বিজিবি–বিএসএফ পতাকা বৈঠকের পর দুই দেশের নাগরিকদের হস্তান্তর
Published: 2nd, May 2025 GMT
দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ধর্মজৈন সীমান্তে দুই বাংলাদেশি নাগরিককে ধরে নিয়ে যাওয়া ও দুই ভারতীয় নাগরিক আটকের ঘটনায় দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ের পতাকা বৈঠক শেষে উভয় দেশের নাগরিকদের যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হস্তান্তর করা হয়েছে।
দিনাজপুর বিজিবি সেক্টর কমান্ডার গাজী মিজানুল হক আজ রাত সোয়া ৯টার দিকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে শুক্রবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের ধর্মজৈন বিওপি ক্যাম্পের মল্লিকপুর কারুলিয়াপাড়ার ৩২০/১০ এস পিলার-সংলগ্ন এলাকায় ধান কাটা ও মাড়াইয়ের সময় দুই বাংলাদেশি কৃষককে ধরে নিয়ে যায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। এ ঘটনার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক দুই ভারতীয় কৃষককে ধরে এনে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্যের মাধ্যমে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের কাছে সোপর্দ করেন বাংলাদেশিরা।
বিএসএফের ধরে নিয়ে যাওয়া বাংলাদেশিরা হলেন ধর্মজৈন এলাকার বাসিন্দা ইসরাইলের ছেলে এনামুল হক (৪৫) ও বনগাঁও এলাকার এনামুলের ছেলে মো.
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ সকাল থেকে বাংলাদেশি নাগরিক মাসুদ রানা, এনামুল হকসহ কয়েকজন ৩২০/১০ এস পিলারের কাছে বাংলাদেশ সীমান্তের অভ্যন্তরে নিজ জমিতে ধান কাটছিলেন। ধান কাটা শেষে একই পিলার–সংলগ্ন ভারতীয় নাগরিকের জমিতে ধানমাড়াই কার্যক্রম শুরু করেন। তখন বিএসএফ সদস্যরা দুজনকে ধরে নিয়ে যান। বিষয়টি জানতে পেরে কারুলিয়াপাড়া গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা ভারতীয় দুই কৃষককে ধরে নিয়ে কারুলিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আটকে রাখেন। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুর রহমানের মাধ্যমে বিজিবি সদস্যদের হাতে তুলে দেন।
আরও পড়ুনদিনাজপুর সীমান্তে দুই বাংলাদেশি কৃষককে ধরে নিয়ে গেল বিএসএফ, দুই ভারতীয় আটক৭ ঘণ্টা আগেউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে এক বাংলাদেশি নাগরিক। মুফতি আবদুল্লাহ আল মাসুদ নামে ওই বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয় পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার গয়েশপুর পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা থেকে। এরপর তাকে ফাঁড়িতে নিয়ে এসে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলে। বৃহস্পতিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে।
ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ভারত থেকে নিজের দেশে ফিরে যাননি মাসুদ। তিনি অবৈধভাবে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কাটাগঞ্জ এলাকায় বসবাস করতেন। সম্প্রতি তার বেশ কিছু কর্মকান্ডে সন্দেহ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পরই মাসুদকে ইসলামী উগ্রপন্থী বলে দাবি করে পুলিশে অভিযোগ করা হয়। যেহেতু তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাই পুলিশ তাকে একজন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতীয় আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
বিষয়টি সামনে আসার পরই যথেষ্ট উত্তেজনা ছড়িয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের পক্ষে কিছুই জানানো হয়নি।
অন্যদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় ভারত বাংলাদেশের দিনাজপুর সীমান্ত ও ভোমরা ঘোজাডাঙা সীমান্তে এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন আরো ১১ জন বাংলাদেশি নাগরিক।
পুলিশ ও বিএসএফের যৌথ অভিযানে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এক বাংলাদেশি নাগরিককে। আটককৃতে ওই ব্যক্তির নাম পঞ্চানন পাল। তিনি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গা থানার বাসিন্দা। ভারতে তিনি পরিচয় বদল করে রূপায়ণ পাল নামে বসবাস করছিলেন বলে অভিযোগ। তার কাছ থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছাড়াও ভারতের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড ও এমনকি ভারতীয় পাসপোর্ট পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে।
একইদিনে ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময়ে ঘোজাডাঙ্গা ভোমরা সীমান্তের কাছে সরুপনগর এলাকার তারালি সীমান্ত থেকে বিএসএফের ১৪৩নম্বর ব্যাটালিয়নের হাতে আটক হয়েছেন আরো বাংলাদেশি নাগরিক।
সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে আটকের পর তাদের স্বরূপনগর থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে তিন শিশু, তিনজন পুরুষ ও চারজন নারী। এর সবাই বাংলাদেশের সাতক্ষীরা এবং খুলনার বাগেরহাটের বাসিন্দা।
সুচরিতা/শাহেদ