ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমেদ বলেছেন, পতিত স্বৈরাচার গণমাধ্যম থেকে প্রকৃত সাংবাদিকদের উৎখাত করেছিল। ৫ আগস্টের পর সেই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। এর প্রতিফলন দেখা গেছে বৈশ্বিক জরিপেও। কিন্তু সাংবাদিকদের জন্য নিরাপদ, স্বাধীন ও সহনশীল কর্মপরিবেশ তৈরিতে এখনো অনেক কাজ করতে হবে।

মাওলানা ইউনুস আহমেদ বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা একটি রাষ্ট্রের বিকাশের অপরিহার্য উপাদান। তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত না হলে নাগরিকদের মতপ্রকাশের অধিকারও ক্ষুণ্ন হয়। তাই মুক্ত গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠায় ইসলামী আন্দোলন সংগ্রাম অব্যাহত রাখবে।

বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে আজ রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব এ কথাগুলো বলেছেন। ৩ মে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস পালিত হয়েছে। এই দিবস উপলক্ষে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ) বিশ্ব সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচক প্রকাশ করে। এই সূচকে গত বছরের তুলনায় ১৬ ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। গত বছরের তুলনায় এবার সূচকের পাঁচটি বিষয়ের (ইন্ডিকেটর) প্রতিটিতে ভালো করেছে।

ফ্যাসিবাদী শাসনামলে দেশের গণমাধ্যমগুলোকে তাদের হাতিয়ারে পরিণত করা হয়েছিল বলে বিবৃতিতে বলা হয়। সেখানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব বলেন, ফ্যাসিবাদের দোসর একশ্রেণির ব্যবসায়ীর কাছে মিডিয়া হাউসগুলো (গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান) জিম্মি ছিল। অসৎ ও লোভী একদল ব্যক্তি সাংবাদিক পরিচয় ধারণ করে গণমাধ্যমে ফ্যাসিবাদের পক্ষে সমর্থন তৈরি করত, ফ্যাসিবাদের বয়ানকে সমাজে প্রতিষ্ঠা করত, ভিন্নমতের বিরুদ্ধে ‘মিডিয়া ট্রায়াল’ পরিচালনা করত। গণমাধ্যম থেকে প্রকৃত সাংবাদিকদের উৎখাত করেছিল পতিত স্বৈরাচার।

সম্প্রতি মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে অগ্রগতি আশাব্যঞ্জক হলেও সাংবাদিকদের জন্য নিরাপদ, স্বাধীন ও সহনশীল কর্মপরিবেশ তৈরিতে এখনো অনেক কাজ করতে হবে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করেন ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব। তিনি বলেন, বিশেষ করে সাইবার নিরাপত্তা আইন এবং অন্যান্য নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থার কারণে সাংবাদিকেরা যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছেন, তা দ্রুত নিরসন করতে হবে। একটি স্বাধীন গণমাধ্যমই পারে জনগণের কণ্ঠস্বর তুলে ধরতে, প্রশাসনের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে এবং নীতিনির্ধারকদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করতে।

আরও পড়ুনসংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচকে গত বছরের তুলনায় ১৬ ধাপ এগোল বাংলাদেশ০২ মে ২০২৫

মাওলানা ইউনুস বলেন, স্বাধীন গণমাধ্যম যেমন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যয়, তেমনি ব্যক্তির স্বাধীনতাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা অন্যের অধিকার হরণ করে নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠাকে স্বাধীনতা বলা যায় না। তাই মুক্ত গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সংগ্রাম চালিয়ে যাবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র স ব ধ নত ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

নতুন তিন জাতের ধান আনলো ব্রি, উপকূল চাষের উপযোগী

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) উদ্ভাবিত লবণাক্ততা সহনশীল, উচ্চ ফলনশীল বোরো ও ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী- এমন তিনটি নতুন ধানের জাত অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় বীজ বোর্ড (এনএসবি)। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ানের সভাপতিত্বে এনএসবির ১৪৪তম সভায় এসব জাতের অনুমোদন দেওয়া হয় বলে বুধবার ব্রির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। ব্রি জানায়, নতুন উদ্ভাবিত তিন জাতসহ সংস্থাটি এখন পর্যন্ত মোট ১২১টি ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে, যার মধ্যে ৮টি হাইব্রিড জাত।

