স্বাধীন গণমাধ্যমই প্রশাসনের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে পারে: ইসলামী আন্দোলন
Published: 4th, May 2025 GMT
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমেদ বলেছেন, পতিত স্বৈরাচার গণমাধ্যম থেকে প্রকৃত সাংবাদিকদের উৎখাত করেছিল। ৫ আগস্টের পর সেই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। এর প্রতিফলন দেখা গেছে বৈশ্বিক জরিপেও। কিন্তু সাংবাদিকদের জন্য নিরাপদ, স্বাধীন ও সহনশীল কর্মপরিবেশ তৈরিতে এখনো অনেক কাজ করতে হবে।
মাওলানা ইউনুস আহমেদ বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা একটি রাষ্ট্রের বিকাশের অপরিহার্য উপাদান। তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত না হলে নাগরিকদের মতপ্রকাশের অধিকারও ক্ষুণ্ন হয়। তাই মুক্ত গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠায় ইসলামী আন্দোলন সংগ্রাম অব্যাহত রাখবে।
বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে আজ রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব এ কথাগুলো বলেছেন। ৩ মে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস পালিত হয়েছে। এই দিবস উপলক্ষে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ) বিশ্ব সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচক প্রকাশ করে। এই সূচকে গত বছরের তুলনায় ১৬ ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। গত বছরের তুলনায় এবার সূচকের পাঁচটি বিষয়ের (ইন্ডিকেটর) প্রতিটিতে ভালো করেছে।
ফ্যাসিবাদী শাসনামলে দেশের গণমাধ্যমগুলোকে তাদের হাতিয়ারে পরিণত করা হয়েছিল বলে বিবৃতিতে বলা হয়। সেখানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব বলেন, ফ্যাসিবাদের দোসর একশ্রেণির ব্যবসায়ীর কাছে মিডিয়া হাউসগুলো (গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান) জিম্মি ছিল। অসৎ ও লোভী একদল ব্যক্তি সাংবাদিক পরিচয় ধারণ করে গণমাধ্যমে ফ্যাসিবাদের পক্ষে সমর্থন তৈরি করত, ফ্যাসিবাদের বয়ানকে সমাজে প্রতিষ্ঠা করত, ভিন্নমতের বিরুদ্ধে ‘মিডিয়া ট্রায়াল’ পরিচালনা করত। গণমাধ্যম থেকে প্রকৃত সাংবাদিকদের উৎখাত করেছিল পতিত স্বৈরাচার।
সম্প্রতি মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে অগ্রগতি আশাব্যঞ্জক হলেও সাংবাদিকদের জন্য নিরাপদ, স্বাধীন ও সহনশীল কর্মপরিবেশ তৈরিতে এখনো অনেক কাজ করতে হবে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করেন ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব। তিনি বলেন, বিশেষ করে সাইবার নিরাপত্তা আইন এবং অন্যান্য নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থার কারণে সাংবাদিকেরা যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছেন, তা দ্রুত নিরসন করতে হবে। একটি স্বাধীন গণমাধ্যমই পারে জনগণের কণ্ঠস্বর তুলে ধরতে, প্রশাসনের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে এবং নীতিনির্ধারকদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করতে।
আরও পড়ুনসংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচকে গত বছরের তুলনায় ১৬ ধাপ এগোল বাংলাদেশ০২ মে ২০২৫মাওলানা ইউনুস বলেন, স্বাধীন গণমাধ্যম যেমন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যয়, তেমনি ব্যক্তির স্বাধীনতাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা অন্যের অধিকার হরণ করে নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠাকে স্বাধীনতা বলা যায় না। তাই মুক্ত গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সংগ্রাম চালিয়ে যাবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র স ব ধ নত ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
উপকূলে নিরাপদ পানির জন্য ‘রেইন ফর লাইফ’
উপকূলীয় এলাকায় নিরাপদ পানির প্রাপ্যতা ও জলবায়ু সহনশীলতা বাড়াতে ‘রেইন ফর লাইফ’ প্রকল্প হাতে নিয়েছে ব্র্যাক।
প্রকল্পটি আগামী তিন বছর সাতক্ষীরার আশাশুনি, বাগেরহাটের মংলা এবং বরগুনার পাথরঘাটা উপকূলীয় উপজেলায় ৯০ হাজারেরও বেশি মানুষের জন্য নিরপাদ পানির জন্য কাজ করবে বলে ব্র্যাক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে।
ঢাকায় ব্র্যাক সেন্টারে প্রকল্পের যাত্রা শুরু উপলক্ষে গত মঙ্গলবার একটি কর্মশালা হয়েছে।
ডেনমার্কের সহায়তায় পরিচালিত এ প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২০২৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রকল্পের আওতায় পরিবার ও কমিউনিটি পর্যায়ে বৃষ্টির পানি সংগ্রহ, জলাশয়ের পানি পরিশোধন এবং জলবায়ু সহনশীল কৃষিকে উৎসাহিত করতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে।
এছাড়া কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্র্যাকের ‘অ্যাডাপটেশন ক্লিনিক’ মডেলের মাধ্যমে বিশেষ করে নারীদের নেতৃত্বে প্রান্তিক কৃষকদের জলবায়ু সহনশীল প্রযুক্তি ও পরামর্শ দেওয়া হবে এবং তাদের জন্য অর্থায়নের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে।
কর্মশালায় ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিকস মোলার বলেন, “প্রকল্পটি সকলকে অন্তর্ভুক্ত করে প্রকৃতি নির্ভর সামগ্রিক পরিবর্তনের লক্ষ্য নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। এটি কেবল মানুষের জন্যই নয়, ফসল, গবাদিপশু এবং সামগ্রিক পরিবেশের জন্য নিরাপদ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে কাজ করছে।”
ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ্ কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, “রেইন ফর লাইফ প্রকল্পটি নিরাপদ পানি এবং খাদ্য নিরাপত্তা- এই দুটি বিষয়কে একসঙ্গে মোকাবিলা করছে, কারণ জলবায়ু সংকটের প্রেক্ষাপটে এই দুইয়ের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে।”
“যদিও নিরাপদ পানির প্রাপ্যতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তবে এটি সমস্যা সমাধানের একটি অংশমাত্র। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় প্রয়োজন সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গি।আমাদের সমাধানগুলো হতে হবে ব্যয় সাশ্রয়ী, টেকসই, স্থানীয় জনগোষ্ঠী পরিচালিত এবং বাস্তবসম্মত।এসব কর্মকাণ্ডে প্রকল্প-নির্ভর মানসিকতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে।”
সরকারের পরিকল্পনা বিভাগের সচিব ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন, জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফারহিনা আহমেদও কর্মশালায় বক্তব্য দেন।
ঢাকা/এস/এসবি