যুক্তরাজ্যের বার্ষিক সাহিত্য পুরস্কার ‘উইমেন্স প্রাইজ ফর ফিকশন ২০২৫’ -এর সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। গত ৪ মার্চ নারী কথাসাহিত্যিকদের জন্য দেওয়া এই পুরস্কারটির দীর্ঘ তালিকা প্রকাশ করা হয়। এবার প্রকাশিত হলো এর সংক্ষিপ্ত রূপ। গত ২ এপ্রিল ৩০তম আসরের নির্বাচিত ৬টি উপন্যাসের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ১২ জুন বিজয়ী লেখকের নাম ঘোষণা করা হবে। পুরস্কার হিসেবে চূড়ান্ত বিজয়ী পাবেন ৩০ হাজার পাউন্ড।
সংক্ষিপ্ত এই তালিকায় আছে– আরিয়া আবেরের ‘গুড গার্ল’, মিরান্ডা জুলাইয়ের ‘অল ফোরস’, এলিজাবেথ স্ট্রাউটের টেল মি এভরিথিং, ভ্যান ডের উডেনের ‘ডের উডেন: দ্য সেফকিপ ইয়ায়েল’, নুসাইবাহ ইউনিসের ‘ফান্ডামেন্টালি’ এবং সানাম মাহলুদজির দ্য পারসিয়ানস’। যুক্তরাজ্যের সব নারী সাহিত্যিকের জন্য উন্মুক্ত হলেও ১ এপ্রিল ২০২৪ থেকে ৩১ মার্চ ২০২৫ সালের মধ্যে ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত উপন্যাসের গুরুত্ব অনুযায়ী গ্রন্থগুলো অন্তর্ভুক্ত হয় তালিকায়। ব্যক্তিগত স্বাধীনতা এবং মানবিক সংযোগের প্রয়োজনীয়তা অন্বেষণের পাশাপাশি আকর্ষণীয় বৈচিত্রময় গল্প স্থান পেয়েছে এতে।
এবার পুরস্কারের বিচারক প্যানেলের প্রধান দায়িত্বে রয়েছেন লেখক কিট ডি ওয়াল। তার সঙ্গে আছেন ঔপন্যাসিক, সাংবাদিক ডায়ানা ইভান্স; লেখক, মানসিক স্বাস্থ্য প্রচারক ব্রায়নি গর্ডন; গ্ল্যামার ইউকে’র প্রধান সম্পাদক ডেবোরা জোসেফ এবং সংগীতশিল্পী এবং সুরকার অ্যামেলিয়া ওয়ার্নার। কিট ডি ওয়াল বলেন, ‘বড় বড় বিষয়গুলোর মোকাবেলায় নারীরা নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তারা অবাক করা বর্ণনাকারী। কুৎসিত বিষয়বস্তু, নতুন এবং সাহসী উপায়ে যৌনতা সম্পর্কে লেখা থেকে তারা বিরত নেই। আমি এই ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে প্যানেলের বাকি সবাই আমার চেয়ে বেশি জানে। বিচারকদের মধ্যে কোনও শ্রেণিবিন্যাস ছিল না। আসলে আমারও কিছুই করার ছিল না। সবাই বুদ্ধিমান, শক্তিশালী, সুপণ্ডিত, মজার, স্পষ্টভাষী, সহানুভূতিশীল নারী।’
উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালে নারী সাহিত্যিকদের কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ পুরস্কারটি দেওয়া হচ্ছে। অনেকের মতে, ১৯৯১ সালের বুকার পুরষ্কার ছিল এই পুরস্কারের অনুপ্রেরণা। তখন ছয়টি সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত বইয়ের মধ্যে কোন নারী লেখক ছিলেন না, যদিও সেই বছর প্রকাশিত প্রায় ৬০ শতাংশ উপন্যাসই ছিল লেখকদের লেখা। তাই অনেক লেখক, প্রকাশক, এজেন্ট, বই বিক্রেতা, গ্রন্থাগারিক, সাংবাদিক বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে একত্রিত হয়েছিলেন। তারা উপস্থাপন করেন যে, গুরুত্বপূর্ণ ও প্রধান সাহিত্যবিষয়ক পুরস্কারগুলো প্রায়শই নারী সাহিত্যিকদে কৃতিত্বের স্বীকৃতির জন্য দেওয়া হয় না। ফলে এর পাঁচ বছরের মধ্যেই শুধু নারী লেখকদের জন্যই পুরস্কারটি চালু করা হয়। এবার চূড়ান্ত ফলের অপেক্ষা। v
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প রস ক র প রক শ র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
এশিয়া কাপ নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটছে
কিছুদিন ধরে সনি স্পোর্টস নেটওয়ার্ক তাদের চ্যানেলগুলোয় এশিয়া কাপের বিজ্ঞাপন প্রচার করে আসছে। বিজ্ঞাপনের কভারে বাংলাদেশের নাজমুল হোসেন, ভারতের সূর্যকুমার যাদব আর শ্রীলঙ্কার চারিত আসালাঙ্কাকে দেখানো হচ্ছে। ভারতীয় চ্যানেল বলেই হয়তো পাকিস্তানের কাউকে রাখা হয়নি।
তবে এর মাধ্যমে ২০২৫ এশিয়া কাপ ক্রিকেট নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে চলা অনিশ্চয়তার জট কাটতে চলেছে বলে অনুমান অনেকের। তাঁদের ধারণা, এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) ‘সবুজ সংকেত’ পেয়েছে বলেই সনি স্পোর্টস নেটওয়ার্ক নিয়মিত এশিয়া কাপের বিজ্ঞাপন দেখাচ্ছে। অনিশ্চয়তা থাকলে তা দেখানোর কথা নয়।