নতুন জাতগুলোর মধ্যে ব্রি ধান-১১২ একটি মাঝারি মেয়াদী রোপা আমনের জাত, যা লবণাক্ত জমির জন্য উপযোগী। চারা অবস্থায় এটি ১২ ডিএস/মি. পর্যন্ত লবণাক্ততা সহ্য করতে পারে। এ জাতের জীবনকাল ১২০-১২৫ দিন এবং গড় উচ্চতা ১০৩-১০৫ সেন্টিমিটার। প্রতি হেক্টরে ফলন ৪.১৪ থেকে ৬.১২ টন, যা এর মাতৃজাত ব্রি ধান-৭৩ এর তুলনায় ১-১.৫ টন বেশি। প্রতি শীষে গড়ে ২১০টি পূর্ণ দানা থাকে, যা ব্রি ধান-৭৩ এর তুলনায় ৮০-৯০টি বেশি। চাল মাঝারি চিকন, সাদা এবং রান্নার পর ভাত ঝরঝরে হয়। ফসল কাটার পর উপকূলীয় এলাকায় সূর্যমুখী ও লবণ সহনশীল সরিষা চাষের সুযোগ তৈরি হয় বলে জানান গবেষকেরা।

ব্রি ধান-১১৩ জাতটি বোরো মৌসুমের জন্য উদ্ভাবিত এবং জনপ্রিয় জাত ব্রি ধান-২৯ এর বিকল্প হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। জাতটির জীবনকাল গড়ে ১৪৩ দিন, গাছের উচ্চতা ১০২-১০৫ সেন্টিমিটার। চাল মাঝারি চিকন ও সাদা, অনেকটা নাইজারশাইল ধানের মতো দেখতে। ১০০০টি দানার গড় ওজন ১৯.৪ গ্রাম। এতে প্রোটিনের পরিমাণ ৮.৪ শতাংশ। প্রস্তাবিত ফলন পরীক্ষায় এ জাতটি ব্রি ধান-৮৮ এর তুলনায় ১১.৫ শতাংশ বেশি ফলন দিয়েছে। গড় ফলন প্রতি হেক্টরে ৮.১৫ টন হলেও উন্নত ব্যবস্থাপনায় তা ১০.১ টন পর্যন্ত হতে পারে।

তৃতীয় জাতটি ব্রি ধান-১১৪, যা ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী এবং দীর্ঘ জীবনকালীন বোরো জাত। গড় জীবনকাল ১৪৯ দিন। গড় ফলন প্রতি হেক্টরে ৭.৭৬ টন হলেও উপযুক্ত পরিচর্যায় তা ১০.২৩ টন পর্যন্ত যেতে পারে। চাল মাঝারি মোটা ও সোনালি বর্ণের। ১০০০টি ধানের ওজন ১৭.৪ গ্রাম এবং রান্নার পর ভাত ঝরঝরে হয়। ব্রি জানায়, ব্লাস্ট রোগের কারণে যেসব এলাকায় ধানের ফলন কমছে, সেসব এলাকায় এই জাতটি চাষ করে কৃষকরা উপকৃত হবেন।

ব্রি'র মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান বলেন, আমাদের লক্ষ্য পরিবেশ ও চাষোপযোগী অঞ্চলভেদে জাত উদ্ভাবন। যাতে কৃষকের আয় বাড়ে এবং খাদ্য নিরাপত্তা আরও শক্ত হয়। নতুন এ জাতগুলোর মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন, লবণাক্ততা ও রোগবালাই মোকাবিলায় কৃষকের সক্ষমতা আরও বাড়বে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এলো নতুন ৩ জাতের ধান
  • নতুন তিন জাতের ধান আনলো ব্রি
  • নতুন তিন জাতের ধান আনলো ব্রি, উপকূল চাষের উপযোগী