ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ৫ দাবি
Published: 19th, May 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে ভবঘুরে, মাদকাসক্ত, অপ্রকৃতিস্থ মুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নিতে প্রক্টর বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। সোমবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমদ বরাবর তাঁর কার্যালয়ে স্মারকলিপি দেন সংগঠনটির নেতা–কর্মীরা।
স্মারকলিপিতে তাঁরা পাঁচটি দাবি জানান। দাবিগুলো হলো ক্যাম্পাসে অবস্থানরত ভবঘুরে-মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের দ্রুত ক্যাম্পাস থেকে সরিয়ে নেওয়া। ক্যাম্পাস থেকে তুলনামূলক দূরে অবস্থিত নারীদের হল এলাকায় সন্ধ্যা থেকে প্রক্টরিয়াল টিমের অবস্থান আরও জোরদার করা। ক্যাম্পাসে অবস্থানরত মাদকসেবীসহ ভবঘুরে, অপ্রকৃতিস্থ ও উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় আসা, যাতে তারা ক্যাম্পাসে পুনরায় ফিরে না আসে। ক্যাম্পাসে বেড়ে ওঠা উদ্বাস্তু শিশু-কিশোরদের যথাযথ প্রক্রিয়ায় পুনর্বাসনের সহায়তা করা এবং ক্যাম্পাসের সার্বিক নিরাপত্তা কর্মকাণ্ড ত্বরান্বিত করা।
স্মারকলিপি প্রদান শেষে সংক্ষিপ্ত সংবাদ সম্মেলনে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক আবদুল কাদের বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় নানা ধরনের ভবঘুরে, অপ্রকৃতিস্থ, মাদকসেবী ও উদ্বাস্তুদের অবস্থান। তাদের উপস্থিতি ক্যাম্পাসের নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দিচ্ছে।’
সন্ধ্যার পর থেকে ক্যাম্পাসের ভিন্ন ভিন্ন মোড়ে তাদের মাদক সেবনরত অবস্থায় দেখা যায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রায়ই তারা নারী শিক্ষার্থীদের উত্ত্যক্ত করে, বাজে ইঙ্গিত দেয় এবং চলাফেরায় বাধার সম্মুখীন করে।’
সুফিয়া কামাল হলের কাছের ফুটওভারব্রিজটিকে এমন অসংখ্য লোক রাতে নিজেদের ঘাঁটি করে নিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মূল ক্যাম্পাস থেকে তুলনামূলক দূরে নারী শিক্ষার্থীদের তিনটি হলের সামনে এবং যাতায়াতের রাস্তায় এসব ভবঘুরে, মাদকসেবী ও উদ্বাস্তুদের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। এ কারণে এসব হলের নারী শিক্ষার্থীদের অবাধ চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে।’
এ সময় নারী শিক্ষার্থীদের আবাসনের জন্য নির্ধারিত তিনটি হল অর্থাৎ সুফিয়া কামাল হল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল ও বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের সামনে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে এবং জরুরি প্রয়োজনে পাশে পেতে সকাল এবং সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১০টা পর্যন্ত দুজন করে চারজন প্রক্টরিয়াল মোবাইল টিমের সদস্য নিয়োগের দাবি জানান আবদুল কাদের।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ম রকল প অবস থ ন ভবঘ র
এছাড়াও পড়ুন:
ফুটবলার প্রতিমা এগিয়ে যাচ্ছেন, পাশে আছে কিশোর আলোসহ অনেকে
একটি পরিবারের ওপর নেমে আসা অপ্রত্যাশিত চাপ আর হতাশাকে দূর করেছে একটি সংবাদ। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড় প্রতিমা মুন্ডার পড়াশোনা ও খেলাধুলা থমকে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল মাত্র ৪৭ হাজার টাকার জন্য। প্রথম আলোয় প্রতিবেদন প্রকাশের পর মিলেছে সহযোগিতা, পরিশোধ হয়ে গেছে বিকেএসপির বকেয়া।
এতে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন প্রতিমার মা সুনিতা মুন্ডা। তাঁদের ওপর থেকে নেমে গেছে বড় ধরনের আর্থিক চাপ।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেএসপি প্রতিমার অভিভাবককে পাঠানো চিঠিতে জানিয়েছিল, তাঁদের মেয়ের বকেয়া বেতন ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা। সেই চিঠিতেই সতর্ক করে বলা হয়, ছয় মাসের বেশি বেতন বকেয়া থাকলে চূড়ান্ত সতর্কীকরণ, আর ১২ মাসের বেশি বকেয়া থাকলে বহিষ্কারের বিধান আছে। অর্থাভাবে যখন অনিশ্চিত হয়ে উঠেছিল প্রতিমার ভবিষ্যৎ, ঠিক সেই সময় ১১ অক্টোবর প্রথম আলোয় প্রকাশিত হয় তাঁদের পরিবারের সংগ্রামের গল্প।
আরও পড়ুনবকেয়া বেতন চেয়ে বিকেএসপির চিঠি, ফুটবলার প্রতিমার পড়াশোনা বন্ধের পথে ১১ অক্টোবর ২০২৫প্রতিবেদনটি পাঠকের হৃদয়ে নাড়া দেয়। কিশোর আলোর পক্ষ থেকে প্রতিমার বকেয়া পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই দিনই বিকেলে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে গিয়ে প্রথম আলোর সাতক্ষীরার নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি প্রতিমা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে নেওয়া হয় এই উদ্যোগ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ব্যবসায়ী সহায়তা করেন আরও ১০ হাজার টাকা। তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপা রানী সরকার দেন পাঁচ হাজার টাকা ও একটি ফুটবল।
সহায়তা পেয়ে স্বস্তি ফিরেছে পরিবারে। মুঠোফোনে প্রতিমা বলেন, ‘এখন আর কোনো অনিশ্চয়তা নেই। বিকেএসপির পাওনা ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা পরিশোধ করে দিয়েছি। আমি ভালো আছি, মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা আর অনুশীলন করছি।’
সাতক্ষীরার তালা উপজেলার প্রতিমা মুন্ডা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে কিশোর আলোর পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়