মহাদেশীয় এই প্রতিযোগিতা নিয়ে এবার ক্রিকবাজও সুসংবাদ দিল। ক্রিকেট বিষয়ক ভারতীয় ওয়েবসাইটটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টুর্নামেন্ট ঘিরে আশার আবহ তৈরি হয়েছে। কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলাকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি ভারত–পাকিস্তানের মধ্যে যে সংঘাত ও উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল, ‘যুদ্ধবিরতির’ পর থেকে তা কিছুটা স্বস্তিদায়ক পর্যায়ে আছে।
যদিও এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি; তবে ধারণা করা হচ্ছে, কয়েক দিনের মধ্যেই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে।
ক্রিকবাজ জানিয়েছে, এসিসির আশা, জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে সভা ডেকে ছয় দলের এশিয়া কাপের সূচি চূড়ান্ত করা যাবে। সব ঠিক থাকলে সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হবে। নির্দিষ্ট করে বললে, ১০ সেপ্টেম্বর টি–টোয়েন্টি সংস্করণের এশিয়া কাপ শুরু হতে পারে।
ওয়েবসাইটটি আরও জানিয়েছে, এবারের এশিয়া কাপে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত অংশ নেবে। যদিও প্রাথমিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০২৪ এসিসি প্রিমিয়ার কাপের রানার্সআপ ওমান ও তৃতীয় হওয়া হংকংয়েরও টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়ার কথা। কিন্তু সর্বশেষ খবর, ওমান ও হংকংকে ছাড়াই হয়তো হবে ২০২৫ এশিয়া কাপ।
মূল আয়োজক হিসেবে এখনো ভারতের নাম থাকলেও ২০২৩ এশিয়া কাপ ও ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির মতো এবারের এশিয়া কাপও ‘হাইব্রিড মডেলে’ আয়োজনের আলোচনা চলছে। সে ক্ষেত্রে ভারতের পাশাপাশি সংযুক্ত আরব আমিরাতে টুর্নামেন্ট হতে পারে। গত ডিসেম্বরে বিসিসিআই–পিসিবির মধ্যে একে অপরের দেশে দল না পাঠানোর যে সমঝোতা হয়েছে, তারই ভিত্তিতে এশিয়া কাপে পাকিস্তানের ম্যাচগুলো আমিরাতে সরে যাবে।
এপ্রিলে ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাষ্মীরের পেহেলগামে হামলার জেরে মে মাসে ভারত–পাকিস্তান সংঘাতে জড়ায়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশ ‘যুদ্ধবিরতির’ ঘোষণা দেওয়ার পর সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করে। ক্রিকেটে দুই দলের মুখোমুখি হওয়া না–হওয়া নিয়েও সংশয়ের মেঘ কেটে যায়।
এ বছর মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপে এবং আগামী বছর মেয়েদের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারত–পাকিস্তানকে একই গ্রুপে রেখেছে আইসিসি। কলম্বোয় ওয়ানডে বিশ্বকাপের ম্যাচটি হবে ৫ অক্টোবর আর এজবাস্টনে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচ ২০২৬ সালের ১৪ জুন।
এবার পুরুষদের এশিয়া কাপেও ভারত–পাকিস্তানের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবলই। কারণ, সনি স্পোর্টস নেটওয়ার্ক সম্প্রচার ১৭ কোটি মার্কিন ডলারে (২০৭১ কোটি টাকা) চার আসরের স্বত্ব কেনার সময় এসিসির সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক সমঝোতা হয়েছিল যে প্রতিটি আসরে অন্তত দুটি ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ থাকবে। দল দুটি যদি ফাইনালে ওঠে, তাহলে তিনবার মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনাও থাকবে।
কিন্তু ভারত–পাকিস্তান ম্যাচ না হলে সনি স্পোর্টস নেটওয়ার্ক স্বাভাবিকভাবেই এসিসিকে বিপুল অর্থ দিতে অস্বীকৃতি জানাবে। এতে এসিসি ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
ক্রিকবাজ এর আগে জানিয়েছিল, ২০২৫ এশিয়া কাপ আয়োজন করতে এসিসির প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার (৪৬৩ কোটি টাকা) খরচ হবে। এ খরচের বেশির ভাগ অর্থ আসবে সম্প্রচারস্বত্ব থেকে, যার ৭৫ শতাংশ রাজস্ব সমানভাবে ভাগ করে নেওয়ার কথা এসিসির পাঁচ স্থায়ী সদস্য বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের।