ষড়যন্ত্রের পরও মাজারে হামলা বন্ধের দাবিতে ‘সমাবেশ সফল’
Published: 27th, April 2025 GMT
‘পতিত সরকারের দোসর’ ট্যাগ দিয়ে ঢাকায় সুন্নী মহাসমাবেশ বানচালের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে দাবি করে আধিপত্যবাদ-বিরোধী মুসলিম ঐক্য মঞ্চের উদ্যোক্তারা বলেছেন, ব্যাপক অপপ্রচারের পরও রোহিঙ্গাসহ ফিলিস্তিন, ভারতের নিপীড়তি মুসলিম বিশ্বের পক্ষে সংহতি মহাসমাবেশ অত্যন্ত সফল ও সার্থক হয়েছে।
রবিবার (২৭ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে এসে এসব তথ্য তুলে ধরেন ২৬ এপ্রিলের মহাসমাবেশের উদ্যোক্তরা।
তারা বলেছেন, মহাসমাবেশ বানচাাল করতে চেয়েছিল স্বার্থান্বেষী একটি মহল। পথে পথে বাধা, হুমকি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক অপপ্রচারের পরও দেশের সুন্নী জনতা এই মহাসমাবেশে যোগ দিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সৈয়দ মুহাম্মদ হাসান আল আযহারী। তিনি বলেন, “আমাদের মধ্যে সাবেক সরকারের কোনো দোসর নেই, সমাবেশে উপস্থিতি হওয়াদের মধ্যেও দোসর ছিলেন না।”
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সৈয়দ সাইফুল ইসলাম বারী, শফিক আল মোজাদ্দেদী, আব্দুল মুস্তফা রাহিম আযহারী, ইমরান হুসাইন তুষার ও সৈয়্যদ গোলাম আজহারী।
স্বাধীন ফিলিস্তিনের স্বীকৃতি দাবি করে সংবাদ সম্মেলনে হাসান আযহারী বলেন, “গাজার মানুষের মুক্তি চাই। গাজায় চলমান গণহত্যার যথাযোগ্য বিচার চাই। আমরা ইন্ডিয়ায় মুসলমানদের নাগরিক অধিকার চাই। ইন্ডিয়ায় মুসলমানদের মাজার-দরগাহ-খানকাহয় মোদি সরকারের হামলার প্রতিবাদ করি। আমরা ভারতে অসাংবিধানিক ওয়াকফ বিল বাতিল চাই।”
“আমরা নিরাপদে রোহিঙ্গাদের নিজ বাসভূমিতে প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করার দাবি জানাই। আমরা জুলাইয়ে আন্দোলনে রোহিঙ্গা শহীদ নূর মোস্তফার সম্মানের সহিত রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চাই। আমরা বাংলাদেশে শান্তিপ্রিয় মুসলমানদের মাজার-দরগায় হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানাই ও এর যথাযথ প্রতিকার দাবি করছি,” যোগ করেন হাসান আযহারী।
বিগত ১৫ বছরের স্বৈরাচারী জুলুম নির্যাতনে শহীদ নুরুল ইসলাম ফারুকী, বিশ্বজিৎ দাশ, শহীদ আবরার ফাহাদ, আ্যডভোকেট আলিফ, জুলাই আন্দোলনের শহীদ আবু সাঈদ, মুগ্ধ, ওয়াসিম, ইয়ামিনসহ সব শহীদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে এসব হত্যাকাণ্ডের যথাযোগ্য বিচার দাবি করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
শনিবারের (২৬ এপ্রিল) সমবাশে নিয়ে হাসান আযহারী বলেন, “আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, ফিলিস্তিন, ইন্ডিয়া ও রোহিঙ্গাসহ নিপীড়িত মুসলিম বিশ্বের পক্ষে সংহতি সমাবেশ হয়েছে আধিপত্যবাদবিরোধী মুসলিম ঐক্য মঞ্চের আয়োজনে।”
“বৃহত্তর ঐক্যের স্বার্থে সব ধরনের প্রোপাগান্ডা ও ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করে দিয়ে আধিপত্যবাদ ও জুলুমের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান ও বাংলাদেশ পুনর্গঠনে আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে," যোগ করেন তিনি।
