বগুড়ায় ছাত্র অধিকার পরিষদ ছেড়ে ১৩ নেতা-কর্মী যোগ দিলেন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদে
Published: 26th, April 2025 GMT
বাংলাদেশ গণ অধিকার পরিষদের ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ থেকে পদত্যাগ করে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদে যোগ দিয়েছেন বগুড়ার ১৩ নেতা-কর্মী। গতকাল শুক্রবার বিকেলে শহরের একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাঁরা আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন সংগঠনে যোগ দেন।
নতুন সংগঠনে যোগ দেওয়া নেতা-কর্মীদের মধ্যে আছেন জেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের সহসভাপতি জাকারিয়া ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈকত আলী, শাজাহানপুর উপজেলা শাখার সভাপতি মারুফ হোসেন, নন্দীগ্রাম উপজেলার সভাপতি গৌরব সরকার ও সরকারি আজিজুল হক কলেজ শাখার যুগ্ম সদস্যসচিব আফ্রিদি হাসান। অনুষ্ঠানে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের বগুড়া জেলার সংগঠক এ এম জেড শাহরিয়ার বলেন, ছাত্রসংসদে যোগদানের মাধ্যমে নতুনেরা দক্ষতা ও নেতৃত্বের প্রতিফলন ঘটানোর সুযোগ পাবেন।
পদত্যাগের কারণ ব্যাখ্যা করে ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক সহসভাপতি জাকারিয়া ইসলাম বলেন, ছাত্র অধিকার পরিষদ একটি লেজুড়বৃত্তিক সংগঠন। সেখানে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ নেই। গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ একটি স্বতন্ত্র সংগঠন, এখানে নেতৃত্ব ও গণতন্ত্রচর্চার সুযোগ আছে।
এ বিষয়ে ছাত্র অধিকার পরিষদের বগুড়া জেলা কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, সংগঠনের কিছু নেতা-কর্মী পদত্যাগ করলেও সংগঠনের ওপর এর কোনো প্রভাব পড়বে না।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স গঠন
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের
ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।
এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।
এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।
সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।
আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।
শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।
পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’