বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে গত বছরের চেয়ে ১৬ ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারত, পাকিস্তান ও ভুটানকে পেছনে ফেলেছে। এবারও বাংলাদেশে স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিস্থিতি ‘বেশ গুরুতর’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আজ বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার ২০২৫ সালের এ সূচক প্রকাশ করা হয়।
রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্সের (আরএসএফ) এ সূচকে গত ১৬ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। সর্বশেষ ২০০৯ সালে ১৫ ধাপ এগোনোর পর ২০২৪ সাল পর্যন্ত ৪৪ ধাপ অবনমন ঘটেছিল।
আরএসএফের তথ্য অনুসারে, সূচকে মোট ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৯তম, স্কোর ৩৩ দশমিক ৭১। ২০২৪ সালের সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৬৫তম। স্কোর ছিল ২৭ দশমিক ৬৪। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারত (১৫১), ভুটান (১৫২) ও পাকিস্তানকে (১৫৮) ছাড়িয়ে গেলেও এখনও নেপাল (৯০তম), মালদ্বীপ (১০৪তম) ও শ্রীলঙ্কার (১৩৯) পেছনে স্থান পেয়েছে বাংলাদেশ।
২৩ বছর ধরে বিশ্বজুড়ে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে বার্ষিক সূচক প্রকাশ করে আসা প্রতিষ্ঠানটির মতে, এবার সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সর্বনিম্ন অবস্থানে পৌঁছেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সূচকের ইতিহাসে প্রথমবার বিশ্বের অর্ধেক দেশের জন্য সাংবাদিকতার অনুকূল পরিবেশ ‘খারাপ’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এক-চতুর্থাংশেরও কম দেশে পরিস্থিতি ‘সন্তোষজনক’।
সূচকে ২০২৪ সালে ১১ ধাপ পেছানোর পর এ বছর আরও দুই ধাপ পিছিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ৫৭তম স্থানে অবস্থান করছে। এই সূচকে দেশটির অবস্থান এখন পশ্চিম আফ্রিকার যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ সিয়েরা লিওনেরও নিচে। আরএসএফের মতে, দ্বিতীয় দফায় প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় ‘উদ্বেগজনক অবনতি’ ঘটিয়েছেন, যা দেশটিতে ‘স্বৈরাচারী মোড়ের’ ইঙ্গিত দেয়।
টানা নবমবারের মতো সূচকের শীর্ষে আছে নরওয়ে। এবার দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান দখল করেছে এস্তোনিয়া ও নেদারল্যান্ডস। এ ছাড়া সূচকের তলানিতে স্থান পেয়েছে পূর্ব আফ্রিকার দেশ ইরিত্রিয়া।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অবস থ ন
এছাড়াও পড়ুন:
টেস্ট হয়ে যাচ্ছে চার দিনের!
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পরিসর বাড়াতে এবং ছোট দলগুলোর অংশগ্রহণ সহজ করতে টেস্ট ক্রিকেটে বড় একটি পরিবর্তনের পথে হাঁটছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। নতুন পরিকল্পনায়, কিছু দল আগামী চক্র থেকে চার দিনের টেস্ট খেলবে। ঐতিহ্যবাহী শক্তিশালী দলগুলোকে রাখা হবে পাঁচ দিনের নিয়মে। লক্ষ্য- অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ভারসাম্যপূর্ণ টেস্ট ক্রিকেট গড়ে তোলা।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের (ডব্লিউটিসি) চলমান লর্ডস ফাইনালের সময় আইসিসির অভ্যন্তরীণ বৈঠকে এ প্রসঙ্গে আলোচনা হয়। আইসিসি চেয়ারম্যান জয় শাহ চার দিনের ম্যাচের প্রতি সমর্থন জানান, যা চারদিক থেকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পায়।
মূল উদ্দেশ্য হলো, আফগানিস্তান, আয়ারল্যান্ড, জিম্বাবুয়ের মতো দলগুলোকে আরও বেশি টেস্ট ম্যাচে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়া। কারণ, আর্থিক ও সময়সীমার বাধায় এসব দেশ নিয়মিত পাঁচ দিনের টেস্ট আয়োজন করতে পারে না। চার দিনের টেস্ট হলে খরচ যেমন কমবে, তেমনি টেস্ট সিরিজের সময়সীমাও সংকুচিত হবে। যা ছোট দলগুলোর জন্য আদর্শ।
আরো পড়ুন:
প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হয়ে কতো টাকা পেলো দ. আফ্রিকা?
চোকার্স দক্ষিণ আফ্রিকা এবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন
তবে, ঐতিহ্যবাহী সিরিজগুলোতে কোনও পরিবর্তন আসছে না। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও ভারত তাদের গুরুত্বপূর্ণ সিরিজগুলো যেমন অ্যাশেজ, বর্ডার-গাভাসকার ট্রফি কিংবা নতুন সংযোজিত অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফি আগের মতোই পাঁচ দিনেই খেলে যাবে।
চার দিনের টেস্ট অবশ্য নতুন কিছু নয়। ২০১৭ সালে এটি প্রথমবার চালু হয় এবং ইংল্যান্ড এরই মধ্যে জিম্বাবুয়ে ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে এ ধরনের টেস্ট খেলে ফেলেছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিদিন ৯৮ ওভার খেলা হবে, যা পাঁচ দিনের ম্যাচের চেয়ে বেশি। তাতে ম্যাচের ফল বের করে নেওয়া সম্ভব হবে কম সময়েই।
এই প্রস্তাবের পেছনে যুক্তি হিসেবে উঠে এসেছে দক্ষিণ আফ্রিকার উদাহরণও। টেস্ট চ্যাম্পিয়ন হয়েও তারা টেস্ট খেলার জন্য দীর্ঘ বিরতিতে পড়ে। নতুন এই কাঠামো কার্যকর হলে এমন পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
আইসিসির ধারণা, চার দিনের টেস্ট চালু হলে শুধু সময় বা অর্থই নয়, বদলাবে টেস্ট ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ গড়ার ধরনও। এটি হবে এক নতুন যুগের সূচনা, যেখানে আরও বেশি দেশ টেস্ট খেলার সুযোগ পাবে এবং ক্রিকেট আরও বিস্তৃত, বৈচিত্র্যময় ও দীর্ঘস্থায়ী হয়ে উঠবে।
ঢাকা/আমিনুল