সুন্নীদের মধ্যে কোনো বিভেদ নাই দাবি করে সৈয়দ সাইফুল ইসলাম বারী বলেন, “সুন্নী কমিউনিটির অনেক দরবার, পীর মাশায়েখ, সংগঠন ও সংগঠক বৃহত্তর ঐক্যের স্বার্থে আমাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আধিপত্যবাদবিরোধী মুসলিম ঐক্য মঞ্চের ব্যানারে একত্রিত হয়ে সকল প্রকার জুলুমের বিরুদ্ধে মজলুমের পক্ষে একত্রিত হয়ে আমাদের আয়োজনকে বেগবান করতে আন্তরিক শ্রম দিয়েছেন- প্রত্যেকের কাছে আমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি। সুন্নী কমিউনিটি ২৬ এপ্রিল যুগান্তকারী ইতিহাস রচনা করেছে। ২৬ সবার। রেসালতের স্পৃহায় উদ্বেলিত প্রত্যেক আশিকে রাসুলের ২৬ এপ্রিল।"
আব্দুল মুস্তফা রাহিম আযহারী বলেন, “এই আয়োজনের পেছনে প্রশাসনিক অনুমতি, মাঠপর্যায়ের কাজ, অনলাইন প্রচার, উপস্থিত বাংলাদেশ পীর মাশায়েখ আলেম-ওলামা, সংগঠক এবং বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল, কলেজ, মাদরাসার অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, পেশাজীবী বিশেষত দরবারে সিরিকোট, শর্ষিণা, মাইজভান্ডার, গুরুছাড়, মির্জাখিল, শাহপুর, সোনাকান্দা, সিরাজনগর, ফুলতলী, ফান্দাউক, খাব্দুরা, এনায়েতপুর, অলিতলা, জৈনপুর, আটরশি, শম্ভুগঞ্জ, কুতুবিয়া মাতুআইল, কুতবদিয়া মালেক শাহ, দরবারে হাশেমীয়া, আল আমিন বারিয়া, মহুরীখোলা, মিরসরাই লতিফিয়া, মমতাজিয়া, মদিনার জামাত, কামাল্লা, কচুয়া দরবারসহ আপামর সুন্নী জনতার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।”
সময় স্বল্পতার দরুন প্রয়োজনীয় আয়োজনের ব্যবস্থা নিতে না পারায় উপস্থিত পীর-মাশায়েখ ও আলেম-ওলামাসহ সম্মানিত ব্যক্তিদের যথার্থ আতিথেয়তা ও সম্মান দেখাতে না পারায় সংবাদ সম্মেলনে দুঃখ প্রকাশ করেন সমাবেশের অন্যতম উদ্যোক্তা শফিক আল মোজাদ্দেদী ও ইমরান হুসাইন তুষার।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাসেল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র দরব র
এছাড়াও পড়ুন:
আসামে বিস্ফোরণের ষড়যন্ত্র মামলায় পরেশ বড়ুয়াসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র
ভারতের আসামে গত বছর একাধিক ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) বিস্ফোরণ ঘটানোর ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে উলফা (আই) নেতা পরেশ বড়ুয়াসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে জাতীয় তদন্ত সংস্থা এনআইএ। সংস্থাটি শনিবার গুয়াহাটির আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়।
পরেশ বড়ুয়া নিষিদ্ধঘোষিত বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসামের (ইনডিপেনডেন্ট ) চেয়ারম্যান এবং স্বঘোষিত কমান্ডার ইন চিফ। চার্জশিটভুক্ত অন্য দুজন হলেন অভিজিৎ গগৈ ও জাহ্নু বড়ুয়া।
গত বছর আসামে স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন ব্যাহত করতে গুয়াহাটির দিসপুর লাস্ট গেটে একাধিক আইইডি পুঁতে রাখা হয়েছিল। এর সঙ্গে এই তিনজনের যোগসূত্র পাওয়া গেছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে এ ঘটনা তদন্তের ভার নেয় এনআইএ।
এনআইএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হতাহত করা, সম্পত্তি ধ্বংস করা, ভারতের ঐক্য ও অখণ্ডতা এবং সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি তৈরি এবং মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ানোর উদ্দেশ্যে আইইডি স্থাপন করা হয়েছিল।