আবার প্রোগ্রাম করা যায়, এমন মস্তিষ্কের কোষ তৈরি করছেন বিজ্ঞানীরা
Published: 29th, April 2025 GMT
প্রথমবারের মতো আবার প্রোগ্রাম করা যায়, এমন মস্তিষ্কের কোষ তৈরি করছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, আরভিনের বিজ্ঞানীরা। এই কোষের মাধ্যমে মস্তিষ্কের বিভিন্ন রোগের মধ্যে আলঝেইমার চিকিৎসায় নতুন সুযোগ তৈরি হতে পারে। বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, এসব কোষ মস্তিষ্কের রোগাক্রান্ত কোষের অবস্থা শনাক্ত করতে পারে এবং সেগুলো পরিষ্কার করতে পারে। আপাতত বিজ্ঞানীরা ইঁদুরের স্মৃতি ও মস্তিষ্কের কার্যকারিতা পুনরুদ্ধার করতে পারে, এমন কোষ নিয়ে পরীক্ষা করছেন।
আবার প্রোগ্রাম করা কোষ সুস্থ টিস্যুর ক্ষতি না করেই মস্তিষ্কের ত্রুটি বা রোগ সারাতে সক্ষম। নতুন কোষ মস্তিষ্কের প্রদাহ কমিয়ে ইঁদুরের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়াতে সহযোগিতা করেছে। নতুন এই কৌশল ব্যবহার করে মস্তিষ্কের ক্যানসার, মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস ও বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার সুযোগ তৈরি হতে পারে।
আরও পড়ুনমানুষের মস্তিষ্ক কতটা দ্রুত কাজ করে২৬ ডিসেম্বর ২০২৪আলঝেইমারস অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৭০ লাখ আলঝেইমারের রোগী রয়েছে। বর্তমানে প্রচলিত চিকিৎসা শুধু উপসর্গকে ধীর করতে পারে। আর তাই চিকিৎসার নতুন পদ্ধতি আবিষ্কারের জন্য উন্মুখ হয়ে আছেন বিজ্ঞানীরা। যদিও নতুন পদ্ধতি আপাতত ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা করা হয়েছে।
আরও পড়ুনমৃত্যুর ঠিক আগমুহূর্তে মস্তিষ্কে কী ঘটে, জানালেন বিজ্ঞানীরা০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫বিজ্ঞানীরা মূলত মাইক্রোগ্লিয়া তৈরির একটি উপায় খুঁজে পেয়েছেন, যা মস্তিষ্কের অবস্থাকে আরও খারাপ করে না। কৃত্রিম ওষুধ বা ভাইরাল ভেক্টর ব্যবহার করার পরিবর্তে মস্তিষ্কের রোগ প্রতিরোধক কোষকে ব্যবহার করতে চান বিজ্ঞানীরা। নতুন এই প্রক্রিয়া মানুষের ওপর পরীক্ষা করতে প্রায় তিন থেকে পাঁচ বছর সময় লাগতে পারে।
সূত্র: ডেইলি মেইল
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর র করত
এছাড়াও পড়ুন:
সাদপন্থীদের ইজতেমা আয়োজন করতে না দেওয়ার দাবি
টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে মাওলানা সাদ কান্ধলভী অনুসারীদের (সাদপন্থী) ইজতেমা আয়োজন করতে না দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাবলিগ জামাতের শুরায়ে নেজাম (জুবায়েরপন্থী) অনুসারীরা। পাশাপাশি তাঁরা সরকারের প্রস্তাবে রাজি হয়ে আগামী বছরের মার্চ মাসে টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা করার কথাও বলেছেন। গত আয়োজনে ইজতেমা মাঠে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও সাজা নিশ্চিতের দাবিও জানান তাঁরা।
আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। ‘হযরত ওলামায়ে কেরাম ও দাওয়াত ও তাবলিগের সাথীবৃন্দের’ উদ্যোগে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
এর আগে গত রোববার সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনের পর বিশ্ব ইজতেমা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তাবলিগের শুরায়ে নেজামের সাথী মুফতি আমানুল হক বলেন, ‘কোরআন ও হাদিসের কথা যারা বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে, তাদের ইসলামি দাওয়াতের এই ময়দানে জায়গা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। রাসুল (সা.)-এর তরিকা, সুন্নাহ ও হাদিসের অনুসরণে যারা তাবলিগি কার্যক্রম পরিচালনা করে, কেবল তারাই ইজতেমা করার অধিকার রাখে।’
