মেহেরপুরের মুজিবনগর সীমান্তে ভারত থেকে আসা ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। আজ রোববার ভোরে উপজেলার ভবেরপাড়া সীমান্ত এলাকা থেকে তাঁদের আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

আটক ১০ জন জানিয়েছেন, তাঁদের বাড়ি সাতক্ষীরা, যশোর, মাদারীপুর ও নড়াইল জেলায়। তাঁদের কাছে বিদেশ যাওয়ার কোনো কাগজপত্র (ভিসা-পাসপোর্ট) নেই। কাজের সন্ধানে তাঁরা ভারতে গিয়েছিলেন। ভারতে অনুপ্রবেশের অভিযোগে তাঁরা কারাগারে ছিলেন। ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ ট্রাকে করে তাঁদের সীমান্তে নিয়ে আসে এবং বাংলাদেশের ভেতরে ঠেলে দিয়েছে।

বিজিবি সূত্রে জানা যায়, ভারতের নদীয়া জেলার হৃদয়পুর সীমান্ত দিয়ে মুজিবনগরের ভবেরপাড়া এলাকায় আজ ভোরে ওই ১০ জনকে ঠেলে দেওয়া হয়। সীমান্ত পার হওয়ার পর তাঁদের আটক করে বিজিবি ক্যাম্পে নেওয়া হয়। পরে দুপুরে তাঁদের মুজিবনগর থানায় হস্তান্তর করা হয়।

আটক ব্যক্তিদের মধ্যে দেবদাস বিশ্বাস নামের একজন প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০২৪ সালে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার বহরামপুর বাজারে একটি বহুতল ভবনের নির্মাণশ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করেছিলাম। ভারতে বাংলাদেশের চেয়েও খারাপ পরিস্থিতি। গত মাসে পরিবার নিয়ে দেশে আসার সময় বিএসএফ আটক করে জেলে পাঠায়। জেল থেকে হৃদয়পুর সীমান্ত এলাকায় ট্রাকে করে এনে তাঁদের জড়ো করে এবং কাঁটাতারের মাঝখানে যে দরজা আছে, সেটা খুলে আমাদের বাংলাদেশের ভেতরে ঠেলে দেয়।’

তরিকুল ইসলাম নামের আরেকজন বলেন, তিনি ২০২০ সালে দালাল চক্রের মাধ্যমে ভারতের উত্তর প্রদেশে কাজের সন্ধানে গিয়েছিলেন। দীর্ঘদিন সেখানে একটি ভবনের ক্লিনার হিসেবে কাজ করছেন। ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার কারণে সেখানকার পুলিশ অবৈধভাবে বসবাস করা বাংলাদেশিদের গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠিয়ে দিচ্ছে।

আজ বেলা সোয়া একটার দিকে মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ‘সীমান্ত থেকে ১০ জনকে আটক করেছে বিজিবি। তাঁদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁদের বাড়ি বাংলাদেশে। এ ঘটনায় মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম জ বনগর

এছাড়াও পড়ুন:

জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক

জঙ্গি সন্দেহে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে এক বাংলাদেশি নাগরিক। মুফতি আবদুল্লাহ আল মাসুদ নামে ওই বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয় পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার গয়েশপুর পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা থেকে। এরপর তাকে ফাঁড়িতে নিয়ে এসে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলে। বৃহস্পতিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে। 

ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ভারত থেকে নিজের দেশে ফিরে যাননি মাসুদ। তিনি অবৈধভাবে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কাটাগঞ্জ এলাকায় বসবাস করতেন। সম্প্রতি তার বেশ কিছু কর্মকান্ডে সন্দেহ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পরই মাসুদকে ইসলামী উগ্রপন্থী বলে দাবি করে পুলিশে অভিযোগ করা হয়। যেহেতু তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাই পুলিশ তাকে একজন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতীয় আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে। 

বিষয়টি সামনে আসার পরই যথেষ্ট উত্তেজনা ছড়িয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের পক্ষে কিছুই জানানো হয়নি। 

অন্যদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় ভারত বাংলাদেশের দিনাজপুর সীমান্ত ও ভোমরা ঘোজাডাঙা সীমান্তে এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন আরো ১১ জন বাংলাদেশি নাগরিক। 

পুলিশ ও বিএসএফের যৌথ অভিযানে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এক বাংলাদেশি নাগরিককে। আটককৃতে ওই ব্যক্তির নাম পঞ্চানন পাল। তিনি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গা থানার বাসিন্দা। ভারতে তিনি পরিচয় বদল করে রূপায়ণ পাল নামে বসবাস করছিলেন বলে অভিযোগ। তার কাছ থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছাড়াও ভারতের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড ও এমনকি ভারতীয় পাসপোর্ট পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে। 

একইদিনে ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময়ে ঘোজাডাঙ্গা ভোমরা সীমান্তের কাছে সরুপনগর এলাকার তারালি সীমান্ত থেকে বিএসএফের ১৪৩নম্বর ব্যাটালিয়নের হাতে আটক হয়েছেন আরো বাংলাদেশি নাগরিক। 

সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে আটকের পর তাদের স্বরূপনগর থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে তিন শিশু, তিনজন পুরুষ ও চারজন নারী। এর সবাই বাংলাদেশের সাতক্ষীরা এবং খুলনার বাগেরহাটের বাসিন্দা।

সুচরিতা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিলেট সীমান্তে বাংলাদেশে ঢুকে খুঁটি উপড়ে ফেলে বিএসএফ, স্থানীয়দের প্রতিবাদ
  • পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনে কর্মকর্তা নিয়োগ, বেতন ৫১,০০০ টাকা
  • জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক