পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলায় ধর্ষণের শিকার কলেজছাত্রীর আত্মহত্যার বিষয়টি মানতে পারছেন না স্বজনরা। তার শোকে কাঁদে কাঁদতে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন মা ও ছোট বোন। গত রোববার রাতে পাঙ্গাসিয়া গ্রামে জুলাই আন্দোলনে শহীদ বাবা জসিম হাওলাদারের কবরের পাশে মেয়েটিকে দাফন করা হয়। এরপর অসুস্থ হয়ে পড়ায় সে রাতেই মেয়েটির মা ও তার বোনকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শহীদকন্যার মামা বলেন, ‘ভাগনির মৃত্যুতে তার মা-বোন মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। কাঁদতে কাঁদতে অচেতন হয়ে পড়ছে তারা। তাকে দাফনের পর আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় রোববার রাত ১২টার দিকে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসক জানিয়েছেন, ওষুধ খেলে ঠিক হয়ে যাবে। আমি তাদের সঙ্গে হাসপাতালে আছি। শহীদকন্যার আরেক ছোট ভাই আছে। তার বয়স মাত্র ১৭ মাস।’

পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত ১১৪ নম্বর কেবিনে চিকিৎসাধীন রয়েছে মেয়েটির মা ও তার বোন। সোমবার দুপুরে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, বেডে শুয়ে আছেন তারা। দু’জন তখনও কাঁদছেন।

চিকিৎসক মশিউর রহমান বলেন, শহীদকন্যার মা ও বোনের তেমন কোনো অসুখ নেই। তবে শোকে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় তারা শারীরিকভাবে একটু দুর্বল হয়ে পড়েছেন। তাদের যথাযথ চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। আশা করি, দু-একদিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে তারা বাড়ি ফিরতে পারবেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ১৯ জুলাই রাজধানীর মোহাম্মদপুরে গুলিবিদ্ধ হন জসিম হাওলাদার। তিনি একটি এনজিওর গাড়িচালক ছিলেন এবং শেখেরটেকে স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে বাস করতেন। গুলি লাগার ১১ দিন পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জসিম মারা যান। তাঁকে গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়। ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় বাবার কবর জিয়ারত করে কাছেই নানাবাড়িতে ফিরছিল তার বড়মেয়ে। এ সময় স্থানীয় সোহাগ মুন্সীর ছেলে সিফাত মুন্সী (১৯) ও একই এলাকার এক কিশোর (১৭) তাকে ধর্ষণ করে। গ্রেপ্তারের পর দু’জনেই ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। এর মধ্যে গত শনিবার রাতে শেখেরটেকের ভাড়া বাসায় আত্মহত্যা করে মেয়েটি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স স থ হয়

এছাড়াও পড়ুন:

সুন্দরবনের মধুসহ ২৪ পণ্য পেল জিআই সনদ

মণিপুরি শাড়ি, গামছা, লিচু, আম, মধুসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ২৪টি পণ্যকে জিআই (ভৌগোলিক নির্দেশক) নিবন্ধন সনদ দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সভায় এই সনদ দেওয়া হয়। শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। 

সভায় শিল্প সচিব ওবায়দুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচক ছিলেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। মেধাসম্পদ দিবসের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শিল্পী, অভিনেত্রী ও সংগীত পরিচালক আরমিন মুসা। 

সভায় শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, দেশের প্রথম পণ্য হিসেবে জিআই স্বীকৃতি পেয়েছে জামদানি শাড়ি। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৫৫টি পণ্য জিআই স্বীকৃতি পেল। জিআই পণ্য দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে লালন করে। এই পণ্যের বাজারজাতকারীদের ন্যায্য স্বীকৃতি এবং পারিশ্রমিক নিশ্চিত করতে হবে। ফলে স্থানীয় উদ্যোক্তা বা উৎপাদনকারীদের ক্ষমতায়ন হবে।

এ সময় তিনি জিআই পণ্যের তালিকা সমৃদ্ধ করার পর সেগুলো বাণিজ্যিকভাবে বিকশিত করার আহ্বান জানান। 

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক উৎসব গান। এ দেশের মানুষ গানের মাধ্যমে ভাব প্রকাশ করে, যা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে আছে। সংগীত নিয়ে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় বড় প্রকল্পের কাজ করছে। দেশের মানুষ কিছু দিনের মধ্যে তা দেখতে পাবে। সংগীতের কপিরাইট নিশ্চিত করতে হবে। 

নিবন্ধন সনদপ্রাপ্ত ২৪টি ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হলো– নরসিংদীর লটকন, মধুপুরের আনারস, ভোলার মহিষের দুধের কাঁচা দই, মাগুরার হাজরাপুরী লিচু, সিরাজগঞ্জের গামছা, সিলেটের মণিপুরি শাড়ি, মিরপুরের কাতান শাড়ি, ঢাকাই ফুটি কার্পাস তুলা, কুমিল্লার খাদি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছানামুখী মিষ্টি, গোপালগঞ্জের ব্রোঞ্জের গয়না, সুন্দরবনের মধু, শেরপুরের ছানার পায়েস, সিরাজগঞ্জের লুঙ্গি, গাজীপুরের কাঁঠাল, কিশোরগঞ্জের রাতাবোরো ধান, অষ্টগ্রামের পনির, বরিশালের আমড়া, কুমারখালীর বেডশিট, দিনাজপুরের বেদানা লিচু, মুন্সীগঞ্জের পাতক্ষীর, নওগাঁর নাকফজলি আম, টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের জামুর্কির সন্দেশ এবং ঢাকাই ফুটিকার্পাস তুলার বীজ ও গাছ। 

সভায় এসব জিআই সনদ বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড, সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসক ও নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার নাকফজলি আমচাষি সমবায় সমিতির কাছে হস্তান্তর করা হয়। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