নোয়াখালীর মাইজদী কোর্ট স্টেশনে দেড় ঘণ্টা রেলপথ অবরোধ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঢাকা-নোয়াখালী রুটে ‘সুবর্ণ এক্সপ্রেস’ ট্রেন চালুসহ বিভিন্ন দাবিতে আজ রোববার সকাল ছয়টা থেকে সাড়ে সাতটা পর্যন্ত তাঁরা অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। অবরোধের কারণে স্টেশনটিতে প্রায় ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট আটকে ছিল নোয়াখালীর সোনাপুর থেকে ঢাকা অভিমুখী উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ‘নোয়াখালীর সর্বস্তরের জনগণ’ ব্যানারে অবরোধ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। কর্মসূচি উপলক্ষে ভোর থেকে সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধি, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ জেলা শহরের মাইজদী কোর্ট রেলস্টেশনে জড়ো হতে থাকেন। সকাল ছয়টার দিকে কয়েক শ মানুষ রেললাইনে অবস্থান নিয়ে অবরোধ শুরু করেন।

এর আগে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় নোয়াখালী প্রেসক্লাবে আয়োজিত একটি সভায় রেলপথ অবরোধের কর্মসূচি ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম। ওই সভায় জেলার সর্বস্তরের জনগণকে রেলপথ অবরোধের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানানো হয়।

সকাল সাড়ে ছয়টায় সরেজমিন দেখা যায়, স্টেশনের দক্ষিণ পাশের লাইনে আটকে আছে উপকূল স্টেশন ট্রেনটি। রেলপথে অবস্থান নিয়েছেন আন্দোলনকারী ব্যক্তিরা। তাঁরা নোয়াখালী-ঢাকা রুটে সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেন দ্রুত চালু, উপকূল ট্রেনে সেবার মান বৃদ্ধি, যাত্রী হয়রানি বন্ধ, হাতিয়ার চেয়ারম্যানঘাট পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণসহ বিভিন্ন দাবিতে স্লোগান দিচ্ছেন। পুলিশ ও রেল কর্মকর্তারা আন্দোলনকারীদের বুঝিয়ে রেলপথ থেকে সরানোর চেষ্টা করছেন। একপর্যায়ে দাবি পূরণে রেল কর্মকর্তাদের আশ্বাসে আন্দোলনকারী ব্যক্তিরা রেলপথ থেকে সরে যান। তবে তাঁরা দাবি পূরণে ১০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দেন। এ সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে পুনরায় রেলপথের পাশাপাশি সড়কপথ অবরোধ করা হবে বলে জানান।

কর্মসূচিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম বলেন, আশির দশকে নোয়াখালী-ঢাকা রুটে উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনটি চালু করা হয়। শুরুর দিকে ট্রেনটির সেবার মান ভালো থাকলেও দিন দিন সেবার মান তলানিতে পৌঁছেছে। আন্তনগর ট্রেন নাম দেওয়া হলেও ঢাকা-নোয়াখালী রুটে চলতে গিয়ে ট্রেনটি প্রায় ২০টি স্টেশনে থামানো হচ্ছে। এতে সকাল ছয়টায় নোয়াখালী থেকে রওনা দিয়ে ঢাকা পৌঁছাতে বেলা দুইটা-তিনটা পর্যন্ত লেগে যায়।

আরিফুল ইসলাম আরও বলেন, যাত্রীদের ভোগান্তির পাশাপাশি সেবা বাড়ানোর কথা বিবেচনা করে ২০২৩ সালে এই রুটে সুবর্ণ এক্সপ্রেস নামে নতুন একটি ট্রেন বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ওই ট্রেন আর নোয়াখালীতে আসেনি। এই ট্রেন অবিলম্বে নোয়াখালী রুটে চালু করতে হবে।

জানতে চাইলে মাইজদী কোর্ট স্টেশনের মাস্টার মো.

কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কারণে ঢাকা অভিমুখী উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেন প্রায় ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট আটকে ছিল। অবরোধ ও জনগণের দাবির বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেছেন।

সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, অবরোধকারী ব্যক্তিরা দেড় ঘণ্টার মতো রেলপথে ছিলেন। এ সময় একটি ট্রেন আটকে পড়ে। তবে অবরোধ প্রত্যাহারের পর ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র লপথ অবর ধ কর মকর ত ল ইসল ম ট র নট উপক ল

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীনতা হবে শর্তসাপেক্ষ, এমন পৃথিবী দেখতে চাই না: বাঁধন

ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পাশাপাশি রাজপথেও সরব ছিলেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। এরপর কয়েক মাস নিজেকে আড়াল করে নিয়েছিলেন। তবে আবারও সামাজিক মাধ্যমে সরব হয়েছেন তিনি।

সম্প্রতি নারীর অবমাননা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন বাঁধন। যেখানে তিনি বলতে চেয়েছেন, স্বাধীনতা হবে শর্তসাপেক্ষ- এমন পৃথিবী কখনো দেখতে চান না তিনি।

বাঁধন লিখেছেন, ‘আমি পুরুষতান্ত্রিক সমাজে বসবাস করি, কিন্তু আমি সেখানে মরতে রাজি নই। আমি এমন পৃথিবী দেখতে চাই না, যেখানে অধিকার নির্ধারিত হবে ক্ষমতার ভিত্তিতে, আর স্বাধীনতা হবে শর্তসাপেক্ষ। আমি এমন ভবিষ্যতে বিশ্বাস করি, যেখানে প্রতিটি মানুষের কথা বলার অধিকার থাকবে, থাকবে নিজের জীবন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা, যা কেড়ে নেওয়ার অধিকার কারো নেই।’

সম্প্রতি বেশ কয়েকটি স্ট্যাটাসেই উঠে এসেছে বাঁধনের প্রতিবাদী কণ্ঠ। হঠাৎ কেন এমন উপলব্ধি তার? অভিনেত্রী জানালেন, ‘এটা হঠাৎ কোনো উপলব্ধি নয়, বরং বহুদিনের ভাবনা। আমি এমন পরিবারেই বড় হয়েছি, যেখানে পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার ছাপ স্পষ্ট। আমার নিজের বাবাও সেই ব্যবস্থার অংশ ছিলেন।’

এর আগেও এক স্ট্যাটাসে বাঁধন লিখেছেন, ‘আমি এখানে কারও নিয়ন্ত্রণে থাকার জন্য আসিনি। আমার জীবন, আমার নিয়ম-আমি কী করব, কীভাবে বাঁচব, আর কী হব, তা একমাত্র আমিই ঠিক করি। আমার পথ আমি নিজেই বেছে নিই, আমার সিদ্ধান্ত আমার নিজের।’

তিনি আরও লেখেন, ‘কারও অনুমতি, প্রশংসা কিংবা স্বীকৃতির প্রয়োজন নেই আমার। আমি শুনি যখন চাই, করি যখন মন চায়, আর যে যা-ই বলুক, নিজের অবস্থানে অটল থাকি। আমাকে নিয়ন্ত্রণ করবে? কখনও না, কোনোদিন না।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