রাজধানীর উত্তরায় রেললাইনে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় নবদম্পতি নিহত হয়েছেন।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টার দিকে কোর্টবাড়ি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন মাসুম মিয়া (২৫) ও ইতি খাতুন (১৯)।

মুমূর্ষু অবস্থায় মাসুমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক রাত ৮টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন। আর ঘটনাস্থলেই মারা যান ইতি।

আরো পড়ুন:

সড়ক দুর্ঘটনায় ঝালকাঠি জেলা পরিষদের প্রকৌশলী নিহত

রাঙামাটিতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বেড়ে ৬

মাসুম মিয়াকে হাসপাতালে নিয়ে আসা শুভ নামে নামের এক ব্যক্তি জানান, উত্তরা পূর্ব থানার আট নম্বর সেক্টরের শেষ মাথায় রেল ক্রসিংয়ে তারা রেললাইন দিয়ে হাঁটছিলেন এবং সেলফি তুলছিলন। এ সময় একটি ট্রেন ঢাকার দিকে এবং একটি ট্রেন টঙ্গীর দিকে যাচ্ছিল। ওই ট্রেন দুটি সন্ধ্যা ৬টার দিকে ক্রসিং করার সময় টঙ্গীগামী ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই ইতি মারা যান। আর গুরুতর আহত অবস্থায় মাসুম মিয়াকে প্রথমে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঢাকা রেলওয়ের বিমানবন্দর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ আলী জানান, সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে উত্তরা কোর্টবাড়ি এলাকার রেললাইনে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলছিলেন ওই নবদম্পতি। তখন কমলাপুর থেকে ছেড়ে যাওয়া যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনের সাথে ধাক্কা লাগে তাদের। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন স্ত্রী। আর পথচারীরা তার স্বামীকে হাসপাতালে নিয়ে যান।

তিনি জানান, নববধূর মরদেহ ঘটনাস্থল থেকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। মাসুম মিয়ার পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে, তার পরিবার এলে আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জানান, কয়েকদিন আগে তারা প্রেমের সম্পর্ক করে পরিবারের অমতে বিয়ে করে। মাসুম মিয়ার বাড়ি নেত্রকোনা এলাকায় এবং ইতির বাড়ি ময়মনসিংহ এলাকায়। তারা দুজনে ঢাকায় এসে বিয়ে করে এবং দক্ষিণখান থানা এলাকায় ভাড়া থাকত।

ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) মো.

ফারুক জানান, কয়েকজন পথচারী মাসুম মিয়া নামের এক যুবককে হাসপাতালে নিয়ে আসে। এরপর চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঢাকা/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক দ র ঘটন পর ব র র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

ফুটবলার প্রতিমা এগিয়ে যাচ্ছেন, পাশে আছে কিশোর আলোসহ অনেকে

একটি পরিবারের ওপর নেমে আসা অপ্রত্যাশিত চাপ আর হতাশাকে দূর করেছে একটি সংবাদ। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড় প্রতিমা মুন্ডার পড়াশোনা ও খেলাধুলা থমকে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল মাত্র ৪৭ হাজার টাকার জন্য। প্রথম আলোয় প্রতিবেদন প্রকাশের পর মিলেছে সহযোগিতা, পরিশোধ হয়ে গেছে বিকেএসপির বকেয়া।

এতে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন প্রতিমার মা সুনিতা মুন্ডা। তাঁদের ওপর থেকে নেমে গেছে বড় ধরনের আর্থিক চাপ।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেএসপি প্রতিমার অভিভাবককে পাঠানো চিঠিতে জানিয়েছিল, তাঁদের মেয়ের বকেয়া বেতন ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা। সেই চিঠিতেই সতর্ক করে বলা হয়, ছয় মাসের বেশি বেতন বকেয়া থাকলে চূড়ান্ত সতর্কীকরণ, আর ১২ মাসের বেশি বকেয়া থাকলে বহিষ্কারের বিধান আছে। অর্থাভাবে যখন অনিশ্চিত হয়ে উঠেছিল প্রতিমার ভবিষ্যৎ, ঠিক সেই সময় ১১ অক্টোবর প্রথম আলোয় প্রকাশিত হয় তাঁদের পরিবারের সংগ্রামের গল্প।

আরও পড়ুনবকেয়া বেতন চেয়ে বিকেএসপির চিঠি, ফুটবলার প্রতিমার পড়াশোনা বন্ধের পথে ১১ অক্টোবর ২০২৫

প্রতিবেদনটি পাঠকের হৃদয়ে নাড়া দেয়। কিশোর আলোর পক্ষ থেকে প্রতিমার বকেয়া পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই দিনই বিকেলে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে গিয়ে প্রথম আলোর সাতক্ষীরার নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি প্রতিমা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে নেওয়া হয় এই উদ্যোগ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ব্যবসায়ী সহায়তা করেন আরও ১০ হাজার টাকা। তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপা রানী সরকার দেন পাঁচ হাজার টাকা ও একটি ফুটবল।

সহায়তা পেয়ে স্বস্তি ফিরেছে পরিবারে। মুঠোফোনে প্রতিমা বলেন, ‘এখন আর কোনো অনিশ্চয়তা নেই। বিকেএসপির পাওনা ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা পরিশোধ করে দিয়েছি। আমি ভালো আছি, মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা আর অনুশীলন করছি।’

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার প্রতিমা মুন্ডা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে কিশোর আলোর পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়

সম্পর্কিত নিবন্ধ