মহাবিশ্বের সবচেয়ে ঘন বস্তু হচ্ছে নিউট্রন তারা। আর তাই নিউট্রন তারা নিয়ে বেশ আগ্রহ রয়েছে বিজ্ঞানীদের। নিউট্রন তারা এমন মহাকর্ষীয় বস্তু যা বিস্ফোরিত তারার অবশিষ্ট কেন্দ্র বা কোর দিয়ে তৈরি। একটি সাধারণ নিউট্রন তারার ভর সূর্যের ভরের কয়েকগুণ বেশি হতে পারে। যদিও পুরো নিউট্রন তারা খুব কম কিলোমিটারজুড়ে বিস্তৃত একটি সংকুচিত অঞ্চল। নিউট্রন তারার বাইরের স্তরের ঘনত্ব একটি হিরার ঘনত্বের চেয়ে কোটি কোটি গুণ বেশি। নিউট্রন তারার কেন্দ্রের চাপ অনেক। এই চাপে নিউক্লিয়াস এমনকি প্রোটন ও নিউট্রনও আলাদা হয়ে যেতে পারে।
ভারী পারমাণবিক নিউক্লিয়াস দিয়ে তৈরি নিউট্রন তারার পৃষ্ঠের মাধ্যাকর্ষণ শক্তি অনেক বেশি। এর ফলে নিউট্রন তারা একসঙ্গে শত শত নিউট্রন ধরে রাখতে পারে। নিউট্রন তারার মাত্র এক মাইল গভীরে যাওয়ার পরে পদার্থের সবচেয়ে অদ্ভুত রূপ দেখা যায়। এই অঞ্চলে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির সঙ্গে শক্তিশালী নিউক্লিয়ার বল ও বৈদ্যুতিক বিকর্ষণ প্রতিযোগিতা করে। এর ফলে অদ্ভুত পিণ্ডযুক্ত নিউক্লিয়াস তৈরি হয় যার আকৃতিকে বলা হয় ‘গনোচি’।
নিউট্রন তারা আসলে মৃত নক্ষত্রের অতি ঘন একটি আকার। সুপারনোভা বিস্ফোরণের পর মাঝারি আকারের নক্ষত্রের কেন্দ্র সংকুচিত হয়ে নিউট্রন তারা তৈরি হয়। নিউট্রন তারার ব্যাস প্রায় ২০ কিলোমিটার হলেও ভর সূর্যের চেয়ে বেশি হতে পারে। অত্যধিক ঘনত্বের কারণে এক চামচ নিউট্রন তারার পদার্থের ওজন কয়েক বিলিয়ন টন পর্যন্ত হতে পারে। এমন তারা খুব দ্রুত ঘোরে ও শক্তিশালী চৌম্বক ক্ষেত্র ধারণ করে। কিছু নিউট্রন তারা নিয়মিত বেতার তরঙ্গ বিকিরণ করে, যা পালসার নামে পরিচিত।
সূত্র: স্পেস ডটকম
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলায় অপু গ্রেপ্তার
রাজধানীর গুলশানে সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির মামলায় এজাহারনামীয় আসামি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সদ্য বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর ওয়ারী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির ঘটনায় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে ওয়ারী থেকে ডিবির ওয়ারী বিভাগের সদস্যরা গ্রেপ্তার করেছেন। তাকে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।
গত ১৭ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে একটি চক্র রাজধানীর গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে আওয়ামী লীগ নেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন জানে আলম অপু ওরফে কাজী গৌরব অপু এবং আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ। এ সময় শাম্মী আহমেদ দেশের বাইরে থাকায় তার স্বামী সিদ্দিক আবু জাফরকে জিম্মি করে ভয় দেখানো হয়।
চক্রটি বাসায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করে প্রথম ধাপে ১০ লাখ টাকা আদায় করে নেয়। এর মধ্যে ৫ লাখ টাকা ভাগ পান অপু এবং বাকি ৫ লাখ পান রিয়াদ। চাঁদার দ্বিতীয় কিস্তি আনতে ২৬ জুলাই সন্ধ্যায় আবারও গুলশানের ওই বাসায় গেলে চক্রের পাঁচ সদস্যকে আটক করে পুলিশ। তারা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ, ইব্রাহীম হোসেন মুন্না, সাকদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব এবং আমিনুল ইসলাম। তাদের সবাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বিভিন্ন পদে ছিলেন। গ্রেপ্তারের পরপরই তাদেরকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।
এদিকে, চাঁদাবাজির এ ঘটনায় গুলশান থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এজাহারনামীয় ছয় আসামি ও অজ্ঞাত ১০-১২ জন সমন্বয়ক পরিচয়ে ১৭ জুলাই সকালে আমার গুলশান-২ নম্বরের বাসায় আসে। যার মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ ও কাজী গৌরব অপু আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার দাবি করে। তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি দেখায়। একপর্যায়ে আমি বাধ্য হয়ে ১০ লাখ টাকা দিই। পরে ১৯ জুলাই রাতে রিয়াদ ও অপু আমার বাসায় এসে ধাক্কাধাক্কি করে, যা আমি পুলিশকে ফোন করে জানাই। এ সময় অভিযুক্তরা সেখান থেকে সটকে পড়ে।
এজাহারে আরো বলা হয়েছে, ২৬ জুলাই শনিবার বিকেলে রিয়াদের নেতৃত্বে আসামিরা আমার বাসার সামনে এসে আমাকে খুঁজতে থাকে। আমি বাসায় না থাকায় বাসার দারোয়ান আমাকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। এ সময় আসামিরা তাদের দাবিকৃত আরো ৪০ লাখ টাকা না দিলে আমাকে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানো হবে বলে হুমকি দিতে থাকে।
ঢাকা/এমআর/রফিক