দেশে প্রশংসিত ‘জংলির’ উত্তর আমেরিকাতেও দারুণ সূচনা
Published: 29th, April 2025 GMT
দেশের সিনেমাপ্রেমীদের মন জয় করে কানাডা, আমেরিকা ও ইউকে’র ৪০টি থিয়েটারে মুক্তি পেয়েছে সিনেমা ‘জংলি’। ২৫ এপ্রিল থেকে স্বপ্ন স্কেয়ারক্রো-এর পরিবেশনায়, ঈদের সিনেমাগুলোর মধ্যে দেশের বাইরে সবচেয়ে বেশি থিয়েটারে একযোগে মুক্তি পেয়েছে এই সিনেমাটি।
এবার ‘জংলি’ টিমের জন্য এল আরও একটি সুখবর! কানাডা ও আমেরিকার বক্স অফিসে প্রথম ৩ দিনের গ্রস ৩৫,০০০ ডলার আয় করে শুভসূচনা করেছে ঈদের ফ্যামিলি ব্লকবাস্টার সিনেমা 'জংলি'।
পরিবেশক স্বপ্ন স্কেয়ারক্রো-এর প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ অলিউল্লাহ সজীব বক্স অফিস ‘কমস্কোর’ এর বরাত দিয়ে এ তথ্য প্রকাশ করেছেন। তিনি এই প্রতিষ্ঠানের পরিবেশিত ‘প্রিয়তমা’ সিনেমার কথাও বলেছেন তুলনা করতে গিয়ে।
বিষয়টি নিয়ে তিনি ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, “প্রিয়তমা’র কালেকশনের কথা মনে আছেনা সবার? ‘প্রিয়তমা’ উত্তর আমেরিকায় প্রথম ৩ দিনে ৪২টি হল থেকে গ্রস করেছিল ৪৪,০০০ ডলার। ‘জংলি’ সেখানে প্রথম ৩ দিনে ৩৩ হল থেকে করল ৩৫,০০০ ডলার। ‘জংলি’র আয় বলতে গিয়ে ‘প্রিয়তমা’র কথা মনে পড়ল। কারণ, ‘প্রিয়তমা’ সিনেমার যে মায়াটা দর্শককে টানছিল, ‘জংলি’র বেলায়ও দর্শকের সে একই রকম এক টান দেখা যাচ্ছে। এবারের টান জংলি-পাখির মায়ার টান। মানুষ আসলেই মুগ্ধ হচ্ছে। বাংলাদেশের মতো এখানেও একইরকমভাবে সবাই অশ্রুসজল চোখে হল থেকে বের হচ্ছেন।”
এরপর তিনি লিখেছেন, “প্রিয়তমা’ অবশ্য শেষ পর্যন্ত ১৩২,০০০ ডলার এর বিশাল কালেকশন তুলতে পেরেছিল। ‘জংলি’ সে পর্যন্ত যেতে পারবে কিনা সেটা সময় বলে দেবে। তবে উত্তর আমেরিকার বক্স অফিসে বাংলাদেশের সিনেমার প্রেস্টিজিয়াস ১০০,০০০ ডলার ক্লাবে ৬ষ্ঠ সদস্য হিসেবে ঢুকে পড়বে কিনা তা বুঝা যাবে এ সপ্তাহ শেষে। প্রথম সপ্তাহের আয়ই মূলত একটা ধারণা দেবে, কতদূর যাবে ‘জংলি’। শীর্ষস্থান নিয়ে যথারীতি টরন্টো ও নিউ ইয়র্কের মধ্যে কঠিন লড়াই হচ্ছে। প্রথম ৩ দিনের আয়ে আপাতত টরন্টো এগিয়ে আছে। ‘জংলি’ আসলে একটা চমৎকার অভিজ্ঞতা, হলে, বক্স অফিসে। ‘জংলি’র এ দারুণ যাত্রা চলতে থাকুক।”
কানাডা, আমেরিকা ও ইউকে'র ৪০টি থিয়েটারে ২৫ এপ্রিল ২০২৫ থেকে মুক্তি পেয়েছে এই ঈদে পরিবারের সবচে পছন্দের সিনেমা ‘জংলি’। স্বপ্ন স্কেয়ারক্রো-এর পরিবেশনায় ঈদের সিনেমাগুলোর মাঝে দেশের বাইরে সবচে বেশী থিয়েটারে একযোগে মুক্তি পায় এই সিনেমাটি।
প্রথম সপ্তাহে,ক্যানাডার ৫টি,অ্যামেরিকার ২৮টি ও ইউকের ৭টি থিয়েটারে চলছে ‘জংলি’। ইউকে'তে স্বপ্ন স্কেয়ারক্রো-এর সাথে যৌথভাবে পরিবেশনা করছে রিভেরি ফিল্মস।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স য় ম আহম দ ঈদ র স ন ম প রথম ৩ দ ন প র য়তম আম র ক পর ব শ
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’
ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।
হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।
আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’
গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’
আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই।