জামান জানান, নদে বর্জ্য ফেলার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারেক বাবু জানান, ব্রহ্মপুত্রে নদে সরাসরি বর্জ্য ফেলছে ডাইংসহ যেসব কারখানা সেসবের অধিকাংশই নরসিংদী জেলার অন্তর্গত। তাই নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে নদ দূষণমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
আড়াইহাজারের ইউএনও সাজ্জাত হোসেন বলেন, কখনও কখনও কিছু কারখানা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ছেড়ে দেয়। কোন কারখানা নদ দূষণ করছে, স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশবাদী সংগঠন তা জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।