মুফতি আমানুল হক আরও বলেন, ‘সরকারের ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে জারি করা প্রজ্ঞাপনে সাদপন্থীরা শেষবারের মতো টঙ্গী ময়দানে ইজতেমা করার অনুমতি পেয়েছিল। সেই প্রজ্ঞাপনে তাদের স্বাক্ষরও রয়েছে। সরকার তখনই বুঝেছিল—একই মাঠে দুই পক্ষের ইজতেমা আয়োজন দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি।’
২০২৪ সালের ডিসেম্বরের ইজতেমা মাঠে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে মুফতি আমানুল হক বলেন, ‘গত বছরের ১৮ ডিসেম্বরের রাতে সাদপন্থীদের অনুসারীরা অতর্কিত হামলা চালায়। তাদের বাংলাদেশি নেতা ওয়াসিফ সাহেবের চিঠিতে উল্লেখ ছিল, “যুগটা ব্যতিক্রমী, সবাই প্রস্তুতি নিয়ে আসবে”—এই প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই তারা হামলার পরিকল্পনা করেছিল। ঘুমন্ত মুসল্লিদের ওপর টর্চলাইট নিয়ে হামলা চালানো হয়, যা একতরফা সন্ত্রাসী কার্যক্রম ছিল।’ তিনি দাবি করেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈঠকেও প্রমাণিত হয়েছে, ‘এ হামলা একতরফাভাবে সাদপন্থীদের পক্ষ থেকেই হয়েছিল।’
মুফতি কেফায়েত উল্লাহ আজহারী তাঁর লিখিত বক্তব্যে বলেন, কিছু স্বার্থান্বেষী ও ইসলামবিরোধী মহলের প্ররোচনায় তাবলিগ জামাতে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের মাওলানা সাদ সাহেবের অনুসারীরা বেআইনি পথে টঙ্গী ইজতেমা মাঠ ও কাকরাইল মসজিদে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এমনকি তাঁরা সরকারকে বিব্রত করতে ‘যমুনা ভবন ঘেরাও’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর বিশৃঙ্খলাকারীদের কাকরাইল মসজিদে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয় এবং শুরায়ে নেজামপন্থীদের কাকরাইলে দাওয়াত কার্যক্রম চালানোর অনুমতি দেয় বলে জানান মুফতি কেফায়েত উল্লাহ আজহারী। তিনি বলেন, ২০২৫ সালের ৪ ফেব্রুয়ারির ৬৩ নম্বর স্মারকে বলা হয়, সাদপন্থীরা শেষবারের মতো ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে টঙ্গীতে ইজতেমা করতে পারবে, এরপর আর নয়। তারা স্বাক্ষর দিয়ে সেই শর্ত মেনে নিয়েছিল।
শুরায়ে নেজামপন্থীরা বলেন, ‘আমরা সরকারের সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধার সঙ্গে গ্রহণ করছি। আগামী বছরের মার্চে ইজতেমা আয়োজনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করা হবে।’
সংবাদ সম্মেলন থেকে সরকারের কাছে ৪ দফা দাবি পেশ করেন তাবলিগ জামাতের শুরায়ে নেজাম (জুবায়েরপন্থী) অনুসারীরা। তাঁদের দাবিগুলো হলো ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ইজতেমার তারিখ ঘোষণা, টঙ্গী ইজতেমা মাঠকে অস্থায়ীভাবে ‘কেপিআই’ হিসেবে ঘোষণা, বিদেশি মেহমানদের ভিসা সহজীকরণের পরিপত্র নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে প্রকাশ ও গত বছরের ইজতেমা মাঠে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা শাহরিয়ার মাহমুদ, মতিন উদ্দিন আনোয়ার, রুহুল আমিন এবং তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের (শুরায়ে নেজাম) মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান।