রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলায় এক যুবককে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে আটক করেছে পুলিশ।

আজ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাশেদুল ইসলাম (৩৩) নামের ওই যুবকের মৃত্যু হয়। এর আগে সকালে পাংশার পাট্টা ইউনিয়নের নিভা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে তাঁকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর জখম করে প্রতিপক্ষের লোকজন।

রাশেদুল ইসলাম পাংশা উপজেলার পাট্টা গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর ছয় মাস বয়সী একটি ছেলে ও পাঁচ বছরের একটি মেয়ে আছে। তিনি স্থানীয় যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

রাশেদুলের ভগ্নিপতি ফজলুর রহমান বলেন, ‘দুই বছর আগে পাট্টার নিভা গ্রামের ইসলামের কাছ থেকে রাশেদুল সাত হাজার টাকা ধার নেন। দেড় বছর আগে সব টাকা সুদসহ ফেরত দেন। এরপরও আরও টাকা দাবি করে ইসলাম পাট্টা বাজারে অবস্থিত রাশেদুলের চায়ের দোকান ও বাড়িঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। ভয়ে রাশেদুলসহ পরিবারের লোকজন মাগুরার শ্রীপুর থানার চণ্ডীবর গ্রামে আমার বাড়িতে আশ্রয় নেন। সাত মাস আগে পরিবারসহ সবাই বাড়ি ফিরে আসলে হত্যার হুমকি দেয়।’

স্থানীয় কয়েকজন জানান, প্রায় এক মাস বরিশাল অঞ্চলে ধান কাটা শ্রমিকের কাজ করে গত শুক্রবার দিবাগত রাতে বাড়ি ফেরেন রাশেদুল। তাঁরা ১৮ থেকে ২০ জন শ্রমিক একসঙ্গে কাজের মজুরি হিসেবে এক ট্রাক ধান নিয়ে আসেন। ধানগুলো তারা রুপিয়াট গ্রামে তাঁদের সঙ্গী এক কৃষিশ্রমিকের বাড়িতে রাখেন। আজ সকাল ১০টার দিকে ওই ধান ভাগ করতে রুপিয়াট যাচ্ছিলেন। নিভা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে পৌঁছালে ইসলাম, রফিকসহ বেশ কয়েকজন রাশেদুলের পথরোধ করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হওয়ায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ১২টার দিকে তিনি মারা যান।

রাশেদুলের ভগ্নিপতি ফজলুর রহমান বলেন, ‘কুপিয়ে আমার শ্যালকের হাতের ও পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয়। নির্মমভাবে নির্যাতন করে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এখন মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

পাট্টা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি জহিরুল আলম মুরাদ বিশ্বাস জানান, নিহত রাশেদুল ইসলাম যুবদলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন।

পাংশা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন জানান, পূর্ববিরোধকে কেন্দ্র করে রাশেদুলকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় খালিদ হাসান (৩০) নামের একজনকে আটক করা হয়েছে। মামলা হলে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

ছিনতাইকারীকে ধরে পুলিশে দিলেন মাইক্রোবাস চালক

চট্টগ্রামে ছিনতাইকালে একজনকে ধরে পুলিশে দিয়েছেন রিপন নামে এক মাইক্রোবাসের চালক। শনিবার ভোরে আসকারদীঘির পশ্চিম পাড়ে এ ঘটনা ঘটে। ওই চালকের গলায় ছুরি ধরা হলেও তিনি তা ধরে ধস্তাধস্তি শুরু করেন। আঘাতপ্রাপ্ত হয়েও একজনকে ধরে ফেলেন। অন্য দুই ছিনতাইকারী পালিয়ে যায়।

জানা গেছে, জিইসি এলাকায় মাইক্রোবাস রেখে অটোরিকশায় করে বাসায় ফিরছিলেন রিপন। ভোররাত ৪টায় রিমা কমিউনিটি সেন্টারের সামনে আরেকটি অটোরিকশায় করে আসা তিন দুর্বৃত্ত তাঁর গতিরোধ করে। তারা ছুরি দিয়ে রিপনের হাত ও কানে আঘাত করে মোবাইল ফোন ও টাকা ছিনিয়ে নেয়। গলায় ছুরিকাঘাতের সময় তিনি সেটি ধরে ফেলেন।

রিপনের ভাষ্য, ‘গলায় ছুরি ঠেকিয়ে ওরা ভয় দেখাচ্ছিল। তখন ভেবেছিলাম, চুপ থাকলে হয়তো আমাকে খুন করে ফেলবে। তখনই আমি ছুরিটা ধরে ফেলি। এ সময় তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এক পর্যায়ে দুইজন ছিনতাইকারী পালিয়ে যায়। মাটিতে ফেলে রাখা একজনকে ধরে রাখি।’

ওই সড়কে টহলরত পুলিশের একটি দল সেখানে পৌঁছে জানতে পারে। এ সময় ওই ছিনতাইকারীকে একটি অটোরিকশাসহ আটক করা হয়।

কোতোয়ালি থানার এসআই মো. আশরাফুল জানান, এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। চালক রিপনের সাহসিকতায় ছিনতাইকারী ধরা পড়ে। 

এদিকে লোহাগাড়ায় বিশেষ অভিযানে ডাকাতি মামলায় অভিযুক্ত এক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলো বাঁশখালীর গুলুল্যাখালী মাইজপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মো. মনজুর আলম (৫২) ও তার স্ত্রী হাছিনা বেগম (৪০)। মনজুর এখন বান্দরবানের লামা উপজেলার আজিজনগর হিমছড়িপাড়ায় বাস করে।

শুক্রবার রাতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের আধুনগর ইউনিয়নের খাসমহল এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়। দু’জনের কাছে দুটি দেশীয় তৈরি আগ্নেয়াস্ত্র, পাঁচ রাউন্ড গুলি, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন পাওয়া যায় বলে জানান লোহাগাড়া থানার ওসি মো. আরিফুর রহমান। তিনি বলেন, অস্ত্র আইনে মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে শনিবার সকালে আদালতে পাঠানো হয়। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছিনতাইকারীকে ধরে পুলিশে দিলেন মাইক্রোবাস চালক