রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের খসড়া ভোটার তালিকা তিন দিনের মধ্যে প্রকাশসহ চার দফা দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু ভবনের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরা হয়। এ সময় রাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ অনুযায়ী কাজ না হওয়ায় প্রশাসনের সমালোচনাও করেন তাঁরা।

শিক্ষার্থীদের বাকি তিনটি দাবি হলো সাত দিনের মধ্যে সব স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে আলোচনা করে তফসিল ঘোষণা; নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা ও রাকসুর নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা এবং ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বহিরাগত মোটরসাইকেল ও ব্যক্তি প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এসব দাবি বাস্তবায়িত না হলে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন তাঁরা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ‘সোচ্চার স্টুডেন্ট নেটওয়ার্ক’ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এস এম সালমান সাব্বির। তিনি বলেন, ‘৩৬ বছর ধরে রাকসু নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছেন শিক্ষার্থীরা। চব্বিশের আন্দোলনের পরও শিক্ষার্থীরা তাঁদের এই রাজনৈতিক অধিকার ফিরে পাননি। জুলাই অভ্যুত্থানের সময় ঘোষিত ৯ দফা দাবির অন্যতম ছিল ছাত্র সংসদ নির্বাচন এবং লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির অবসান। অথচ রাকসু নির্বাচন নিয়ে প্রশাসনের ভূমিকা আমাদের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ।’

রাকসুর ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী কাজ হচ্ছে না উল্লেখ করে সালমান সাব্বির বলেন, ‘২৮ এপ্রিল খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করার কথা ছিল। তবে আজ এখন পর্যন্ত খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আটকানো হয়েছে বলেই আমরা মনে করছি। আমাদের স্পষ্ট দাবি, ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত যাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব ছিল, শুধু তাঁরাই এই রাকসু নির্বাচনের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন। এটি করা না হলে তা হবে নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টা ও আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এদিকে রাকসু নির্বাচন কমিশন গঠন করা হলেও আজ পর্যন্ত সেই কমিটি সভা করতে পারেনি। এ ছাড়া গত কয়েক দিনে রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর মুখোমুখি অবস্থান ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘ্নিত করছে এবং নিরাপত্তার শঙ্কা তৈরি করছে।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজীব, সালাহউদ্দিন আম্মার, ফজলে রাব্বি, ফাহিম রেজা, আকিল বিন তালেব, তাসীন খান, মাহায়ের ইসলাম, ফৌজিয়া নওরীন, আতাউল্লাহসহ বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

৫ দফা দাবিতে জামায়াতের বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু

আগামী ফেব্রুয়ারিতে জুলাই সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ ৫ দফা দাবিতে জামায়াতে ইসলামীর পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ ফটকে এই সমাবেশ শুরু হয়।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করছেন জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল। দলের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর কমিটির নেতারা সমাবেশে বক্তব্য দেবেন। জামায়াতের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

জামায়াত সূত্র জানিয়েছে, সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হবে। মিছিলটি বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ ফটক থেকে বের হয়ে পুরানা পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেসক্লাব ও মৎস্য ভবনের পাশ দিয়ে শাহবাগ পর্যন্ত যেতে পারে।

এর আগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংলগ্ন আল ফালাহ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ৫ দফা দাবিতে তিনদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে দলটি।

জামায়াতের দাবিগুলো হলো- জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজন করা; আগামী জাতীয় নির্বাচনে সংসদের উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু করা; অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা; ফ্যাসিস্ট সরকারের সব জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।

একই দাবিতে আগামীকাল ১৯ সেপ্টেম্বর দেশের সব বিভাগীয় শহরে বিক্ষোভ মিছিল এবং ২৬ সেপ্টেম্বর দেশের সব জেলা বা উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল করবে জামায়াতে ইসলামী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