শ্রমিক সমা‌জের মু‌ক্তির জন‌্য ইসলামী শ্রমনী‌তি প্রণয়ন ও বাস্তবায়‌নের দা‌বিতে রাজধানীসহ দে‌শের বি‌ভিন্ন স্থা‌নে র‌্যালি, আলোচনা সভা ও সমা‌বেশ ক‌রে‌ছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও এর সহ‌যোগী সংগঠনগু‌লো।

মহান মে দিবস উপল‌ক্ষে বৃহস্প‌তিবার (১ মে) সকাল থে‌কে এসব কর্মসূচি পালন ক‌রা হয়।

গাজীপুরে শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেছেন, ইসলামী শ্রমনীতি ছাড়া যে শ্রমিকের মুক্তি সম্ভব না, তা আজ প্রমাণিত। স্বাধীনতার এতগুলো বছর পরও বিদ্যমান শ্রম নীতিমালাই বাস্তবায়ন করা যায়নি। দেশের অর্থনীতির আকার বড় হয়েছে, জিডিপির আকার বড় হয়েছে, কিন্তু শ্রমিকের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। টাকার অংকে শ্রমিকের বেতন বাড়লেও মূল্যস্ফীতির কারণে প্রকৃত মজুরি বরং আরো কমেছে। এই বাস্তবতায় রাষ্ট্র পরিচালনায় ইসলামকে ভিত্তি বানাতে না পারলে শ্রমিকের ভাগ্য কোনোদিনই পরিবর্তন হবে না।

ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা খলিলুর রহমান নোয়াখালীর সেনবাগে তার নির্বাচনি এলাকায় শ্রমিক-জনতা সমাবেশে বলেছেন, ইসলামী শ্রম আইন বাস্তবায়নে সামগ্রিক আন্দোলন করা ছাড়া শ্রমিকের সামনে আর কোনো পথ নেই। ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন সে পথেই হাঁটবে।

তি‌নি বলেন, আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস কেবল একটি দিন নয়, বরং শ্রমজীবী মানুষের অধিকার, মর্যাদা ও ন্যায্যতার প্রতীক। ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ শুরু থেকেই এ চেতনাকে ধারণ করে শ্রমজীবী জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। এবারের দিবস উপলক্ষে দেশব্যাপী যে উদ্দীপনা ও অংশগ্রহণ আমরা দেখেছি, তা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক ও অনুপ্রেরণাদায়ক।

মে দিবসে ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, জামালপুর, নেত্রকোনা, শেরপুর, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, নড়াইল, বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জয়পুরহাট, রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, মাগুরা, মেঘনাঘাটসহ সাংগঠনিক জেলাগুলো সভা-সমা‌বে‌শ ক‌রে‌ছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাবির ‘ক্ষণিকা’ বাসে হামলা, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও ছাত্রসংগঠনগুলোর নিন্দা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ‘ক্ষণিকা’ বাসে মঙ্গলবার দুপুরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন। একই সঙ্গে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।

মঙ্গলবার দুপুরে উত্তরা আজমপুর এলাকায় টঙ্গী-গাজীপুর রুটে চলাচলকারী ‘ক্ষণিকা’ বাসে হামলা চালায় একদল দুর্বৃত্ত। হামলায় বাসচালকসহ পাঁচ–ছয়জন আহত হন। আহত ব্যক্তিরা বর্তমানে উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ঘটনার পর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হলপাড়া থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি ভিসি চত্বর ঘুরে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে এসে শেষ হয়। সেখানে তাঁরা সমাবেশ করেন।

সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী ইব্রাহিম মাহমুদ হামলাকারীদের দুর্বৃত্ত উল্লেখ করে বলেন, কিছু সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি সারা দেশে বায়বীয় বিদ্বেষ ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আজকের ঘটনায় শিক্ষার্থী সেজে কারা হামলা করেছে, তাদের খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিব আল ইসলাম বলেন, ‘কিশোর গ্যাংয়ের সন্ত্রাসীরা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে আঘাত করার চেষ্টা করেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আজ ক্ষণিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়েছে। অভ্যুত্থানের ৮ মাস পার হলেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনো বাংলাদেশের মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। আমরা দ্রুত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ সারা বাংলাদেশের মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানাই।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন ব্যবস্থাপক কামরুল হাসান মঙ্গলবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, সড়কে একদল স্কুলশিক্ষার্থীর মধ্যে ঝামেলা হলে তারা হঠাৎ গাড়ি ভাঙচুর শুরু করে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসটিও ভাঙচুর করা হয়। এতে সাতজন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

এদিকে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ। হামলার সঙ্গে জড়িত সব অপরাধীকে দ্রুত শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে তারা।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘একটি কুচক্রী মহল জুলাই গণ–অভ্যুত্থানপরবর্তী বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের অভূতপূর্ব ঐক্যে ফাটল সৃষ্টির পরিকল্পনার অংশ হিসেবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী রেজিমেও শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনৈক্যের বীজ বপণের এমন চেষ্টা আমরা দেখেছি। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, নতুন বাংলাদেশে এমন যেকোনো কূটচাল ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে।’

হামলার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। বিবৃতিতে বলা হয়, এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা শুধু শিক্ষার পরিবেশকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে না, বরং সার্বিকভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিরও ইঙ্গিত করে। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্বহীনতা ও নিষ্ক্রিয়তা অত্যন্ত হতাশাজনক। এসব ঘটনা প্রতিরোধে অন্তর্বর্তী সরকারকে আরও বেশি কার্যকর পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানায় দলটি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঢাবির ‘ক্ষণিকা’ বাসে হামলা, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও ছাত্রসংগঠনগুলোর নিন্দা